‘‌‌শাবনূরকে সরি বলতে হবে, সেটা এখন হোক কিংবা পরে’

‘‌‌শাবনূরকে সরি বলতে হবে, সেটা এখন হোক কিংবা পরে’

অনলাইন ডেস্ক

কৃতকর্মের জন্য শাবনূরকে সরি বলতে হবে। সেটা এখন হোক কিংবা পরে, এই জীবনে কিংবা শেষ বিচারের দিনে। নব্বইয়ের দশকের জনপ্রিয় চলচ্চিত্র অভিনেতা প্রয়াত সালমান শাহের সাবেক স্ত্রী সামিরা হক এমন কথা বলেছেন।

সালমান শাহ ও শাবনূর যে প্রেমের সম্পর্কে জড়িয়ে পড়েছিলেন, সে কথা সালমান নিজেই তার কাছে স্বীকার করেছিলেন বলে ঢাকার একটি দৈনিককে দেওয়া সাক্ষাৎকারে জানান সামিরা।

তিনি বলেন, সালমান তাকে সঙ্গে নিয়েই শুটিংয়ে যেতেন। প্রায় প্রতিটি সিনেমায় সালমানের ড্রেস ডিজাইনার ছিলেন তিনি।

১৯৯৬ সালে বাদল খন্দকারের একটি সিনেমার শুটিংয়ে সালমান ও শাবনূর কক্সবাজারে যান। সেখানেই সম্পর্কে জড়ান সালমান-শাবনূর।

ওই বছরের আগস্টে শাবনূরকে নিয়ে সিঙ্গাপুরে যান সালমান।

সেখান থেকে ফিরে সালমান সামিরাকে বলেন, তিনি একটা অন্যায় করে ফেলেছেন। শাবনূরের সঙ্গে এমন কিছু পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে যে তাকে ব্ল্যাকমেল করা হতে পারে।

‘সামিরা তখনই বিবাহবিচ্ছেদ চেয়েছিলেন। সালমান শোনেননি। তখন কিছু পত্রপত্রিকায় সালমান শাবনূরকে বিয়ে করতে যাচ্ছেন বলে খবর বের হয়। পরিস্থিতি এমন পর্যায়ে পৌঁছায়, সংবাদ সম্মেলন করে সালমানকে ঘোষণা দিতে হয় সামিরা তার স্ত্রী। ’

এমন অবস্থায় সামিরা চট্টগ্রামে চলে যান। সেখান থেকে তিনি খবর পাচ্ছিলেন সালমানকে অসদাচরণের জন্য প্রযোজক-পরিচালক সমিতি থেকে তিরস্কার করা হয়েছে। কাজে মন বসাতে পারছেন না সালমান। বেশ কিছু অঘটনও ঘটিয়েছেন। শেষ পর্যন্ত ৩ সেপ্টেম্বর সালমানের কাছে ফিরে আসেন সামিরা।

সামিরা বলেন, ইমন (সালমান) কতটা আবেগপ্রবণ ছিল, সেটা কেউ বুঝবে না। ভাববে সিনেমাটিক। কিন্তু আমি ফিরে দেখলাম, রাগ করে চট্টগ্রাম যাওয়ার আগে যেভাবে যা রেখে গেছি, সেভাবেই আছে। ইমন মাটিতে ঘুমোচ্ছে। সঙ্গে আমার একটা টপস।

সামিরা সব ভুলে নতুন করে শুরু করতে চেয়েছিলেন। পরদিন বাংলাদেশ চলচ্চিত্র সাংবাদিক সমিতির পুরস্কার গ্রহণ অনুষ্ঠানেও দুজনে একসঙ্গে যান।

ওই বছর সালমান সেরা চিত্রনায়ক ও শাবনূর সেরা নায়িকার পুরস্কার পেয়েছিলেন। তবে শাবনূর ওই অনুষ্ঠানে আসেননি। এর দুদিন পর আত্মহত্যা করেন সালমান।

সামিরা বলেন, কারও প্রতি তার কোনো রাগ বা ক্ষোভ নেই। শুধু শাবনূর তার সঙ্গে যা করেছেন, সেটা তিনি ভুলতে পারেন না। একটা সময় তাদের মধ্যে ঘনিষ্ঠতা ছিল। তিনি সাজগোজ করতে শিখিয়েছিলেন শাবনূরকে। তার টি-শার্ট পরে একটি ছবিতে অভিনয়ও করেছেন শাবনূর। সেই মেয়েটি কী করে সালমানের সঙ্গে সম্পর্কে জড়ালেন, এ নিয়ে দুঃখ হয় সামিরার।

এদিকে সোমবার বেলা সাড়ে ১১টায় রাজধানীর ধানমণ্ডিতে পিবিআই সদর দফতরে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে সংস্থাটির প্রধান বনজ কুমার মজুমদার বলেন, সালমান তার স্ত্রী সামিরা এবং শাবনূর দু’জনকেই খুব ভালোবাসতেন।

তিনি সালমান শাহর বাসায় রান্নার কাজ করা মনোয়ারা বেগমের জবানবন্দির বরাত দিয়ে এই দাবি করেন।

সালমান শাহ শাবনূরকেও বিয়ে করে দুই স্ত্রী নিয়ে সংসার করতে চেয়েছিলেন। কিন্তু সামিরা সতীনের সংসার করতে রাজি হননি। পিবিআইর তদন্তে সালমানের মামা, সালমানের বাসার কাজের সহযোগী এবং পাশের ফ্ল্যাটের ভাড়াটিয়াকে জিজ্ঞাসাবাদে বিষয়টি স্পষ্ট ফুটে ওঠে।

পিবিআই প্রধান বলেন, তদন্তের প্রয়োজনে যখন আমরা সালমানের বাসায় কাজের সহযোগী মনোয়ারা বেগমকে জিজ্ঞাসাবাদ করি, তিনি জানান, সালমান শাবনূরকে বিয়ে করতে চেয়েছিলেন। সামিরা ও শাবনূরকে নিয়ে একসঙ্গে সংসার করতে চেয়েছিলেন। কিন্তু সামিরা তাতে রাজি হননি।

মনোয়ারা বেগম পিবিআইকে আরও জানান, সালমানের মৃত্যুর আগের দিন রাতেও শাবনূরকে নিয়ে সামিরার সঙ্গে ঝগড়া হয়। ওই সময় শাবনূরকে কল দিয়ে সালমান বলেছিলেন আর কখনও ফোন না দিতে। শাবনূরের উপহার দেয়া সিটিসেল ফোনটি এরপরেই ভেঙে ফেলেন।

(নিউজ টোয়েন্টিফোর/তৌহিদ)

সম্পর্কিত খবর