লালমনিরহাটের পাটগ্রামে মসজিদ নির্মাণকে কেন্দ্র করে এক সংঘর্ষে মসজিদ কমিটির সভাপতি অলিয়ার রহমান (৭০) গুরুতর আহত হয়ে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মৃত্যু হয়েছে। মঙ্গলবার (২৭ ডিসেম্বর) সকালে রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান তিনি।
এর আগে গত বুধবার (২১ ডিসেম্বর) লালমনিরহাটের পাটগ্রামের বুড়িমারী ইউনিয়নের উফারামারা গ্রামে মসজিদ পুনঃনির্মাণ নিয়ে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, উপজেলার বুড়িমারী ইউনিয়নের উফারামারা গ্রামে পুরাতন মসজিদ ভেঙে নতুন মসজিদ পুনঃনির্মাণ করাকে কেন্দ্র করে মাথায় লোহার লাঙলের আঘাতে গুরুতর আহত হয় মসজিদ কমিটির সভাপতি অলিয়ার রহমান (৭০)।
উফারমারা বায়তুল আমান টিনশেড মসজিদটিতে জায়গা সংকুলানে ঈদ গাঁ মাঠ এবং জানাজার নামাজ পড়াতে সমস্যা হয়। এতে স্থানীয় জামায়াতবাসী চলতি বছরের ৩ মে ঈদ-ঊল ফিতরের নামাজের সময় ঈদ গাঁ মাঠে পুরাতন মসজিদটি সরিয়ে ছাঁদ ঢালাই নতুন মসজিদ ভবন নির্মাণের আলোচনা করে ও সিদ্ধান্ত নেয়। সে অনুযায়ী নির্মাণ কমিটি গঠনপূর্বক একাধিকবার সভা করে অর্থ সংগ্রহ করা হয়।
মসজিদটির নির্মাণ কাজের শুরুর সিদ্ধান্তে বুধবার (২১ ডিসেম্বর) সকালে প্রাথমিকভাবে বেজ ঢালাইয়ের খাল খননসহ অন্যান্য কাজ করতে নির্মাণ শ্রমিকরা কাজ করতে থাকে। এ সময় পুরাতন মসজিদের জমি দাতা হামিদুল ইসলাম (৫৫), ফরিদুল ইসলাম (৩৩) ও জাহিদুল ইসলাম (৩০) কাজে বাঁধা দেন। এ সময় মসজিদ কমিটির সভাপতি অলিয়ার রহমান তাঁর ছেলে আবু আলম ও শাহালমসহ অন্যান্য মুসল্লিরা বাঁধার কারণ জানতে চাইলে উভয়ের মধ্যে কথা কাটাকাটি শুরু হয়।
এ সময় হামিদুল ইসলাম (৫৫) লোহার তৈরি লাঙল দিয়ে মসজিদ কমিটির সভাপতি অলিয়ার রহমানের মাথায় সজোরে আঘাত করেন। এ সময় অলিয়ারের ছেলে আবু আলম ও শাহালম এগিয়ে আসলে তাঁদেরকেও বেধড়ক মারপিট করে হামিদুল ও তাঁর ভাই ফরিদুল এবং জাহিদুল।
গুরুতর আহত অবস্থায় স্থানীয়রা অলিয়ার ও তাঁর ছেলে আবু আলমকে উদ্ধার করে পাটগ্রাম উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিলে জরুরী বিভাগের চিকিৎসক দ্রুত উন্নত চিকিৎসার জন্য তাঁদেরকে রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠান।
উফারমারা বায়তুল আমান জামে মসজিদ কমিটির সাধারণ সম্পাদক কাজী সাইফুল ইসলাম বলেন, মসজিদ পুনঃনির্মাণ ও সরিয়ে নেওয়ার আলোচনায় এবং সিদ্ধান্তে সকল জামায়াতবাসীর পাশাপাশি হামিদুল এবং তার ভাইয়েরা সম্মত ছিল। তাঁরা তিন ভাই টাকাও (অনুদান) দিয়েছে। কিন্তু হঠাৎ করে পুরাতন মসজিদটি সরানোয় বাঁধা দিয়ে সভাপতিকে মেরে এতে চিকিৎসাধীন অবস্থায় এক সপ্তাহ পর তার মৃত্যু হয়।
পাটগ্রাম থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) ওমর ফারুক বলেন, ‘এ ঘটনায় অলিয়ার রহমানের ছেলে শাহ আলম বাদী হয়ে ওই দিন থানায় ৯ জনের বিরুদ্ধে অভিযোগ দিলে অভিযুক্ত হামিদুল ইসলামের স্ত্রী আঞ্জু বেগমকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
news24bd.tv/রিমু
