বাঁশের বিস্কুট আর বাঁশের ফুলের চাল তৈরি করে সকলকে চমকে দেয়ার পর উত্তর-পূর্ব ভারতের ত্রিপুরা রাজ্য এবার তাদের নতুন চমক ‘বাঁশপাতার চা’ নিয়ে হাজির হয়েছে! এ নিয়ে ইতোমধ্যে বেশ কৌতূহল তৈরি হয়েছে। এই চা বিদেশে রফতানির উদ্যোগও নেয়া হয়েছে।
এই উদ্ভাবনের কৃতিত্বের মূল দাবিদার সমীর জামাতিয়া। ব্যাম্বু সোসাইটি অব ইন্ডিয়ার সঙ্গে যুক্ত রয়েছেন তিনি।
বিশ্বের নানা দেশে ঘোরার অভিজ্ঞতা রয়েছে তার। যার মধ্যে অন্যতম চীন। ২০০৮ সালে বাঁশজাত পণ্যের ওপর ডিপ্লোমা অর্জনের জন্য চীনে গিয়ে ‘বাঁশের পাতার চা’র প্রতি আকৃষ্ট হন তিনি।পৃথিবীর বিভিন্ন দেশে কী কী ধরনের বাঁশের কাজ হয়, সেই সম্পর্কে খুব ভালো ধারণা আছে সমীরের।
ইতিপূর্বে জামাতিয়া ন্যাশনাল ব্যাম্বু মিশন এবং ব্যাম্বু সোসাইটি অফ ইন্ডিয়ার সঙ্গে কাজ করেছেন। বর্তমানে চীন, জাপান, ভিয়েতনাম, কম্বোডিয়া ও ভারতে বাঁশচালের মতো একাধিক বাঁশজাত উদ্ভাবনী পণ্যের সঙ্গে যুক্ত আছেন তিনি।
এই চায়ের জন্য প্রয়োজন তিন চার মাস বয়সী শুকনো কচি পাতা। এগুলি বিভিন্ন আকারে কাটা যায় বা মাইক্রো বল তৈরি করতে হাতে রোল করা হয়, অথবা ধূলোর মতোও করা যায়।
বিশেষজ্ঞদের দাবি এটি সম্পূর্ণ ভেষজ এবং মোটা হওয়ার সমস্যা দূরীকরণ, অ্যালঝাইমারস প্রতিরোধ করা, ডিটক্সিফিকেশনে সহায়তাসহ আরও অনেক ক্ষেত্রে উপকারী। বাঁশপাতা অ্যান্টিঅক্সিডেন্টের উৎস এবং প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধিতে সহায়ক, বাঁশের পাতা থেকে তৈরি ‘চা’-এ প্রচুর পরিমাণে অ্য়ান্টিঅক্সিড্যান্ট এবং অ্যান্টিবায়োটিক গুণ থাকে। এই পাতায় মজুত সিলিকন চুল, ত্বক ও নখ সুস্থ রাখে। হাড় ও দাঁতের গঠনও মজবুত করে।
ত্রিপুরায় প্রায় একুশ রকমের বাঁশ উৎপন্ন হয়। এর সবক’টি থেকেই ‘চা’ তৈরি করা যায়। প্রজাতি ভেদে এদের স্বাদ ও গন্ধও ভিন্ন হয়। ৪-৫ মিনিট সিদ্ধ করে বাঁশপাতার লিকার চা বানানো যায়। স্বাদ বাড়াতে এর মধ্যে লেবু, চিনি ইত্যাদি মেশানো যেতে পারে।
এই চা ভারতীয় মুদ্রায় ১২০ টাকা কেজি হিসেবে বিক্রি হচ্ছে। এ চায়ের সঙ্গে আদার নির্যাস অথবা লেমনগ্রাস মিশিয়ে এর মান আরও উন্নত করার কথা ভাবা হচ্ছে বলে জানা যায়।
news24bd.tv / কামরুল