ইসলামে সবচেয়ে বড় পাপ কোনটি

আল কোরআন

ইসলামে সবচেয়ে বড় পাপ কোনটি

আব্দুল্লাহ আল-মামুন আশরাফি

শিরক মানে অংশীদারিত্ব স্থাপন করা। বিশ্ব জাহানের একচ্ছত্র অধিপতি মহান আল্লাহর সঙ্গে কাউকে অংশীদার সাব্যস্ত করার নাম শিরক।

শিরক সবচেয়ে ভয়াবহ অপরাধ। আল্লাহর গুণাবলিতে অন্য কাউকে সমকক্ষ স্থির করার চেয়ে বড় অপরাধ আর নেই।

শিরকের চেয়ে ভয়াবহ জুলুম আর কিছু নেই। পবিত্র কোরআনে শিরককে বড় জুলুম বলে সাব্যস্ত করা হয়েছে। ইরশাদ হয়েছে, ‘আর স্মরণ করো সেই সময়ের কথা, যখন লুকমান উপদেশচ্ছলে তার পুত্রকে বলল, হে বৎস, আল্লাহর সঙ্গে শরিক কোরো না। নিশ্চয়ই আল্লাহর সঙ্গে শরিক করা বড় জুলুম।
’ (সুরা : লুকমান : আয়াত : ১৩)

ইমাম আবু আবদিল্লাহ মুহাম্মাদ ইবনে ইসমাইল বুখারি (রহ.) তার ‘সহিহ’ গ্রন্থে উল্লেখ করেন, আবদুল্লাহ ইবনে মাসউদ (রা.) বলেন, যখন নিম্নোক্ত আয়াত অবতীর্ণ হয়-‘যারা ঈমান আনে এবং তাদের ঈমানের সঙ্গে কোনো জুলুম মিশ্রিত করে না...। ’ (সুরা : আনআম, আয়াত : ৮২)

তখন সাহাবিদের কাছে বিষয়টা খুব কঠিন মনে হলো। তারা বলতে লাগলেন, আমরা সবাই তো কোনো না কোনো জুলুম তথা গুনাহ করে ফেলি। একেবারে জুলুমমুক্ত আমাদের মধ্যে কে আছে? রাসুল (সা.) তাদের এ কথা শুনে বলেন, তোমরা ব্যাপারটাকে যেমন ভেবেছ বিষয়টা তেমন নয়। তোমরা কি দেখো না যে লুকমান তার ছেলেকে কী নসিহত করেছেন! তিনি বলেছেন, ‘হে প্রিয় বৎস, আল্লাহর সঙ্গে শিরক করবে না। মনে রেখো, শিরক সবচেয়ে বড় জুলুম। ’ (সুরা : লুকমান, আয়াত : ১৩)

রাসুল (সা.)-এর কথা ও লুকমান হাকিম (রহ.)-এর উপদেশ-এ দুইয়ের আলোকে এ কথা দিবালোকের মতো সুস্পষ্ট যে এই পৃথিবীতে আল্লাহর সঙ্গে শিরক করার চেয়ে বড় কোনো জুলুম তথা অপরাধ নেই। শিরক হচ্ছে সবচেয়ে বড় গুনাহ। ক্ষমার অযোগ্য অপরাধ।

মহান আল্লাহ শিরককারীকে ক্ষমা করেন না। পবিত্র কোরআনে ইরশাদ হয়েছে, ‘নিঃসন্দেহে আল্লাহ তাকে ক্ষমা করেন না, যে ব্যক্তি তার সঙ্গে শরিক করে। এ ছাড়া অন্য পাপ তিনি যাকে ইচ্ছা ক্ষমা করেন। আর যে ব্যক্তি আল্লাহর সঙ্গে শিরক করল, সে অত্যন্ত গুরুতর অপবাদ আরোপ করল। ’ (সুরা : নিসা, আয়াত : ৪৮)

শিরকের কারণে পরকালে জান্নাত হারাম হয়ে যায়।

মহান আল্লাহ বলেন, ‘আর নিশ্চিত জেনো, যে ব্যক্তি আল্লাহর সঙ্গে কাউকে শরিক করে আল্লাহ তার জন্য জান্নাত হারাম করে দেন। তার ঠিকানা জাহান্নাম। আর যারা (এরূপ) জুলুম করে তাদের কোনো রকমের সাহায্যকারী লাভ হবে না। ’ (সুরা : মায়িদা, আয়াত : ৭২)

তাই প্রতিটি মুসলমানের উচিত, যেকোনো মূল্যে শিরকমুক্ত থাকার চেষ্টা করা। অতীতের শিরক হয়ে গেলে তার ওপর অনুতপ্ত হয়ে মহান আল্লাহর কাছে খাঁটি তাওবা করা। এবং আগামীতে কখনো এ ধরনের গুনাহে লিপ্ত না হওয়ার দৃঢ় সংকল্প করা। মহান আল্লাহ সবাইকে এ ধরনের গুনাহ থেকে দূরে থাকার তাওফিক দান করুন। আমিন।

news24bd.tv/আইএএম