জানিনা সামনে কি সময় আসছে

জানিনা সামনে কি সময় আসছে

Other

জানিনা সামনে কি সময় আসছে। গত দুইদিন ধরে বেশ কিছু রোগী রেফার্ড হচ্ছে আমার কাছে। এরা হাসপাতালে ভর্তি রোগী। কোভিড পজিটিভ।

কেউ কেউ সাস্পেক্টেড কোভিড৷ কেউ কেউ আই সি ইউতে আছেন৷ 

 এদের প্লেইটলেট অনেক কম। পঞ্চাশ হাজারের আশেপাশে।   সেকারণেই আমার কাছে রেফার করছে মতামতের জন্য। আমি জ্বরের ইতিহাস অনুযায়ী এন্টিজেন এবং এন্টিবডি পরীক্ষা করে পেলাম এদের ডেংগি হয়েছে।

 

হাসপাতালে ভর্তি হয়ে এরা এর মধ্যেই দুই চারদিন রেমডিসিভির ইঞ্জেকশন, চামড়ার নিচে ব্লাড থিনার ইঞ্জেকশন সহ নানারকম ফর্দ করা ইঞ্জেকশন ও ওষুধ নিয়ে ফেলেছে। একজনের  এই ফাঁকে রক্তক্ষরণও শুরু হয়েছে৷ 

একটু চিন্তিত বৈকি। জাহিদুর রহমান  ভাই এবং Maliha কে ফোন দিলাম কোনভাবে কি ডেংগি পেশেন্টের শরীরে ডেংগি ভাইরাস থাকবার কারণে করোনা পরীক্ষা ফলস পজিটিভ আসতে পারে? দুজনই মত দিলেন 'না, পারেনা'। (ফলস পজিটিভ এমনিতেই নানা কারণে আসতে পারে। সে প্রসংগ আলাদা। )  
তার মানে এই রোগীদের দুটোই হয়েছে।   কোভিড ১৯ এবং ডেংগি।  

আসলে না হবার তো কারণ নেই। বাংলাদেশ, বিশেষ করে ঢাকা ডেংগির এন্ডেমিক জোন। এটা দূর হবেনা, থেকে যাবে। ইতিহাস তো এটাই বলে। যেখানে ডেংগি ঢুকেছে আর বের হয়নি। ফিরে ফিরে এসেছে। হয়ত দুই এক বছর প্রকোপ কম ছিলো।
 
গতবছর মশক নিধনের উদ্যোগ নেওয়া হয়নি। স্থবির জনজীবনের কারণে ডেংগিবাহী মশা বংশ বিস্তারের মওকা পেয়েছে৷ মানুষ বাড়িতে থাকে। দিনের বেলায় কাজ নেই, শুয়ে,বসে,ঘুমিয়ে কাটাচ্ছে৷  হাসপাতাল রোগীতে ভর্তি। এক রোগী থেকে আরেক রোগীতে ছড়ানোও বেশ সহজ। ডেংগির প্রকোপ বাড়ার বিস্তর কারণ বিদ্যমান।  

সমস্যা আরো। দেখা গেল রোগী এসেছে জ্বর নিয়ে।   সবার নজর কোভিডে। কোভিড পরীক্ষা হলো।   পরীক্ষায় দেখা গেল পজিটিভ। ব্যাস,  রোগ তো পেয়ে গেলাম। দশ-বারোটি ওষুধ ছড়ড়া গুলির মত চালু হয়ে গেল। চামড়ার নিচে ব্লাড থিনার। এদিকে কোন ফাঁকে প্লেইটলেট কমে, উপরি হিসেবে ব্লাড থিনার পেয়ে শুরু হলো রক্তক্ষরণ। পরশু একটা রোগীকে এভাবে হারালাম।  

অর্থাৎ কোভিডের সাথে যে ডেংগি কো-ইনফেকশন হিসেবে আসছে,  আসতে পারে এবং আসতেই পারে এটাই মাথায় রাখতে হচ্ছে এখন।
হাসপাতালে করোনা রোগীরা আছে। হাজার হাজার টাকার এন্টিভাইরাল দিচ্ছেন। লাখ টাকার টসিলিজুম্যাব। সাথে দুইশ টাকার একটা মশারিও দেন।  
বাড়িতেও মশারি খাটান।   এটুকুই বলার ছিলো।

(মত-ভিন্নমত বিভাগের লেখার আইনগত ও অন্যান্য দায় লেখকের নিজস্ব। এই বিভাগের কোনো লেখা সম্পাদকীয় নীতির প্রতিফলন নয়। )

ডা. গুলজার হোসেন, রক্তরোগ ও রক্তক্যান্সার বিশেষজ্ঞ|

news24bd.tv/আলী