গাজায় ধ্বংসযজ্ঞ চালাতে ইসরায়েলকে গোপনে সমরাস্ত্র দিচ্ছে যুক্তরাষ্ট্র

ইসরায়েলি হামলায় বিধ্বস্ত গাজা নগরী।

গাজায় ধ্বংসযজ্ঞ চালাতে ইসরায়েলকে গোপনে সমরাস্ত্র দিচ্ছে যুক্তরাষ্ট্র

অনলাইন ডেস্ক

ইসরায়েল-ফিলিস্তিনের কয়েক দশকের দ্বন্দ্বকে অধিক রক্তক্ষয়ী নৃশংসতায় পরিণত করতে এগিয়ে এসেছে বিশ্ববাসীকে মানবতা, গণতন্ত্র ও সুশাসনের সবক দেয়া মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র। কিছুদিন আগে ইসরায়েলি হামলায় রাফায় বেসামরিক নাগরিক হতাহতের ঘটনায় উদ্বেগ জানালেও উল্টো এখন ইসরায়েলের জন্য সমরাস্ত্র সহায়তা প্রদানের অনুমোদন দিয়েছে বাইডেনের প্রশাসন।

শুক্রবার (২৯ মার্চ) ইসরায়েলকে এই কয়েক বিলিয়ন ডলার মূল্যের অত্যাধুনিক সামরিক সরঞ্জাম, বোমা ও যুদ্ধবিমান প্রদানের অনুমোদন দেওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছে ব্রিটিশ প্রভাবশালী গণমাধ্যম দ্য গার্ডিয়ান। সূত্র জানিয়েছে, ইসরায়েলকে দেওয়া এই সামরিক সহায়তায় রয়েছে প্রতিটি ২ হাজার পাউন্ড ওজনের ১,৮০০টি এমকে-৮৪ এবং ৫০০ পাউন্ড ওজনের ৫০০টি এমকে-৮২ বোমা।

এসব বোমা পাহাড়ের গুহা, সুউচ্চ ভবন, মাটির নিচের টানেলসহ সবকিছু গুঁড়িয়ে দিয়ে ভয়াবহ ধ্বংসযজ্ঞ চালাতে সক্ষম। এছাড়া রয়েছে অত্যাধুনিক যুদ্ধবিমানসহ অনেক কিছুই।

উল্লেখ্য, ওয়াশিংটন তাদের দীর্ঘদিনের মিত্র ইসরায়েলকে বছরে ৩৮০ কোটি ডলারের নিয়মিত সামরিক সহায়তা দেয়। তবে শুক্রবার ঘোষিত প্যাকেজ নিয়মিত সামরিক সহায়তার বাইরে অতিরিক্ত বলে সূত্র জানিয়েছে।

এদিকে, এমন ন্যাক্কারজনক ঘটনায় বিশ্বের মানবতাবাদী বিভিন্ন সংগঠন, জাতিসংঘ, শান্তিতে নোবেল বিজয়ী ব্যক্তিদের আন্তর্জাতিক ফোরাম, মানবাধিকার সংস্থাসহ কোনো মানবিক সংগঠন এখন পর্যন্ত বিবৃতি দেয়নি, উদ্বেগ জানায়নি এবং মার্কিন প্রশাসনের বিরুদ্ধে নিজেদের অবস্থান ব্যক্ত করেনি। বিভিন্ন দেশের গণতন্ত্র, মানবাধিকার ও সুশাসন নিয়ে বড় বড় উপদেশ এবং উদ্বেগ জানানো আন্তর্জাতিক মানবাধিকার কর্মীরা এবং তাদের সংগঠনগুলোর নীরবতায় শান্তিপ্রিয় বিশ্ব নাগরিকগণ হতবাক। অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল, হিউম্যান রাইটস ওয়াচের মত সংস্থাগুলোও আশ্চর্যজনকভাবে নীরব!
যখন গাজায় ক্রমাগত সামরিক অভিযান চালানোয় দখলদার ইসরায়েলি বাহিনী তীব্র আন্তর্জাতিক সমালোচনার মুখে পড়েছে, বাইডেন প্রশাসনের অনেক উর্ধ্বতন ব্যক্তি ইসরায়েলকে সামরিক সহায়তা বন্ধের আহ্বান জানিয়েছে, তখন বাইডেন প্রশাসন সব উপেক্ষা করে, মানবিকতাকে পায়ে দলে উল্টো সামরিক সহায়তা বাড়িয়ে দিয়েছে। এমন ঘটনা নিঃসন্দেহে গাজায় আরও বড় মানবিক বিপর্যয় ডেকে আনবে বলে অভিমত পর্যবেক্ষকদের।

এদিকে বাইডেনের ডেমোক্রেটিক পার্টি এবং আরব-আমেরিকান সমর্থকরা ইসরায়েলকে সামরিক সরঞ্জাম পাঠানোর এই ঘোষণার মৃদু সমালোচনা করে নিজেদের দায় সেরেছে বলে জানিয়েছে দ্য গার্ডিয়ান।

আরও পড়ুন: বাইরে বিরোধের নাটক হলেও গোপনে বাইডেন ইসরায়েলকে শত শত কোটি ডলারের যুদ্ধাস্ত্র দিচ্ছেন

শুক্রবার প্রেসিডেন্ট বাইডেন এক বক্তব্যে অনেকটা তাচ্ছিল্য নিয়েই বলেছেন, ইসরায়েলের প্রতি মার্কিন সমর্থন এবং গাজায় সহিংসতার ঘটনায় অনেক আরব-আমেরিকান নাগরিকের মন খারাপ। তবুও ইসরায়েলের প্রতি সমর্থন অব্যাহত রাখার অঙ্গীকার জানান বাইডেন। যদিও ইসরায়েলকে সামরিক সহায়তা প্রদানের বিষয়ে গণমাধ্যমের সামনে মুখ খোলেনি হোয়াইট হাউজ। এমনকি ওয়াশিংটনে অবস্থিত ইসরায়েলি দূতাবাসও মন্তব্য করতে অস্বীকৃতি জানিয়েছে।

প্রসঙ্গত, গত সপ্তাহে ইসরায়েলি প্রতিরক্ষামন্ত্রী ইয়োয়াভ গ্যালান্ট ওয়াশিংটন সফরের পরই বাইডেন প্রশাসন এই সহায়তা প্রদানের সিদ্ধান্ত নেয়।

গাজায় সামরিক হামলায় গত বছরের ৭ই অক্টোবর থেকে এ পর্যন্ত সেখানে প্রায় ৪০ হাজার মানুষ নিহত হয়েছে বলে জানিয়েছে সেখানকার স্বাস্থ্য কর্তৃপক্ষ।

news24bd.tv/ab