নাটোরে আওয়ামী লীগের দুই পক্ষের সংঘর্ষ

সংগৃহীত ছবি

নাটোরে আওয়ামী লীগের দুই পক্ষের সংঘর্ষ

নাটোর প্রতিনিধি

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার উপদেষ্টা কবির বিন আনোয়ারের উপস্থিতিতে নাটোর জেলা আওয়ামী লীগের কার্যালয়ে আওয়ামী লীগের দুই পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। আজ মঙ্গলবার দুপুরে দলের বর্তমান ও সাবেক জেলা সাধারণ সম্পাদক অনুসারীদের মধ্যে এ সংঘর্ষ হয়।

সংঘর্ষের সময় উভয়পক্ষ দেশীয় অস্ত্রসহ বিভিন্ন অস্ত্র প্রদর্শন করে। আলোচনা সভার চেয়ার ভাঙচুরসহ উভয়পক্ষের মধ্যে চেয়ার ছোঁড়াছুড়ির ঘটনাও ঘটে।

এ সময় কবির বিন আনোয়ার নিজে হস্তক্ষেপ করে পরিস্থিতি শান্ত করেন।

সংঘর্ষে বড় ধরনের কোনো হতাহতের ঘটনা ঘটেনি। বর্তমানে এলাকায় উত্তেজনা বিরাজ করছে এবং পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রনে রাখতে এলাকায় পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে।

নাটোর জেলা আওয়ামী লীগের অস্থায়ী কার্যালয়ে একটি আইটি ভবন (স্মার্ট কর্ণার) উদ্বোধনের জন্য মন্ত্রী পরিষদের সাবেক সচিব ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার উপদেষ্টা কবির বিন আনোয়ার মঙ্গলবার নাটোরে আসেন।

স্মার্ট কর্ণার উদ্বোধন শেষে নাটোর জেলা আওয়ামী লীগের কার্যালয় চত্বরে আলোচনা সভা শুরু হয়। জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা অধ্যাপক আব্দুল কুদ্দুস এমপির সভাপতিত্বে সভায় অন্যান্যের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন সাধারণ সম্পাদক শরিফুল ইসলাম রমজান, সাবেক সাধারণ সম্পাদক ও নাটোর সদর আসনের সংসদ সদস্য শফিকুল ইসলাম শিমুলসহ আওয়ামী লীগ যুবলীগ ও ছাত্রলীগ সহ বিভিন্ন সংগঠনের জেলা পর্যায়ের নেতা কর্মীরা।

সভা চলাকালে দুপুর ১টার দিকে জেলা আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক শরিফুল ইসলাম রমজান সমর্থকেরা তাদের নেতাদের নামে বিভিন্ন স্লোগান দেওয়া শুরু করেন। এ সময় সাবেক সাধারণ সম্পাদক সংসদ সদস্য শফিকুল ইসলাম শিমুল সমর্থকেরা পাল্টা স্লোগান দেয়া শুরু করলে প্রথমে উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে। এক পর্যায়ে দুই নেতার অনুসারীদের মধ্যে সংঘর্ষ শুরু হয়। সভায় পুলিশ মোতায়েন থাকলেও পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রনে আনতে সেখানে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করেন পুলিশ সুপার সাইফুর রহমান।

নাটোর জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক শরিফুল ইসলাম রমজান বলেছেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার উপদেষ্টা কবির বিন আনোয়ারের বক্তব্যের সময় বিএনপি জামায়াত থেকে আগত এমপি শিমুলের অনুসারীরা হঠাৎ অনুষ্ঠানে বসে থাকা আওয়ামী লীগ ও অঙ্গ সংগঠনের নেতাকর্মীদের উপরে চড়াও হন। এ সময় কবির বিন আনোয়ার নিজে হস্তক্ষেপে পরিস্থিতি শান্ত করেন। নতুন করে সভা শুরু হলে এমপি শিমুলের কালো রংয়ের হাইস গাড়ি থেকে অস্ত্র, লাঠি ও হাসুয়া নিয়ে এসে দ্বিতীয় দফায় হামলা করা হয়। এই হামলায় বনপাড়া পৌরসভার মেয়র কে এম জাকির হোসেন, নলডাঙ্গা থানা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মুশফিকুর রহমান ও জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি ফরহাদ বিন আজিজ ও সাবেক সভাপতি রাকিবুল হাসান জেমস ও ছাত্রলীগের আরেক নেতা আহত হয়েছে।

অপর দিকে সাবেক সাধারণ সম্পাদক ও নাটোর-২ সদর আসনের সংসদ সদস্য শফিকুল ইসলাম শিমুল এ সব অভিযোগ অস্বীকার করে বলেছেন, নেতাকর্মীদের মধ্যে কিছুটা ভুল বোঝাবুঝির ঘটনা ঘটেছিল। এটা তেমন কিছু নয়। সাথে সাথেই বিষয়টি আপোষ করে পরে ভালোভাবেই অনুষ্ঠান শেষ হয়েছে। তার বিরুদ্ধে আনা কোনো অভিযোগই সঠিক নয় দাবি করে তিনি আরও বলেন, সাধারণ সম্পাদক রমজানের অনুসারী হাইব্রিড নেতাকর্মীরা এই হামলা চালিয়েছে।

নাটোর থানার ওসি নাছিম আহমেদ বলেছেন, দুই গ্রুপের পাল্টাপাল্টি স্লোগানকে কেন্দ্র করে উত্তেজনা সৃষ্টি হলেও এখন পরিস্থিতি শান্ত রয়েছে।

news24bd.tv/SHS