বাকৃবিতে র‍্যাগিংয়ের ঘটনায় অপদস্থ সহকারী প্রক্টর

সংগৃহীত ছবি

বাকৃবিতে র‍্যাগিংয়ের ঘটনায় অপদস্থ সহকারী প্রক্টর

ময়মনসিংহ প্রতিনিধি

বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের (বাকৃবি) র‌্যাগিংয়ের ঘটনা সমাধান করতে গিয়ে অবরুদ্ধের শিকার হয়েছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের সহকারী প্রক্টর ড. মো. রিজওয়ানুল হক। গত শনিবার রাতে বিশ্ববিদ্যালয়ের শাহজালাল হলে ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা এমন কাণ্ড ঘটিয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে।  

এ ঘটনার সংবাদ সংগ্রহ করতে গিয়ে প্রথমে হেনস্তা ও পরে হামলার শিকার হয়েছেন ক্যাম্পাসের সাংবাদিকেরা। হেনস্তার শিকার তিন সাংবাদিক হলেন ঢাকা পোস্টের বাকৃবি প্রতিনিধি মুসাদ্দিকুল ইসলাম তানভীর, দৈনিক খোলা কাগজ পত্রিকার বাকৃবি প্রতিনিধি ইফতে খারুল ইসলাম সৈকত এবং ক্যাম্পাস লাইভ ২৪ ডট কমের বাকৃবি প্রতিনিধি রায়হান আবিদ।

 

প্রত্যক্ষদর্শী ও হল সূত্রে জানা যায়, সম্প্রতি শাহজালাল হলের প্রথম বর্ষের এক শিক্ষার্থীকে র‌্যাগ দেয় ওই হলের ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীরা। বিষয়টি সমাধান করতে শনিবার রাত ১০টার দিকে ওই শিক্ষার্থীর কয়েকজন নিকটাত্মীয় ও সহকারী প্রক্টর ওই হলে যান। এ সময় হলের প্রভোস্ট অধ্যাপক মো. কামরুল হাছান সেখানে উপস্থিত ছিলেন।
প্রভোস্টের কার্যালয়ে বিষয়টি নিয়ে আলোচনার একপর্যায়ে ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীদের তোপের মুখে পড়েন প্রভোস্ট ও সহকারী প্রক্টর।

এ সময় ছাত্রলীগের কয়েকজন সহকারী প্রক্টরের দিকে তেড়ে যান, তাকে গালিগালাজ করে এবং অপদস্থ করার চেষ্টা করেন। পরে সহকারী প্রক্টরকে অবরুদ্ধ করে রাখেন হল ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা। এ সময় হলের প্রভোস্ট নিশ্চুপ ছিলেন বলে অভিযোগ ওঠেছে।  

খবর পেয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ মহির উদ্দীন ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়ে সহকারী প্রক্টর ও ভুক্তভোগী শিক্ষার্থীর অভিভাবকদের উদ্ধার করেন। এ ঘটনার পর সহকারী প্রক্টর অসুস্থ হয়ে পড়লে তাঁকে ময়মনসিংহ মেডিকেলে চিকিৎসা করানো হয়।

এদিকে ওই ঘটনার সংবাদ সংগ্রহ করতে গিয়ে ছাত্রলীগের নেতাকর্মীদের তোপের মুখে পড়েন বিশ্ববিদ্যালয়ে কর্মরত তিন সাংবাদিক। এ সময় হেনস্তা ও গালিগালাজ করে হল থেকে বের হয়ে যেতে বলেন শাহজালাল হলের উপ-ধর্ম বিষয়ক সম্পাদক হৃদয় খান (কুতুব) ও একই হলের দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্রলীগ কর্মী সৌরভ চৌধুরী ও তার সহযোগীরা।  

পরে বাকৃবি শাখা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক মো. মেহেদী হাসান এসে বিষয়টি সুরাহা করার দায়িত্ব ওই হলের ছাত্রলীগ নেতা নাজমুল শাকিলকে দেন। ছাত্রলীগ নেতা নাজমুল শাকিল ওই ঘটনার জন্য দুঃখ প্রকাশ করে সাংবাদিকদের কাছে ক্ষমা চান। বিষয়টি সুরাহা হলে রাত ১টার দিকে সাংবাদিকেরা শাহজালাল হল থেকে নিজ নিজ হলের উদ্দেশ্যে বের হন। পরে ওই হলের ৮ থেকে ১০ জন ছাত্রলীগের নেতাকর্মী শহীদ শামসুল হক হলের সামনে এসে হেনস্তার শিকার হওয়া ওই তিন সাংবাদিকসহ দৈনিক এশিয়ান এজ পত্রিকার বাকৃবি প্রতিনিধি আতিকুর রহমানের উপর অতর্কিত হামলা চালায়। এছাড়াও অন্য সাংবাদিকদের মারধর করে সাইকেল ও মোবাইল ভাঙচুর করে ছাত্রলীগের নেতৃবৃন্দ।

সাংবাদিক সমিতির সভাপতি রাকিবুল হাসান বলেন, এর আগেও বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন সমস্যায় তদন্ত কমিটি গঠিত হলে আলোর মুখ দেখেনি। দোষীরা শাস্তির আওতায় না আসায় অনাকাঙ্খিত ঘটনা বেড়েই চলেছে।

এবিষয়ে শাহজালাল হলের প্রভোস্ট অধ্যাপক মো. কামরুল হাছান বলেন, হলে র‌্যাগিংয়ের কোনো ঘটনা ঘটেনি। সহকারী প্রক্টর আমাকে না জানিয়ে হলে গেলে আমার সামনে এই অনাকাঙ্খিত ঘটনা ঘটে। তবে এই অনাকাঙ্খিত ঘটনার পেছনে ছাত্রলীগের নেতাকর্মীদের পূর্ব ক্ষোভ থাকতে পারে।
news24bd.tv/আজিজ