সেক্স ট্যুরিজমে এগিয়ে যেসব দেশ

পর্যটক টানতে সেক্স ট্যুরিজমকে হাতিয়ার করেছে অনেক দেশ

সেক্স ট্যুরিজমে এগিয়ে যেসব দেশ

নিউজ টোয়েন্টিফোর ডেস্ক

ট্যুরিজম ব্যবসা বিশ্বের অনেক দেশের অর্থনীতির মূল ভিত্তি। আর এই ব্যবসাকে আরও এগিয়ে নিতে নিত্য যোগ হয় নতুন নতুন সেবা। পর্যটক টানতে কোন দেশ সাগরের নিচে হোটেল বানাচ্ছে, কোন দেশ যৌনতাকে পুঁজি করে পর্যটন শিল্পকে ফুলিয়ে ফাঁপিয়ে তুলছে। তবে বিশ্বের অনেক দেশ এখন সৃষ্টির আদিম নেশা 'যৌনতার' ওপর ভর তাদের পর্যটন শিল্পকে বাড়াতে তৎপর হয়েছে।

যেটাকে একটি নামও দেওয়া হয়েছে, 'সেক্স ট্যুরিজম'। পর্যটকরা যৌনতার ক্ষুধা মেটাতে ছুটে যাচ্ছেন এসব দেশে। নারী সান্নিধ্যের আশায় পাড়ি জমাচ্ছেন দেশ থেকে দেশে। বিভিন্ন দেশ থেকে যৌনকর্মীরাও রোজগারের আশায় ছুটছেন ওইসব দেশে।
আর সেক্স ট্যুরিজমের মানচিত্রে নিত্যনতুন যুক্ত হচ্ছে নতুন নতুন দেশ।

জেনে নিন সেক্স ট্যুরিজমে জনপ্রিয়তার নিরিখে তালিকার প্রথম দিকে থাকা কয়েকটি দেশ ও স্থানের নাম।

news24bd.tv

১) থাইল্যান্ড: সেক্স ট্যুরিজমে বিশ্বের মধ্যে অন্যতম জনপ্রিয় একটি নাম থাইল্যান্ড। পর্যটকদের মনোরঞ্জনে বিশ্বের অন্যান্য দেশ থেকে যৌনকর্মীরা এসে ভিড় করে এখানে। দেশটির একাধিক স্থানে গড়ে উঠেছে যৌনতাকেন্দ্রীক পর্যটন শহর। দিনের বেলা সেসব জায়গা যতটা নিরব, রাত নামতেই ঠিক ততটাই সরব। লাল-নীল আলোয় রাতভর যেন ভিন্ন এক পরিবেশ। অসংখ্যা ম্যাসেজ পার্লার, স্পা ও নাইটক্লাবের ছদ্মবেশে চলে অবাধ যৌনতা।  দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর থেকে অর্থনীতিকে মজবুত করতে সেক্স ট্যুরিজমকেই হাতিয়ার হিসেবে বেঁছে নেয় দেশটি। তাই দেশটি বিশ্বের নানা দেশের পর্যটককে সহজেই আকৃষ্ট করছে। তবে সেখানকার যৌনকর্মীরা এশিয়ানদের একটু কমই পছন্দ করে। তাদের ধারণা, এশিয়ানদের পকেটে অর্থ একটু কমই থাকে। তাই এড়িয়ে যেতে চায়। অন্যদিকে পশ্চিমা বিশ্বের পর্যটক পেলে নানাভাবে দৃষ্টি আকর্ষণের চেষ্টা করে।

২) রাশিয়া: গত এক দশকে রাশিয়ায় দেহ ব্যবসার রমরমা শুরু হয়েছে। মূলত উত্তর আমেরিকা ও ইউরোপের অন্যান্য দেশের পর্যটকরাই এখানে যৌনতার টানে ছুটে আসেন। তবে রুশ যৌন বাজারে দালালদের দাপট বেশি। তাই, দালাল থেকে সাবধান থাকাটা খুব দরকার৷

৩) আর্জেন্টিনা: পর্যটন শিল্পের বিকাশ ঘটিয়ে অর্থনীতি চাঙ্গা করতে নানা উদ্যোগ নিয়েছে দেশটি। ১৮৮৭ সাল থেকে এদেশে বৈধতা পেয়েছে সমকামিতা। এই কারণে আর্জেন্টিনায় সমকামী দেহ ব্যবসায়ীর চাহিদা তুঙ্গে। সরকারের পক্ষ থেকেও সমকামী পর্যটকদের আকর্ষণ করতে নানা উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। যৌন পর্যটনের হাত ধরেই অর্থনীতি চাঙ্গা করতে চাইছে ম্যারাডোনা-মেসির দেশ।

