বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক হয়ে রাজনীতি করেছি, বিজ্ঞান চর্চা করিনি

বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক হয়ে রাজনীতি করেছি, বিজ্ঞান চর্চা করিনি

Other

করোনা মহামারির এক বছর হলো। অথচ, আমরা আজও একটা ফ্রি, ইজি এক্সেসেবল, রেপিড টেস্টিং মেথোড ডিভেলপ করতে পারলাম না। কী দুঃখজনক! আমরা কী বুঝতে পারছি—কেন এই ভঙ্গুর দশা? যে দেশটার বয়স পঞ্চাশ বছর, সে দেশে পঞ্চাশ জন এক্সপার্ট বায়োকেমিস্ট, মাইক্রোবায়োলজিস্ট, হিউম্যান ভাইরোলজিস্ট কিংবা ইমিউনলজিস্ট নেই। দুনিয়ার চলমান গবেষণার সাথে তাল দিতে পারে এমন পঞ্চাশ জন গবেষক তৈরি করতে পারিনি কিন্তু দেশে শতাধিক পাবলিক-প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয় আছে, মেডিকেল কলেজ আছে।

 

আমরা ডাক্তার বানিয়েছি, গবেষক তৈরি করিনি। আমরা প্রফেসর পদ নিয়েছি, গবেষণা করিনি। আমরা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক হয়ে রাজনীতি করেছি, বিজ্ঞান চর্চা করিনি। দেশের বেতন খাড়া রেখে বিদেশে গিয়ে পিএইচডি ডিগ্রি নিয়ে দেশে ফিরে রাজনীতি করেছি কিন্তু গবেষক তৈরিতে মনোযোগ দেইনি।

একটা ডিগ্রি নিয়ে বছরের পর বছর গবেষণা থেকে দূরে থেকে নিউরণে ঝং ধরিয়েছি। সাইন্টিফিক কর্মকর্তার পদ দখল করে বছরের পর বছর গবেষণা ছাড়া কাটাচ্ছি! দেশের মানুষের টাকায় বেতন নিচ্ছি! 

অথচ কথা ছিলো, আজকে এই দুর্যোগে-দুর্দিনে জাতীয় পর্যায় থেকে ডাক আসবে। ন্যাশনাল টাস্কফোর্স হবে। দেশ থেকে পঞ্চাশজন জন লিডিং সাইন্টিস্ট নিয়ে একটা টিম হবে। সেখানে এক্সপার্ট ডাক্তার থাকবে, বায়োকেমিস্ট থাকবে। মাইক্রোবায়োলজিস্ট, ভাইরোলজিস্ট, প্যাথোলজিস্ট, ইমিউনলজিস্ট থাকবে। রাষ্ট্র তাদেরকে অর্থ দিবে। আর তারা জাতির এই দুর্যোগে অল্প সময়ের মধ্যে একটা টেস্টিং মেথোড উপহার দিবে—যেটার একিউরেসি, সেন্সিটিভিটি সবই ঠিক থাকবে। কিন্তু সেটা হয়নি! 

দেশের বহু মেধাবী লোক বিদেশে কাজ করছে। করোনা বিষয়ক গবেষণার সাথেও সম্পৃক্ত আছে। বিজ্ঞান কিংবা স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় থেকে সেসব মানুষদের সাথে যোগাযোগ করে তাদেরকে দূর থেকে সংযুক্ত-সম্পৃক্ত করা যেতো। —তেমনটা কী হয়েছে? 
এক বছর হলো, এখনো অক্সিজেনের অভাবে রাস্তায় রোগি মারা যাচ্ছে। গিনিস রেকর্ডের জন‍্য টাকা খরচ করা হলো। কিন্তু দেশের মানুষকে অক্সিজেন সরবরাহের জন‍্য জাতীয়ভাবে একটা কঠোর, কার্যকর পদক্ষেপ আজো হলো না।  
— আহা, জাতি হিসেবে আমরা কতোটা সৌভাগ‍্যবান!

রউফুল আলম, নিউজার্সি, যুক্তরাষ্ট্র।

news24bd.tv/আলী