‘মুক্তিযুদ্ধের বিরোধীরা রাষ্ট্রীয় পুরস্কার পেতে পারে না’

সংগৃহীত ছবি

‘মুক্তিযুদ্ধের বিরোধীরা রাষ্ট্রীয় পুরস্কার পেতে পারে না’

অনলাইন ডেস্ক

রাষ্ট্রীয় পদক প্রদানে আমলাতান্ত্রিকতার কারণে কিছু কিছু বিতর্কের সৃষ্টি হয়েছিল। বর্তমানে তা আর নেই। মুক্তিযুদ্ধের চেতনাবিরোধী কোনো সৃষ্টিকর্ম ও তার লেখক জাতীয় পুরস্কার পেতে পারে না বলে জানিয়েছেন বাংলা একাডেমির মহাপরিচালক কবি মুহম্মদ নূরুল হুদা।

তিনি বলেন, নজরুল গবেষণা যতটা হওয়া দরকার, ততটা হচ্ছে না।

তবে তুলনামূলক বিচারে ওপার বাংলার চেয়ে এপার বাংলায় নজরুল চর্চা অধিক। তার পরও বলব, আমাদের নজরুল গবেষণা আরও বাড়াতে হবে।

শুক্রবার (১৬ জুন) ঢাকায় এফডিসিতে নজরুলজয়ন্তী উপলক্ষে ইউসিবি পাবলিক পার্লামেন্ট শিরোনামে এক ছায়াসংসদ বিতর্ক প্রতিযোগিতায় কবি মুহম্মদ নূরুল হুদা এসব কথা বলেন।

প্রতিযোগিতা অনুষ্ঠানটি আয়োজন করে ডিবেট ফর ডেমোক্রেসি।

অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন ডিবেট ফর ডেমোক্রেসির চেয়ারম্যান হাসান আহমেদ চৌধুরী কিরণ।

বাংলা একাডেমির মহাপরিচালক বলেন, নজরুলের লেখা, বাণী, সুরসহ সৃষ্টিকর্মকে বিকৃত করা যাবে না। নানা সীমাবদ্ধতার মধ্যেও নজরুল ইনস্টিটিউট নজরুলকে নিয়ে শুদ্ধ চর্চার চেষ্টা করছে। নজরুলকে আমরা আনুষ্ঠানিকতায় বন্দি করে ফেলেছি, কথাটি অনেকটাই সত্য।

সভাপতির বক্তব্যে হাসান আহমেদ চৌধুরী কিরণ বলেন, নজরুল তার এক জীবনে যা লিখেছেন, তা একজন মানুষ সারাজীবনেও পড়ে শেষ করতে পারবে না। নজরুলের রচিত কাব্য ও সংগীত বায়ান্নর ভাষা আন্দোলন ও একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধে আমাদের অনুপ্রেরণা জুগিয়েছে। তিনি ছিলেন বিদ্রোহী কবি, মানবতার কবি। তিনি মানুষকে নিয়ে আরাধনা করতেন। ধর্ম নিয়ে কখনোই তিনি বাড়াবাড়ি করেননি। নজরুল ছিলেন অন্যায়-অত্যাচারের বিপক্ষে এক অতুলনীয় শক্তি। বর্তমান সময়ে যে হানাহানি, রাজনীতির যে প্রতিহিংসা বিদ্যমান, তিনি ছিলেন তার বিরুদ্ধে। তাই নজরুল চর্চার মাধ্যমে দেশে বিদ্যমান রাজনৈতিক প্রতিহিংসা দূর করে সবাইকে একসঙ্গে কাজ করতে হবে। যাতে অশুভ চক্রান্ত বাংলাদেশকে আর পিছিয়ে দিতে না পারে। অধিক নজরুল চর্চা বাড়লে কমতে পারে রাজনৈতিক হানাহানি ও বিভাজন।

তিনি বলেন, নজরুলকে বুঝতে হলে তার সৃষ্টিকে বুঝতে হবে। নজরুল তার সৃষ্টির মাধ্যমেই অনন্তকাল বেঁচে থাকবেন। কবিতা, গল্প, উপন্যাস, ছোটগল্প ও গান-গজল, সংগীতসহ সর্বক্ষেত্রেই নজরুলের রয়েছে অসামান্য অবদান। নজরুল শুধু শিল্পী-সুরকার, গীতিকার, কবি, ঔপন্যাসিক ও প্রাবন্ধিক ছিলেন না। নজরুল কেবল সংগীতই রচনা করেছেন প্রায় চার হাজারের মতো। এত গান পৃথিবীতে আর কোনো কবি-গীতিকার লিখেছেন বলে জানা নেই। গান ছাড়াও রয়েছে তার অজস্র ছড়া-কবিতা। লিখেছেন বেশ কিছু ছোটগল্প ও উপন্যাস। লেখালেখির পাশাপাশি সুর সৃষ্টি ও সংগীত পরিচালনাও করেছেন তিনি। এমনকি চলচ্চিত্র পরিচালক, সুরকার, গায়ক ও অভিনেতা হিসেবেও কাজ করেছেন নজরুল। নবযুগ, ধূমকেতু, লাঙল ইত্যাদি পত্রিকার সম্পাদনার দায়িত্বও পালন করেছেন নজরুল।

এ সময় ‘সংগীতের চেয়ে গদ্য ও কবিতায় নজরুল বেশি জনপ্রিয়‘ শীর্ষক ইউসিবি পাবলিক পার্লামেন্টে সরকারি বাঙলা কলেজকে পরাজিত করে তেজগাঁও কলেজের বিতার্কিকরা চ্যাম্পিয়ন হয়। প্রতিযোগিতায় বিচারক ছিলেন অধ্যাপক আবু মুহাম্মদ রইস, উন্নয়নকর্মী তানজিনা শারমিন, সাংবাদিক পার্থ সঞ্জয়, সাংবাদিক ফারহানা ন্যান্সী ও নিউজ প্রেজেন্টার শান্তা শারলিন। প্রতিযোগিতা শেষে বিজয়ী দলকে ট্রফি ও সনদপত্র দেওয়া হয়।

News24bd.tv/aa