১৯১০ সাল। পঁচিশ বছরের তরুণ, নীলস বোর প্রেমে পড়লেন। এদিকে তার পিএইচডির আর এক বছর বাকী। নীলস বোর তখনো তেমন পরিচিত না।
নিজের গণ্ডির মধ্যেই তার জীবন। ইংল্যান্ডের ম্যানচেস্টার ইউনিভার্সিটি তখন হয়ে উঠেছে পৃথিবীর খ্যাতনামা তরুণদের মিলনমেলা। ম্যানচেস্টার তখন ফিজিক্স গবেষণার এক শ্রেষ্ঠতম উপাসনালয়! পিএইচডি শেষে, বোর সেখানে যাওয়ার কথাই ভাবছেন।১৯১১ সালের সামারে, বোর আসলেন কেমব্রিজ ইউনিভার্সিটির ক্যাভেন্ডিস ল্যাবরেটরিতে।
থমসনের সাথে দেখা করে বোর ততটা পছন্দ করলেন না। বোর চলে এলেন ম্যানচেস্টারে, রাদার্ফোডের সাথে দেখা করতে। রাদার্ফোডকে তার ভালো লাগলো এবং সিদ্ধান্ত নিলেন কিছুদিন পোস্টডক করবেন। রাদার্ফোড তখন পরমাণুর মডেল দিয়ে খ্যাত। চারদিকে হৈ-চৈ ফেলে দিয়েছেন। কিন্তু নীলস বোর, রাদাফোর্ডের মডেল পছন্দ করলেন না। রাদার্ফোডের সাথে আলোচনা করলেন। রাদার্ফাড দেখলেন, এই ছেলে কোন যেনোতেনো ছাত্র নয়। বোর একবছরেরও কম সময় কাজ করে, রাদার্ফোডের ল্যাব ছেড়ে চলে গেলেন। বিয়ে করলেন। হানিমুন করলেন। তারপর ফিরে পরমাণুর নতুন মডেল প্রস্তাব করলেন। রাদার্ফোড এবং ম্যাক্স প্ল্যাংকের থিউরির ফিউশন করলেন। সেই মডেল, রাদার্ফোডের মডেলের চেয়ে অনেক বেশি গ্রহণযোগ্যতা পেলো। নাম হয়ে গেলো—বোর মডেল! বিজ্ঞানে শুরু হয়েছিলো এক নতুন যুগ—কোয়ান্টাম মেকানিক্স!
অন্যদিকে, রাদার্ফোডের আরেক ব্রিলিয়ান্ট স্টুডেন্ট জেমস চ্যাডউক আবিষ্কার করলেন নিউট্রন। পরমাণু পেলো এক পূর্ণতা!
বিজ্ঞানের দুনিয়ায় দুইটা জগৎ—অতিক্ষুদ্র ও অতিকায়বৃহৎ। পারমাণবিক জগৎ ও মহাবিশ্ব! এই দুইয়ের মধ্যই সকল অস্তিত্ব! আর এই দুই জগতে শেষ বলে কিছু নেই। এই দুই জগতে ডুবলে মানুষের ভাবনা কোথাও না কোথাও ফ্রিজ হয়ে যায়। কিন্তু মানুষ থামে না। মানুষের ভাবনার সৌন্দর্য এখানেই—সেটা থামে না। সেটার কোন সীমা নেই! পারমাণবিক জগৎ ও মহাবিশ্বের মতোই মানুষের ভাবনার জগৎ অতল, অসীম! সেই ভাবনার জগতে ডুবলেই, সেখানের সৌন্দর্য অবলোকন করা যায়!
রউফুল আলম, নিউজার্সি, যুক্তরাষ্ট্র।
news24bd.tv/আলী