যৌতুকের সাজা পাঁচ বছর, বিল পাস

জাতীয় সংসদ

যৌতুকের সাজা পাঁচ বছর, বিল পাস

নিউজ টোয়েন্টিফোর ডেস্ক

যৌতুক নেওয়া কিংবা যৌতুক নিয়ে মিথ্যা মামলা করলে ৫ বছরের জেল ও ৫০ হাজার টাকা জরিমানার বিধান রেখে জাতীয় সংসদে যৌতুক নিরোধ বিল-২০১৮ পাস হয়েছে।

বিলে বলা হয়েছে, যৌতুক প্রদান, গ্রহণ বা যৌতুকে সহায়তা বা চুক্তি করলেও একই সাজা হবে। ‘যৌতুক নিরোধ বিল ২০১৮’ নামের বিলটি সর্বসম্মতিক্রমে পাস হয়।

রোববার মহিলা ও শিশু বিষয়ক প্রতিমন্ত্রী মেহের আফরোজ চুমকি ‘যৌতুক নিরোধ বিল-২০১৮’ নামের বিলটি জাতীয় সংসদে পাসের প্রস্তাব উত্থাপন করলে তা কণ্ঠভোটে পাস হয়।

গত ২৫ জুন জাতীয় সংসদের অধিবেশনে বিলটি উত্থাপনের পর তা পরীক্ষা-নিরীক্ষার জন্য মহিলা ও শিশু বিষয়ক মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটিতে পাঠানো হয়।  

বিলে যৌতুকের সংজ্ঞায় বলা হয়, যৌতুক অর্থ বিয়ের এক পক্ষ কর্তৃক অন্য পক্ষের কাছে বৈবাহিক সম্পর্ক স্থাপনের পূর্বশর্ত হিসেবে বিয়ের সময় বা তারপূর্বে বা বৈবাহিক সম্পর্ক বিদ্যমান থাকাকালে, বিয়ে অব্যাহত রাখার শর্তে, বিয়ের পণ বাবদ, প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষভাবে, দাবিকৃত বা বিয়ের এক পক্ষ কর্তৃক অপর পক্ষকে প্রদানের জন্য সম্মত কোনো অর্থ সামগ্রী বা অন্য কোনো সম্পদ বোঝাবে।

তবে মুসলিম ব্যক্তিগত আইন প্রযোজ্য ব্যক্তিগণের ক্ষেত্রে দেন মোহর বা মোহরানা অথবা বিয়ের সময় পক্ষগণের আত্মীয়-স্বজন, বন্ধু-বান্ধব বা শুভাকাঙ্ক্ষীর দেয়া উপহার সামগ্রী এর অন্তর্ভুক্ত হবে না।

বিলে প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষভাবে বিয়ের কোনো পক্ষ যৌতুক দাবি করলে তা অপরাধ হিসেবে গণ্য করে অনধিক পাঁচ বছর, অন্যূন এক বছর কারাদণ্ড বা অনধিক ৫০ হাজার টাকা অর্থদণ্ড অথবা উভয় দণ্ডে দণ্ডিত করার বিধান করা হয়েছে।

বিলে বিয়ের কোনো পক্ষ কর্তৃক যৌতুক প্রদান বা গ্রহণ অপরাধ হিসেবে গণ্য করে অনধিক পাঁচ বছর, অন্যূন এক বছর কারাদণ্ড বা অনধিক ৫০ হাজার টাকা অর্থদণ্ড অথবা উভয় দণ্ডে দণ্ডিত করার বিধান করা হয়েছে।

বিলের বিধানের উদ্দেশ্য পূরণে যৌতুক প্রদান বা গ্রহণসংক্রান্ত কোনো চুক্তি ফলবিহীন বলে গণ্য করার বিধান করা হয়েছে।

বিলে কোনো ব্যক্তি অন্য কোনো ব্যক্তির ক্ষতি সাধনের অভিপ্রায়ে ওই ব্যক্তির বিরুদ্ধে মামলা বা অভিযোগ দায়ের করলে তিনি অনধিক পাঁচ বছর কারাদণ্ড বা অনধিক ৫০ হাজার টাকা অর্থদণ্ড অথবা উভয় দণ্ডে দণ্ডিত করার বিধান করা হয়েছে।

বিলের বিধানের অধীন সংঘটিত অপরাধ আমলযোগ্য, জামিন অযোগ্য এবং আপসযোগ্য বলে বিধান করা হয়েছে।

বিলে এ ধরনের অপরাধের তদন্ত, বিচার, আপিল এবং সংশ্লিষ্ট অন্যান্য বিষয়ে ফৌজদারি দণ্ডবিধির বিধানাবলী প্রযোজ্য করার বিধান করা হয়েছে।

বিলে বিদ্যমান যৌতুক নিরোধ আইন রহিত করার বিধান করা হয়েছে।

জাতীয় পার্টির সেলিম উদ্দিন, শামীম হায়দার পাটোয়ারী, ফখরুল ইমাম, নুরুল ইসলাম ওমর, রুস্তম আলী ফরাজী, বেগম নূর-ই-হাসনা লিলি চৌধুরী, বেগম মাহজাবীন মোরশেদ ও বেগম রওশন আরা মান্নান বিলের ওপর জনমত যাচাই, বাছাই কমিটিতে প্রেরণ ও সংশোধনী প্রস্তাব আনলে তা কণ্ঠভোটে নাকচ হয়ে যায়।

(নিউজ টোয়েন্টিফোর/তৌহিদ)

সম্পর্কিত খবর