নগরকে যাদের দেখার কথা, তারা বোধ হয় বিশ্ব দেখতেই ব্যস্ত

হামিদ কাইসার

নগরকে যাদের দেখার কথা, তারা বোধ হয় বিশ্ব দেখতেই ব্যস্ত

হামিদ কাইসার

পাসপোর্ট অফিসে গিয়েছিলাম অন্তত চার ঘণ্টা থাকার প্রস্তুতি নিয়ে। নিকট অতীতের অভিজ্ঞতা থেকে। কিন্তু শুরুতেই যখন শুনলাম পাসপোর্ট রেডি হয়নি, তখন দেড় দু-ঘণ্টা পেরিয়ে গেছে। ধাক্কাটা সামলে নিয়ে ভাবলাম, কখনো তো শেরে বাংলা নগরের ভেতরটা ঘুরে ঘুরে দেখা হয়নি।

আজ এই অবসরে একটু হেঁটে নেব কি না। যেই ভাবা সেই কাজ। ভেতরে রাস্তার পর রাস্তা হাঁটতে হাঁটতে মন ভালো হয়ে গেল। যেমন চওড়া সব রাস্তা, ফুটপাতও তেমন বিস্তৃত পরিসরের।

আর বাংলাদেশের অন্যান্য অঞ্চলের মতো ভাঙাচুরা নেই। গুরুত্বপূর্ণ সব একেকটা অফিস।

রাস্তার পর রাস্তা হাঁটতে হাঁটতে হঠাৎ দূর থেকে চোখে পড়ল রক্তলাল এক ভবন। সাদা, অফ হোয়াইট এমন সব রংয়ের ভবনের মাঝে হঠাৎ লাল দেখে স্বভাবতই কৌতূহলী হলাম। লাল কেন? কাছে যেতে যেতে নজরে এলো চারদিক থেকে পুরো গোলাকৃতি। তারপর যখন আরো কাছে গেলাম, সামনের চৌকোনা বাক্সের মতো আকৃতিটা দেখেই মুখ দিয়ে অজান্তেই বেরিয়ে এলো, আরে, এটা তো চিঠির বাক্স! হ্যাঁ, নিচে এক সাইডে বড় করে লেখা, ‘ডাক ভবন’। ডাক ভবনের স্থাপত্য নকশা করেছেন স্থপতি কৌশিক বিশ্বাস।

আমাদের আর্কিটেক্টগণ সত্যিই ভালো কাজ করছেন। গুলশান, বনানি, বারিধারা, বসুন্ধরা আবাসিক এলাকা থেকে শুরু করে ধানমণ্ডি, মিরপুর তো বটেই দেশের এদিকে সেদিকে অভিনব এবং নতুন সব আইডিয়ার নয়নাভিরাম ভবন চোখে পড়ে। আমাদের গাজীপুরের নরসিংহপুর থেকে কাশিমপুরের রাস্তায় বাগবাড়ি নামের এক জায়গায় আরবি আল্লাহু শব্দটিকে অনুসরণ করে মসজিদ বানানো হয়েছে! আমি মনে মনে আকিটেক্টগণের প্রতি কৃতজ্ঞতা অনুভব করি।

তবে একটা কথা কি, যত্ন এবং পরিচর্যার জায়গা থেকে আমরা পুরোপুরি ব্যর্থ। শেরে বাংলা নগরের এত বড় চওড়া রাস্তা, এত বড় পরিসরের ফুটপাত, এত নব নব ডিজাইনের ভবন, হলে কী হবে, ঠিকমতো পরিষ্কার হয় না বললেই চলে। ধুলোবালি আবর্জনা লেগে আছে জায়গায় জায়গায়। আমাদের নগরকে যাদের দেখার কথা, তারা বোধ হয় বিশ্ব দেখতেই ব্যস্ত থাকেন বেশি, দেশে থাকলেও তাদেরকে চ্যানেলে চ্যানেলে গিয়ে বলতে শোনা যায়, আমি বড় প্রচারবিমূখ। তাই অতো সময় কোথায়? আর, পরিচ্ছন্নকর্মীরা তো ব্যস্ত সবাই যখন ঘর থেকে বেরিয়ে আসে পথে, সে সময় রাস্তায় ধুলোর উৎসব জুড়ে দিয়ে সুস্থ মানুষকে হাসপাতালে পাঠানোর বন্দোবস্ত করতে। নইলে এতো এতো যে হাসপাতাল নির্মাণ হচ্ছে, সেসব চলবে কী করে!

লেখাটি হামিদ কাইসার-এর ফেসবুক ওয়াল থেকে নেওয়া।  (সোশ্যাল মিডিয়া বিভাগের লেখার আইনগত ও অন্যান্য দায় লেখকের নিজস্ব। এই বিভাগের কোনো লেখা সম্পাদকীয় নীতির প্রতিফলন নয়। )

আরও পড়ুন


এখানেই সাকিবের সত্য কথার বিপদ!

news24bd.tv এসএম