করোনায় বন্ধ প্রতিষ্ঠান: দিশেহারা দুই শিক্ষক যে পথ বেছে নিলেন

করোনায় বন্ধ প্রতিষ্ঠান: দিশেহারা দুই শিক্ষক যে পথ বেছে নিলেন

আশিকুর রহমান শ্রাবণ

বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থাগুলোর গবেষণা বলছে, করোনায় ১শ জনের মধ্যে নতুন করে গরীব হয়েছেন অন্তত ২২ জন। আর আয় কমেছে শতকরা ৮৪ জনের। আয় কমে নতুন করে গরীব হওয়া মানুষগুলো, কোনো রকমে টিকে থাকার চেষ্টা করছেন।  

অনেককে মধ্যবিত্ত ফ্ল্যাট ছেড়ে, নিম্নবিত্তের বস্তিতে জায়গা নিতে হয়েছে।

অর্থনীতিবিদরা বলছেন, এই বিপুল সংখ্যক মানুষকে আগের অবস্থানে ফেরাতে নির্দিষ্ট পরিকল্পনা ও সামাজিক সুরক্ষার আওতা বাড়ানো প্রয়োজন।

সারোয়ার শরীফ, পেশায় নতুন চা-পানের দোকানী। ৪ মাস ধরে, শুরু করেছেন। বেশভুসায় এখনো পুরোপুরি চা দোকানী হয়ে উঠতে পারেননি।

কারণ, করোনার আগে তিনি শিক্ষক ছিলেন। ১২ বছরের অভিজ্ঞতা সম্পন্ন বেসরকারি স্কুলের গণিতের শিক্ষক।

সারোয়ার শরীফ জানান, ঘরে এক মাস বাজার ছিলোনা। লজ্জায় কারও কাছে যেতে পারিনি। অসহায় হয়ে এখন আমি চায়ের দোকান করি।

করোনার কারণে, স্কুলটি বন্ধ। মুখরিত ক্লাসরুমগুলো, এখন ধুলোমলিন, নিস্তব্ধ। টিকে থাকার জন্য, চালিয়ে নেয়ার দশা। শুধু এমন একটি নয়, সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানই বন্ধ। কিন্তু নন এমপিও বেসরকারি স্কুলগুলোর অবস্থা করুণ। কারণ, বেতনের টাকায় তাদের সব ব্যয় চলতো। তাই, তারাও এখন নতুন গরীবের তালিকার পথে।

পেশায় এই বাইক রাইডারও করোনার আগে, ছিলেন ইংরেজির শিক্ষক। কিন্তু করোনার ধাক্কায় তিনিও এখন নতুন গরীরের তালিকায়। পরিবার নিয়ে টিকে থাকার সংগ্রামে লড়ছেন নতুন পেশায়।

সোহেল রানা জানান, অনেকেই জিজ্ঞেস করেন আগে কি করতাম। তাদের কাছে লজ্জায় বলতেও পারি না নিজের আগের পেশার কথা।   করোনার দীর্ঘ মেয়াদী ধাক্কায়, এমন গল্প এখন অসংখ্য।


আরও পড়ুন: বাইডেনের প্রেম ও বেদনার কাহিনী


পিপিআরসির নির্বাহী চেয়ারম্যান ড. হোসেন জিল্লুর রহমান জানান, অনেক স্বাবলম্বী মানুষ এখন দারিদ্রের নিচে পড়ে গেছে। তাদের কে আমরা বলছি নতুন গরিব। এসব মানুষের সংখ্যা কম নয়। তাই এদের ব্যাপাবে ভাবতে হবে।

সিপিড’র সম্মানীয় ফেলো অর্থনীতিবিদ অধ্যাপক ড. মোস্তাফিজুর রহমান বলছেন, সরকারি বিভিন্ন বিনিয়োগ বাড়িয়ে ক্ষুদ্রঋণের মাধ্যমে তাদের কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করা যেতে পারে।

বিশ্লেষকরা বলছেন, করোনায় বাংলাদেশের তরুণদের মধ্যে বেকারত্বের হার দ্বিগুণ হয়েছে। মানুষকে নি:স্ব করে দেয়া এই সংকট মোকাবিলায়, তাই প্রয়োজন, স্থায়ী ও দীর্ঘমেয়াদী সমাধান।

news24bd.tv আহমেদ