ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কয়েকটি ইস্যুকে ঘিরে আলোচনা-সমালোচনা চলছে। রোকেয়া হলের দুজন শিক্ষার্থীর সিট বাতিল নিয়ে নোটিস এবং অপছন্দের শিক্ষার্থীদের ‘শিবির‘ তকমা দিয়ে মারধর অন্যতম। এসব ইস্যুতে মুখ খুলেছেন যুক্তরাষ্ট্রের ইলিনয় স্টেট ইউনভার্সিটির সরকার ও রাজনীতি বিভাগের অধ্যাপক অধ্যাপক আলী রিয়াজ।
এ ব্যাপারে ফেসবুকে পোস্ট দিয়েছেন তিনি।
তার পোস্টটি হুবহু তুলে ধরা হলো-ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রোকেয়া হলের দুজন শিক্ষার্থীকে হল কর্তৃপক্ষ ‘কেন তাদের হলের সিট বাতিল করা হবে না’ এই মর্মে কারণ দর্শানোর নোটিশ দিয়েছে। কেন এই নোটিশ সেই ঘটনার কথা আপাতত উহ্য থাকে, কি অভিযোগ তাও না হয় পরে এক সময় বলা যাবে। কিন্তু দেখার বিষয় হচ্ছে কর্তৃপক্ষ এই সব নোটিশ কার কার কাছে পাঠিয়েছেন।
প্রথম আলোর প্রতিবেদনে লেখা হয়েছে - “১৫ জানুয়ারি ছাত্রী ফাল্গুনী, শ্রবণা ও কর্মচারী শাহীনকে কারণ দর্শানোর নোটিশ দেন রোকেয়া হলের প্রাধ্যক্ষ অধ্যাপক জিনাত হুদা।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের হল কর্তৃপক্ষের আচরণ থেকে বোঝা যাচ্ছে হল কর্তৃপক্ষ মনে করে ছাত্রলীগের কর্মীদের ব্যাপারে শিক্ষার্থীর শিক্ষক বা বিভাগের প্রধান নয় - ছাত্রলীগের এমনকি বিশ্ববিদ্যালয় শাখার নেতারাই গুরুত্বপূর্ণ এবং তারাই বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনিক ব্যবস্থার অংশ। কর্তৃপক্ষের এই আচরণ প্রমান করছে ছাত্রলীগ, শিক্ষক, প্রশাসন এগুলো এখন আর আলাদা কোনো অস্তিত্ব নয়। ফলে ছাত্রী নিবাসে ‘পলিটিকাল’ বলে আলাদা উইং আছে - সেখানে গিয়ে উপস্থিত হলে অধ্যাপক লাঞ্চিত হন, কিন্তু এই নিয়ে উচ্চবাচ্য হয় না। হলের কথিত গণরুম চালায় ছাত্রলীগ; কর্তৃপক্ষ কোথায় থাকেন তা তারাই জানেন। অহরহ ছাত্রলীগ কর্মীরা তাদের অপছন্দের শিক্ষার্থীদের ‘শিবির‘ তকমা দিয়ে মারধর করে, প্রক্টরের হাতে সোপর্দ করলে তিনি/তারা পুলিশের কাছে তুলে দেন। প্রশাসনের কাজই হচ্ছে ওই টুকু। ছাত্রলীগ আর প্রশাসন এইভাবেই মিলেমিশে পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয় চালাচ্ছেন। এই নিয়ে প্রশ্ন করলে তার পরিণাম যে কি হয় তা নিরীহ শিক্ষার্থীদের জিজ্ঞেস করুন।
লেখক: যুক্তরাষ্ট্রের ইলিনয় স্টেট ইউনভার্সিটির সরকার ও রাজনীতি বিভাগের অধ্যাপক।
(ফেসবুক থেকে সংগৃহীত)
(নিউজ টোয়েন্টিফোর/তৌহিদ)