আশুরার ফজিলত ও আমল

আশুরার ফজিলত ও আমল

অনলাইন ডেস্ক

আশুরা অর্থ দশম। মহররম মাসের ১০ তারিখ আশুরা নামে খ্যাত। আশুরাতেই নভোমণ্ডলে সৃষ্টিকুলের প্রাথমিক বিভাজনপ্রক্রিয়ার সূচনা হয়।  

কোরআন কারিমে রয়েছে, ‘আকাশ ও পৃথিবী সৃষ্টির দিন থেকেই আল্লাহর নিকট মাসের সংখ্যা বারো, তন্মধ্যে চারটি মাস সম্মানিত।

’ (সুরা-৯, তাওবা, আয়াত: ৩৬)। হাদিস শরিফে মহররমকে ‘শাহরুল্লাহ’ বা ‘আল্লাহর মাস’ বলে আখ্যায়িত করা হয়েছে। আর পবিত্র কোরআনে উল্লেখিত সুরা তাওবার ৩৬ নম্বর আয়াতে ‘অতি সম্মানিত ও মর্যাদাপূর্ণ চার মাস’ বলতে জিলকদ, জিলহজ, মহররম ও রজব—এই চার মাসকে বোঝানো হয়েছে। (তাফসিরে মাজহারি)।

মুসলমানদের কাছে ১০ মহররম বিশেষভাবে মর্যাদাপূর্ণ ও মহিমান্বিত। আশুরার দিন রোজা রাখা সুন্নাত। আশুরার রোজা সব নবীর আমলেই ছিল। নবী করিম (সা.) মক্কায় থাকতেও আশুরার রোজা পালন করতেন। হিজরতের পর মদিনায় এসে রাসূলুল্লাহ (সা.) দেখতে পেলেন, ইহুদিরাও এ দিনে রোজা রাখছে। প্রিয় নবী (সা.) তাদের রোজার কারণ জানতে পারলেন, এদিনে মূসা (আ.) সিনাই পাহাড়ে আল্লাহর পক্ষ থেকে তাওরাত লাভ করেন। এদিনেই তিনি বনি ইসরাইলকে ফেরাউনের কয়েদখানা থেকে উদ্ধার করেন এবং এদিনেই তিনি বনি ইসরাইলদের নিয়ে লোহিত সাগর অতিক্রম করেন। আর ফেরাউন সেই সাগরে ডুবে মারা যায়। তাই কৃতজ্ঞতা প্রকাশের জন্য ইহুদিরা এই দিন রোজা রাখে।

মহানবী (সা.) বললেন, মূসা (আ.)-এর সঙ্গে আমাদের সম্পর্ক তোমাদের চেয়ে বেশি ঘনিষ্ঠ। অতঃপর তিনি মহররমের ৯-১০ অথবা ১০-১১ মিলিয়ে দুটি রোজা রাখতে বললেন, যাতে ইহুদিদের সঙ্গে সাদৃশ্য না হয়। দ্বিতীয় হিজরিতে রমজান মাসের রোজা ফরজ করা হলে আশুরার রোজা নফল হয়ে যায়। তবে রমজানের রোজা রাখার পর আশুরার রোজা সর্বাধিক গুরুত্বপূর্ণ ও ফজিলতপূর্ণ। এ মাসের নফল রোজা ও অন্যান্য ইবাদত রমজান মাস ব্যতীত অন্য যে কোনো মাস অপেক্ষা অধিক উত্তম। [মুসলিম ও আবুদাউদ]।

আবু মূসা (রা.) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, নবী (সা.) যখন মদিনায় এলেন, তখন ইহুদি সম্প্র্রদায়ের কিছু লোক আশুরার দিনকে খুব সম্মান করত এবং সেদিন তারা সাওম পালন করত। এতে নবী (সা.) বললেন, ইহুদিদের চেয়ে ওই দিন সাওম পালন করার আমরা বেশি হকদার। তারপর তিনি সবাইকে সাওম পালন করার নির্দেশ দিলেন। [সহিহ বুখারি, হাদিস নং ৩৯৪২]।

হজরত আবু হুরায়রা (রা.) হতে বর্ণিত, রাসুলে পাক সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেন, রমজানের রোজার পর মহররমের রোজা হলো সর্বশ্রেষ্ঠ, যেমন ফরজ নামাজের পর শেষ রাতের তাহাজ্জুদ নামাজ সবচেয়ে বেশি মর্যাদাসম্পন্ন।

আরও পড়ুন:


রিলিফের কাপড়ের কাফন দিয়ে সমাহিত করা হয়েছিল বঙ্গবন্ধুকে

চলে গেলেন ফুটবল কিংবদন্তি গার্ড মুলার

আফগানিস্তানের পরিস্থিতি থেকে আমাদের কি কিছু শেখার আছে

একাধারে কাবুলে ঢুকতে শুরু করেছে তালেবান


উম্মুল মুমিনিন হজরত হাফসা (রা.) বলেন, রাসুলে পাক সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম চারটি কাজ কখনো পরিত্যাগ করেননি। আশুরার রোজা, জিলহজের প্রথম দশকের রোজা, আইয়ামে বিদের রোজা তথা প্রতি মাসের ১৩, ১৪, ১৫ তারিখের রোজা এবং ফজর ওয়াক্তে ফরজের আগে দুই রাকাত সুন্নাত নামাজ।

হজরত আবদুল্লাহ ইবনে মাসউদ (রা.) বর্ণনা করেন, রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, ‘যে ব্যক্তি আশুরার দিনে পরিবারের ব্যয় বৃদ্ধি করবে, ভালো খাওয়াদাওয়ার আয়োজন করবে; আল্লাহ সারা বছর তার প্রাচুর্য বাড়িয়ে দেবেন। ’ হজরত সুফিয়ান ছাওরি তাবিয়ি (রহ.) বলেন, ‘আমরা এটি পরীক্ষা করেছি এবং যথার্থতা পেয়েছি। ’ (মিশকাত: ১৭০; ফয়জুল কালাম: ৫০১, পৃষ্ঠা ৩৪৯; বায়হাকি ও রাজিন)।

এই রকম আরও টপিক