৪) বুলগেরিয়া: যৌন পর্যটনের পীঠস্থান সানি বিচ রিসোর্ট ঘিরে তৈরি হয়েছে বাস্তব ও কল্পনার অভাবনীয় মিশেল। শোনা যায়, এই সৈকতে প্রতিদিন কয়েক হাজার দেহ ব্যবসায়ী ভিড় জমান। তাঁদের অনেকেই আসেন প্রতিবেশী দেশ থেকে। অনেকটা খুল্লাম খুল্লা এই সানি বিচ। কে কী পরে ঘুরলো, আর কে কিছু পরলো না তা নিয়ে মাথা ঘামায় না কেউ। এই বিচ রিসোর্টটি বিভিন্ন পানির খেলা এবং যৌনতায় ভরা রাতের পরিবেশের জন্য বিখ্যাত। বিশ্বের বিভিন্ন দেশ থেকে পর্যটকরা বুলগেরিয়ায় ছুটে যান সানি বিচ রিসোর্টকে উদ্দেশ্য করে।

৫) দক্ষিণ কোরিয়া: এদেশে যৌনতা নিয়ে শুচিবায়ু নেই। ক্ষণিকের শয্যাসঙ্গী জোগাড় করতে বিশেষ পরিশ্রম করতে হয় না। গুরুত্বপূর্ণ শহরগুলিতে রয়েছে একাধিক এসকর্ট সার্ভিসের ব্যবস্থা। হোটেলে কয়েক ঘণ্টার জন্য ঘর ভাড়াও মেলে সুলভে। সস্তায় যৌনসঙ্গী মিলে যাওয়ায় ভ্রমণের জন্য অনেকেরই পছন্দ দেশটি।

৬) নেপাল: বিশ্বের আরেকটি পর্যটননির্ভর দেশ হিমালয়কন্যা নেপাল। প্রতি বছর লাখো পর্যটক দেশটিতে ছুটে যান প্রাকৃতিক নৈস্বর্গের পরশ পেতে। এরমধ্যে একটি অংশ সেখানে যান যৌনতার টানে। দেশটির রাজধানী কাঠমান্ডু এবং পোখরা ও তরাইয়ের শহরাঞ্চলে দেহ ব্যবসা রমরমা। বাণিজ্য জমে ওঠে হোটেলের দামি ঘর থেকে শুরু করে নিষিদ্ধপল্লির অন্ধকার আস্তানায়। কাঠমান্ডুর থামেলে ব্যাঙের ছাতার মতো গজিয়ে উঠেছে ম্যাসাজ পার্লার, যেখানে অবৈধ দেহ ব্যবসার পসার সাজানো। এছাড়া বিভিন্ন রেস্তোরাঁর কেবিন ও ডান্স বারগুলিতেও দেহজ বিনোদনের ছড়াছড়ি।

৭) কম্বোডিয়া: সেক্স ট্যুরিজমের জন্য বিখ্যাত আরেকটি দেশ কম্বোডিয়া। বিশ্বের অন্যতম বড় যৌন ব্যবসা চালায় এই দেশটি, তবে তার বেশির ভাগই অবৈধ। আইনের ফাঁক গলে অবাধ যৌনতার হাতছানিতে সাড়া দিতে প্রতি বছর দেশটিতে ছুটে আসেন বিশ্বের কামতাড়িত লাখো মানুষ।

৮) প্রাহা: স্লোভাকিয়ার প্রাহা শহর ১৯৮৯ সাল থেকে ইউরোপের যৌনতার রাজধানী তকমা পেয়েছে। অসংখ্য জেন্টলম্যানস ক্লাব অথবা রিল্যাক্সেশন ক্লাবে অল্প খরচে শরীরী বিনোদনের সম্ভার মেলে।

৯) কলম্বিয়া: দরিদ্র দেশ হওয়ায় অনেকটা সস্তায় যৌনসঙ্গী মিলে যায় দেশটিতে। অন্যান্য দেশের তুলনায় সস্তা বলে যৌন পর্যটনস্থল হিসেবে বেশ জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে দেশটি। দরিদ্র দেশে এসে নামমাত্র খরচে দেদার ফূর্তি লুটতে প্রতি বছর পাড়ি জমান ইউরোপ ও আমেরিকার পর্যটকরা।

