‘পাপিয়া কাণ্ডের পর দুশ্চরিত্র পুরুষ ও মক্ষীরানীরা ভোলা পাল্টাবে’

‘পাপিয়া কাণ্ডের পর দুশ্চরিত্র পুরুষ ও মক্ষীরানীরা ভোলা পাল্টাবে’

খুজিস্তা নূর-ই–নাহারিন

মক্ষীরানী পাপিয়ার কর্মকাণ্ড প্রকাশিত হওয়ার পর অনেক অসৎ পুরুষ কিছুদিনের জন্য ভালোবেসে না হলেও ভয়ে ঘরমুখী হবে।

৫ তারকা হোটেলগুলোতে স্বল্প সময়ের জন্য ব্যবসায় ধস নামবে। কারণ এই হোটেলগুলোকে মানুষ আগের মতো নিরাপদ এবং মানসম্মত মনে করবে না। এখন যেমন কেউ আর সহজে ওয়েস্টিনমুখী হতে চাইবে না।

যাদের নাম প্রকাশিত হবে বা ইতিমধ্যেই যাদের ভিডিও প্রকাশিত হয়েছে তাদের বন্ধুত্ব অনেকে অসম্মানজনক মনে করে অস্বীকার করবে।

দুশ্চরিত্র পুরুষরা প্রোফাইল এবং কভার পেজে স্ত্রীর সাথে প্রেমময় হাস্যোজ্বল ছবি পোস্ট দেবে (মনের বিরুদ্ধে গিয়ে হলেও)।

কেউ কেউ আবার নামাজ-রোজা-হজ্ব-যাকাত এবং প্রাত্যহিক জীবনাচরণ নিয়ে ফতোয়া দেওয়া শুরু করবে। পারলে প্রতিবেলা মসজিদে গিয়ে নামজ পড়বে।

ইতোমধ্যেই অনেকে হয়তো বিদেশ পালানোর চেষ্টা করছে কিংবা বিদেশ পাড়ি জমিয়েছে।

মক্ষীরানীরা কিছুদিনের জন্য ভোল পাল্টিয়ে হিজাবি হয়ে যাবে। পারলে হাতে তসবি আর মুখে সুবহানাল্লাহ, নাউজুবিল্লাহ আর আস্তাগফিরুল্লাহ আওড়াবে। তারাও স্বামী আর সন্তানসহ সুখী পরিবারের ছবি পোস্ট দেবে।

মনের মধ্যে যতই উসখুস থাকুক, ইচ্ছা থাকুক সমস্ত দলের নেতৃবৃন্দ সেলফি পার্টির নারীদের সাথে হেসে ছবি তোলার পরিবর্তে সতর্ক অবস্থানে থাকবে, নিরাপদ দূরত্ব বজায় রাখতে চাইবে।

পার্টি অফিসে কালো ভ্রু আঁকা, পাউডার আর লিপিস্টিক পার্টি নিষিদ্ধ ঘোষিত হতে পারে।

“পাপিয়া” শব্দটি একটি ভয়াবহ নোংরা, চরম অবমাননা কর গালিতে পরিণত হতে পারে।

স্ত্রী এবং সমাজ নোংরা পুরুষদের গালি হিসেবে “পুরুষ বেশ্যা” শব্দটি জনপ্রিয় হতে পারে।

কমিটি ঘোষণার আগে এলাকার নেতৃবৃন্দ নিজের সুস্পষ্ট মতামত দিয়ে নিজেদের অবস্থান নিশ্চিত করবে।

এই কর্মকাণ্ডের সাথে জড়িত নারী/পুরুষদের মানুষ ঘৃণার চোখে দেখবে। অসহায় বলে যৌনকর্মীকে তাও করুণা করে কিন্তু মক্ষীরানীদের সবাই ঘৃণার চোখে দেখে।

পাপিয়ার সাথে থাকা মেয়েদের, যাদেরকে সে যৌনকর্মী হতে বাধ্য করেছিল তাদের জীবনটাও হয়তো নষ্ট হয়ে গেল।

সামনের সম্মেলনে যুব মহিলা লীগে ছাত্রলীগ করা দলের প্রতি আনুগত্য আর দেশের প্রতি প্রতিশ্রুতিশীল শিক্ষিত মার্জিত ভদ্র তারুণ্য নির্ভর নতুন নেতৃত্বের আবির্ভাব ঘটতে পারে।

মাননীয় নেত্রীর হাতে তালিকায় থাকা অপ্রকাশিত বিতর্কিত ১৫৩ জন নারীর সবাই নিশ্চয়ই যুব মহিলা লীগের না, মহিলা লীগের হওয়ারও সম্ভাবনা আছে। সেই ক্ষেত্রে এই ঝড় মহিলা লীগকেও ছুঁয়ে যেতে পারে।

তাদের আর্থিক বিবরণ, ব্যাংক হিসাব ২০০৮ থেকে ২০২০ পর্যন্ত উত্থান, অবৈধ পথে আয় উপার্জন, শিক্ষা, পরিবার, গ্রামের বাড়ি সব কিছুর খোঁজ নেওয়া হবে।

আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর সাথে সাথে সৎ সাংবাদিকরা তদন্ত করে আরও অনেক মক্ষীরানীদের খবর বের করে আনবেন।

মাননীয় নেত্রী এই বিষয়ে জিরো টলারেন্স নীতি ঘোষণা করবেন এবং পদক্ষেপ নিবেন বলে মনে প্রাণে বিশ্বাস করি।

সেই ক্ষেত্রে দলে শিক্ষিত ভদ্র মার্জিত নারীদের কদর বাড়বে।

যত যাই ঘটুক দিনশেষে প্রতিটি মানুষ নিজের বিবেকের মুখোমুখি হবে। অন্যায়কারীর বিবেক তাকে শান্তিতে থাকতে দেবে না, তাড়িয়ে বেড়াবে।

আর যাদের বিবেক নেই তারা পশুতুল্য । পশুদের কোনও শোক-আফসোস-অনুভূতি-লজ্জা কিচ্ছু থাকে না, কেবলই যৌনতা, নৃশংসতা, কেবলই চাহিদা। হতে পারে এরা এক ধরনের পশুই, নয়তো এমন পাশবিকতা নোংরামি কী করে সম্ভব!!

লেখক: সম্পাদক, পূর্বপশ্চিমবিডি.কম

(ফেসবুক থেকে সংগৃহীত)

(নিউজ টোয়েন্টিফোর/তৌহিদ)

সম্পর্কিত খবর