সিলেটি আমেরিকান কন্যা মৌসুমীর বিয়ে প্রতারণা

সিলেটি আমেরিকান কন্যা মৌসুমীর বিয়ে প্রতারণা

অনলাইন ডেস্ক

সিলেটের আমেরিকান কন্যা মৌসুমী নিজেকে ‘কুমারী’ দাবি দ্বিতীয় বিয়ের পিঁড়িতে বসেছিলেন। বিয়ের পরে নানা টালবাহানা করে দ্বিতীয় স্বামীর কাছ থেকে ২১ লাখ টাকার মালামাল হাতিয়ে নিয়েছেন। এদিকে- প্রথম স্বামীও প্রতারণায় পড়ে তার বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেছেন। পুলিশ জানিয়েছে- দ্বিতীয় স্বামীর মামলাটি তদন্ত করা হচ্ছে।

এই যেন কেচো খুড়তে গিয়ে সাপ বের হয়ে যাওয়ার অবস্থা!

২০১২ সালে আমেরিকান কন্যা শারমিন সুরভী মৌসুমীর প্রথম বিয়ে হয়েছিল এক চিকিৎসকের সঙ্গে। সেই ঘরে রয়েছে মৌসুমীর ৫ বছর বয়সের ফুটফুটে পুত্র সন্তান। সবকিছু গোপন রেখে কুমারী সেজে ২০২০ সালে  আবারও করেছেন দ্বিতীয় বিয়ে। তার দ্বিতীয় স্বামী সিলেটের গোলাপগঞ্জ ভাদেশ্বর দক্ষিণভাগ গ্রামের আব্দুল কুদ্দুছের ছেলে জাকের আহমদ।

 

তিনি বাদী হয়ে চলতি মাসেই মামলা দায়ের করেন সিলেটের এয়ারপোর্ট থানায়। মামলার আসামিরা হলেন- জৈন্তাপুর থানার নিজপাট চুনাহাটি গ্রামের মৃত আব্দুর রহিমের ছেলে রফিকুর আর এমএ মুনিম, তার স্ত্রী ইমামা বেগম চৌধুরী ও আমেরিকান কন্যা শারমীন সুরভী মৌসুমী।  


কষ্টার্জিত জয়ে অ্যাটলেটিকোর ঘাড়ে নিঃশ্বাস ফেলছে রিয়াল

জেনে নিন এইচএসসি পরীক্ষার্থীদের রেজিস্ট্রেশন কার্ড বিতরণের তথ্য

অ্যাপে ইয়াবা বিক্রি!

স্কয়ার ফুড অ্যান্ড বেভারেজে নিয়োগ


মামলায় উল্লেখ করা হয়, তিনি সাইপ্রাস প্রবাসী। দেশে এলে ২০২০ সালের ১৫ই জানুয়ারি ইসলামী শরীয়াহ্‌ মোতাবেক সিলেট নগরীর হাউজিং এস্টেট ৭ নম্বর লেনের ৫৬ নম্বর বাসায় মৌসুমীর সঙ্গে বিয়ে হয়। তখন কন্যার বাবা-মা ও আত্মীয়-স্বজন সবাই উপস্থিত ছিলেন। বিয়ের ১৩ দিন পর মৌসুমী তার মা-বাবাকে নিয়ে আমেরিকা চলে যান। তখন বরের পিতা-মাতাকে বলেন, কয়েক মাসের মধ্যে জাকেরকে আমেরিকা নিয়ে যাওয়া হবে।

আমেরিকা যাওয়ার পর মৌসুমী ফোনে ও সামাজিক মাধ্যমে নিয়মিত যোগাযোগ রাখতেন জাকেরের সঙ্গে। গত ২১শে নভেম্বর মৌসুমী ফোন করে জাকেরকে বলেন তোমাকে আমেরিকা আনতে হলে ২৫ লাখ টাকা লাগবে বলে স্বামীকে জানান। এতে টাকা দিতে রাজি হননি জাকের।  

এদিকে- মৌসুমী তার পরিবারের এ ধরনের কথাবার্তায় রহস্য দেখা দেয় জাকেরের পরিবারে। তারা গত ২৮শে ডিসেম্বর আমেরিকান কন্যার গ্রামের বাড়ি জৈন্তাপুরে গিয়ে আসামিপক্ষ বিষয়টি অনুসন্ধান করেন। তখন জানতে পারেন মৌসুমীর মা-বাবা ২০১২ সালের ৩০শে ডিসেম্বর মৌলভীবাজার জেলার কুলাউড়া থানার পৃত্থিমপাশা সুজাপুর গ্রামের মো. শফিক মিয়ার ছেলে ডা. মো. ফরিদ আহমদের সঙ্গে বিয়ে হয়।

বিয়ের পর ২০১৫ সালের ৩রা মার্চ এক পুত্রসন্তান জন্মগ্রহণ করেন। খবর পেয়ে প্রথম স্বামীর সঙ্গে যোগাযোগ করেন দ্বিতীয় স্বামী। তখন বেরিয়ে আসে চ্যাঞ্চল্যকর তথ্য।  

তখন প্রথম স্বামী জানান- তার সঙ্গে বিয়ের পর ২০১৮ সালের ১৯শে জুলাই মৌসুমী বাদী হয়ে মোহরানার জন্য সিলেটের জৈন্তাপুর পারিবারিক আদালতে দাখিল করেন। যা গত বছরের ১৫ই মার্চ সোলেনামা দাখিলের মাধ্যমে নিষ্পত্তি হয়। মৌসুমী ও তার পিতা-মাতা প্রতারক।

জাকের তার মামলায় আরও উল্লেখ করেন, তার সঙ্গে মৌসুমীর বিয়ের জন্য উভয়পক্ষের আলোচনায় ১৫ লাখ টাকার স্বর্ণ ও দেনমোহর বাবদ ৬ লাখ টাকা মু’আজ্জল রেখে কাবিন সাব্যস্তে বিয়ে হয়। কিন্তু বিয়ের কাবিননামা তুলে দেখা যায়- সেখানে ২১ লাখ টাকার কাবিননামা ও ১ লক্ষ টাকার স্বর্ণালঙ্কার বাবদ পরিশোধ দেখানো হয়েছে। তাছাড়া প্রথম বিয়ে গোপন রেখে ‘কুমারী’ সেজে বিয়ে হয়েছে। যা প্রতারণার আশ্রয় নিয়ে বিশ্বাস ভঙ্গ করা হয়েছে।  

মামলার বাদীপক্ষের আইনজীবী মো. আব্দুর রহমান আফজাল জানান, প্রথম স্বামীর সঙ্গে মামলা চলাকালীন সময়ে এবং প্রথম বিয়ে গোপন রেখে জাকেরকে বিয়ে করেন মৌসুমী।  

এয়ারপোর্ট থানার ওসি খান মুহাম্মদ মাইনুল জাকির জানান, আদালতের নির্দেশ মতো মামলাটি রের্কড করা হয়েছে। মামালাটি বর্তমানে তদন্তাধীন।

news24bd.tv/আলী