১০) কিউবা: নিসর্গ, সংস্কৃতি ও চুরুটের স্বর্গরাজ্য খ্যাত দ্বীপরাষ্ট্র কিউবায় প্রতি বছর পাড়ি জমান অজস্র পর্যটক। তবে এদের বড় একটি অংশ আসেন যৌনতার আকর্ষণে। শুধু প্রাপ্তবয়স্ক নয়, নাবালক যৌনসঙ্গীও সুলভে মেলে এই দেশে।

১১) জামাইকা: শুধুমাত্র দেশের দেহ ব্যবসায়ীরাই নন, ভ্রমণরত বহু নারী পর্যটকও এদেশে শরীর বিকোতে দ্বিধাবোধ করেন না। অনেক নারী পর্যটক ভিসা নিয়ে এই দেশে আসেই ঘুরে বেড়ানোর পাশাপাশি কিছু রোজগার করে দেশে ফিরতে।

১২) কেনিয়া: আফ্রিকার এই দেশে যৌন ব্যবসার নানা রূপ। স্ট্রিপ ডান্স বার থেকে শুরু করে বিভিন্ন রিসোর্ট ও স্পা-তে সুলভে দৈহিক চাহিদা পূরণের ব্যবস্থা রয়েছে । এমনকি ছুটি কাটাতে এসে টানা কয়েক দিনের জন্যও সঙ্গী মেলে কেনিয়ায়। তাকে নিয়ে স্ত্রীর মতো একসঙ্গে থাকা, ঘুরে বেড়ানো সবই করতে পারবেন, শুধু ফেরার সময় চুক্তি অনুযায়ী টাকা দিয়ে আসবেন।

১৩) ম্যাকাউ: চিনের যৌন ব্যবসা বৃদ্ধির পিছনে নানা কারণ রয়েছে। প্রতি বছর লক্ষ লক্ষ মানুষ এখানে যৌন তৃপ্তির খোঁজে ভিড় জমান। দেশটিতে বিভিন্ন গ্যাজেট, ইলেক্ট্রনিক্স সামগ্রি যেমন সস্তায় পাওয়া যায়, যৌনসঙ্গীর ক্ষেত্রেও ব্যতিক্রম নয়। পৃথিবীর খুব কম দেশেই এমন সস্তায় যৌনসঙ্গী মেলে।

১৪) লাটভিয়া: পূর্ব ইউরোপের এই দেশে যৌনতার আধিক্য বছরভর পর্যটক সমাগমের অন্যতম কারণ। এছাড়া এদেশে মদের দামও বেশ সস্তা। ছুটিতে অঢেল ফূর্তি করতে এই কারণেই লাটভিয়াকে ইদানীং পাখির চোখ করেছে ইউরোপ।

১৫) ভেনেজুয়েলা: ভেনেজুয়েলার মার্গারিটা দ্বীপে অসংখ্য রিসর্টে যৌনতার অবাধ আয়োজন। এদেশে যৌন ব্যবসা বৈধ। পর্যটন-ক্লান্ত পুরুষদের অভ্যর্থনা জানাতে হোটেলের লবিতে নগ্ন সুন্দরীদের সারিবদ্ধ উপস্থিতি রেওয়াজ হয়ে দাঁড়িয়েছে। চব্বিশ ঘণ্টা হিসেবে এখানে যৌনকর্মীদের ভাড়া করার ব্যবস্থা রয়েছে। তবে কামতাড়িতা মধ্যবয়সীনিদের জন্য তরতাজা তরুণও এখানে সহজলভ্য।

১৬) আমস্টারডাম: কথিত আছে, নেদারল্যান্ডের এই শহরেই বিশ্বের সেরা সুন্দরী দেহ ব্যবসায়ীদের দেখা মেলে। এখানে যৌন ব্যবসা সম্পূর্ণ বৈধ ও সরকার নিয়ন্ত্রিত বলে অত্যন্ত নিরাপদ। এখানকার যৌন ব্যবসার খ্যাতি সারা বছর কয়েক কোটি পর্যটককে আকর্ষণ করে।

১৭) লাস ভেগাস: আমেরিকার এই শহর সব পেয়েছির ঠিকানা। শহরে যৌনতার রমরমা সম্পর্কে ইঙ্গিত করতে বলা হয়, হোয়াট হেপেনস্ ইন ভোস, রিমেইনস ইন ভেগাস। এখানে যৌনতা শুধু ব্যবসা অথবা বিনোদন নয়, শরীরী ভাষা উদযাপনেরও মাধ্যম। মরুভূমি অধ্যূষিত নিসর্গে অচেনা সঙ্গীর দেহজ সান্নিধ্য বেঁচে থাকার ক্ষণিক রসদ জোগায় বই কি!

