ভিয়েতনামে দালালদের হাতে এবার জিম্মি কয়েকশত বাংলাদেশি কর্মী

ভিয়েতনামে দালালদের হাতে এবার জিম্মি কয়েকশত বাংলাদেশি কর্মী

অনলাইন ডেস্ক

সম্প্রতি লিবিয়ায় মানবপাচারকারী চক্রের হাতে নিহত হন ২৬ বাংলাদেশি কর্মী। এবার ভিয়েতনামেও অভিবাসী বাংলাদেশি কর্মীদের জিম্মি দশায় পড়ে নির্যাতনের শিকার হতে হচ্ছে। তাদের জিম্মি করে মুক্তিপণ আদায় করছেন বাংলাদেশি দালালরাই। একের পর এক ভিডিও বার্তায় দেশে ফেরার আকুতি জানিয়ে যাচ্ছেন কয়েকশত বাংলাদেশি।

ভিয়েতনাম প্রবাসী সুমনকে ৩ মাস ধরে আটকে রেখে চলে নির্যাতন। দালালরা অস্ত্র উঁচিয়ে পরিবারের কাছ থেকে নেয় মুক্তিপণ, না দিলে চলে আবারও নির্যাতন।  
সুমন বলেন,  আমি ১ বছর আগে ভিয়েতনাম এসেছি, ১ মাস দালালদের হাতে বন্দি ছিলাম। তারা আমাকে মারতে মারতে অজ্ঞান করে ফেলে।

এরপর পানি খাওয়ায়, জ্ঞান ফিরলে আবার মারে।

মঙ্গলবার দালালদের ডেরা থেকে তাকে উদ্ধার করেন কয়েকজন বাংলাদেশি। তার শরীরের বিভিন্ন জায়গায় আঘাতের চিহ্ন রয়েছে। জানালেন, এখনও হত্যার হুমকি দিচ্ছে দালালরা।  

সুমনের মতো এমন আরো ভুক্তভোগী আছেন যাদের জিম্মি করে নির্যাতন করে কুমিল্লার দাউদকান্দির হাসনাবাদের দালাল আতিকুর রহমান, একই জেলার সদর থানার আকরাম এবং বুড়ি চংয়ের সাইফুল ইসলাম।  

সেখানে দালালদের হাতে জিম্মি কয়েকশত বাংলাদেশি। জিম্মি এসব বাংলাদেশিদের অনেকের পাসপোর্ট ও ভিসা কেড়ে নিয়েছে। এ অবস্থায় ভিডিও বার্তায় প্রবাসীরা দেশে ফেরার আবেদন জানালেও শোনার যেন কেউ নেই।  

দালালরা বাংলাদেশি হলেও অবস্থান করছে ভিয়েতনামে। সেক্ষেত্রে তাদের কীভাবে আইনের আওতায় আনা সম্ভব?

সিআইডি’র মানবপাচার বিভাগের বিশেষ পুলিশ সুপার সৈয়দা জান্নাত আরা বলেন, তদন্ত সম্পন্ন করে যারাই অভিযুক্ত হবে তাদের বিরুদ্ধেই আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে। আমরা ইমিগ্রশনে চিঠি দিয়ে তাদের গমন-নির্গমন আটকিয়ে দেওয়া হবে।

আইন বলছে, প্রবাসীরা বিপদে পড়লে আশ্রয় দেবে দূতাবাস। আর তাদের ফেরত আনার দায়িত্ব নিতে হবে সংশ্লিষ্ট এজেন্সিকে। যদিও এজেন্সিগুলো এখন লাপাত্তা।  

প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রী ইমরান আহমদ বলেন, যে এজেন্সিগুলো তাদের নিয়েছে এই দায়িত্বগুলো কিন্তু তাদের। আপনি একটি চাকরি নিয়ে তারপর ওদের সেখানে পাঠিয়েছেন এখন তারা যদি চাকরি না পায়, না খেয়ে থাকতে হয় তাহলে এই দায় এজেন্সিকেই নিতে হবে। আমি আশ্বস্ত করছি যারাই এর সাথে জড়িত থাকবে তারা অবশ্যই শাস্তি পাবে।

আসিফ মুনীর, সাবেক আইওএম কর্মকর্তা বলেন, আন্তর্জাতিক অভিবাসন সংস্থা কিন্তু বিভিন্ন দেশে আটকে পড়া প্রবাসীদের দেশে ফিরিয়ে আনতে সরকারকে সহায়তা করে। বাংলাদেশ ও ভিয়েতনাম সরকার এবং আইওএম মিলে কিন্তু তাদের দেশে আনতে পারে।

আরেক ভিডিও বার্তায় দেশে ফেরার আকুতি জানিয়েছেন ভিয়েতনামে আটকে পড়া আরও ৬ জন বাংলাদেশি। জব্বার নামে আরেক বাংলাদেশি দালালের হাতে জিম্মি তারা। নিজেদের অবস্থান বুঝতে না পারায় দূতাবাসেও যেতে পারছেন না তারা।  

সূত্র: ডিবিসি নিউজ

নিউজ টোয়েন্টিফোর / সুরুজ আহমেদ