১৮) গ্রিস: ব্যবসায়িক যৌনতা বৈধ গ্রিসে। প্রতি ২ সপ্তাহ অন্তর অন্তর চিকিতৎসকরা দেহপসারীনিদের বিনামূল্যে পরীক্ষা করেন। তবে এখানে বহু মহিলাই বিশ্বের নানা প্রান্ত থেকে পাচার হয়ে আসেন। গ্রিসের দেহ-দাস প্রথার বিরুদ্ধে আন্দোলনে সামিল হয়েছেন মানবাধিকার কর্মীরা।

১৯) তেল আভিভ: গোটা ইজরায়েলের মতোই এই শহরেও যৌনতা নিয়ে কোনও লুকোছাপা নেই। বিশ্বের যৌন পর্যটনের তালিকায় অবশ্য সদ্য নাম তুলেছে তেল আভিভ।

২০) বাহারিন: তথাকথিত রক্ষণশীল এই দেশটিতে ইদানীং দেহ ব্যবসা বেশ রমরমা। খরচও পড়ে ইউরোপের তুলনায় অনেক কম।

২১) জাপান: বিশ্বের যৌন পর্যটন মানচিত্রে জাপানি সেক্স ট্যুরের চাহিদা এখন প্রবল। বিভিন্ন বাজেটের যৌন পর্যটনের ব্যবস্থা রয়েছে এদেশে।

২২) ব্রাজিল: শুধুমাত্র ফুটবল বা কফি নয়, লাতিনীয় সুন্দরীদের দেহের ভাঁজে কুপোকাত গোটা দুনিয়া। এই বিষয়টি মাথায় রেখেই যৌন পর্যটনের অন্যতম সেরা ঠিকানা হিসেবে গত এক দশকে জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে ব্রাজিল। দেহ-বিলাসের বিবিধ উপকরণে ঠাসা দেশটি।

২৩) কোস্টারিকা: আকর্ষণীয় দৈহিক গড়নের কারণে যৌনতায় কোস্টারিকার নারীরা বিশ্বের বিভিন্ন দেশের পর্যটকদের পছন্দের শীর্ষে। আর এ সুযোগ নিয়ে দেহ ব্যবসার হাত ধরে দেদারছে ডলার কামাচ্ছে দেশটি।

২৪) কানাডা: যৌনতার বাজারে সবে নাম লিখিয়েছে কানাডা। আমেরিকানরাই এখানকার দেহ ব্যবসায়ীদের প্রধান খদ্দের। যৌনতা সম্পর্কে এখানকার ঢিলেঢালা আইন প্রতি বছর কাতারে কাতারে পর্যটককে আকর্ষণ করছে কানাডার নানা প্রান্তে।

২৫. ইন্দোনেশিয়া: ইন্দোনেশিয়ায় দেহ ব্যবসা শুধু আইনত স্বীকৃত-ই নয়; সেক্স ট্যুরিজম সে দেশের সরকারের অন্যতম রাজস্ব আয়ের উপায়। তবে অবাধ যৌনতার জেরে ইন্দোনেশিয়ায় জোর করে দেহ ব্যবসায় নামানো বা নাবালিকা অত্যাচার ক্রমেই বাড়ছে। বিষয়টি সে দেশের সরকারকেও ভাবিয়ে তুলেছে।

২৬. নেদারল্যান্ডস: দেহ ব্যবসা নেদারল্যান্ডসে খুবই জনপ্রিয়। যৌনতা নিয়ে নেদারল্যান্ডসে কোনও সামাজিক বাধা নেই, নেই আইনগত বাধাও। অবাধ যৌনতাই সে দেশের ট্র্যাডিশন। আর এমন খুল্লামখুল্লা পরিবেশের টানে অনেক পর্যটকই ছুটে যান দেশটিতে।

সম্পর্কিত খবর