মিয়ানমারে আবারও পুড়ল রোহিঙ্গাদের কপাল!

মিয়ানমারে আবারও পুড়ল রোহিঙ্গাদের কপাল!

অনলাইন ডেস্ক

আগামীকাল রোববার মিয়ানমারে সাধারণ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। দেশটির ৫০ বছরের সামরিক শাসনের অবসান ঘটানোর পর গণতান্ত্রিক জমানায় এটি দেশটির সাধারণ নির্বাচন। এবারের নির্বাচন অং সান সু চির এনএলডি পার্টির বিপরীতে প্রধান বিরোধী দল ইউএসডিপি। যারা মিয়ানমার সেনাবাহিনীর ঘনিষ্ট বলে মনে করা হয়।

দেশটির ইউনিয়ন সলিডারিটি অ্যন্ড ডেভেলপমেন্ট পার্র্টির নেতা উ থান থে রোহিঙ্গাদের নিয়ে মিয়ানমারের দুঃখিত হওয়ার কিছু নেই। তবে বরাবরের মতো এবারও ভোটে যুক্ত হওয়ার কোন কারণ নেই রোহিঙ্গা মুসলমানদের।  

যেসব শর্তে মিয়ানমারে ভোটগ্রহণ হবে-

রাখাইনে ভোট হবে না: এবারের নির্বাচনে সংখ্যালগু রোহিঙ্গা ও রাখাইন জনগোষ্ঠীকে অংশগ্রহণ করতে না দেয়ায় তাদের রাজনৈতিক অধিকার লঙ্ঘন উল্লেখ করে উদ্বেগ জানিয়েছে জাতিসংঘ। নির্বাচন কমিশন জানিয়েছে রাখাইন রাজ্যসহ ৫৬টি শহরটি নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে না।

ইন্টারনেট সংযোগ বন্ধ: রাখাইন ও চিন রাজ্যের আটটি শহরে ইন্টারনেট সংযোগ এরইমধ্যে বন্ধ রাখা হয়েছে। ফলে কেবল নির্বাচন নয়, করোনা নিয়ে তথ্য পাওয়ারও সুযোগ সীমিত হযে গেছে এসব এলাকায়। ২০১৯ সালের ২১ জুন সরকার রাখাইন স্টেটের আটটি টাউনশিপে ইন্টারনেট ব্যবহারের ব্যাপারে বিধিনিষেধ আরোপ করে যা এখন বহাল রয়েছে।

ছাত্র আন্দোলন দমন: এবারের নির্বাচনে মোট নিবন্ধিত ভোটার সংখ্যা ৩ কোটি ৭০ লাখ। এরমধ্যে ৫০ লাখ তরুণ ভোটার ক্ষমকাসীন লিগ ফর ডেমোক্রেসি এনএলডি সরকার সাম্প্রতিক সময়ে সংঘটিত ছাত্র আন্দোলন দমাতে শক্তি প্রয়োগ করেছিল। ফলে অল বার্মা ফেডারেশন স্টুডেন্টস ইউনিয়ন আসন্ন নির্বাচন বর্জনের ডাক দিয়েছে।

করোনা সংকট: করোনার কারণে দেশটিতে মারা গেছে অন্তত ৮০০ মানুষ। আক্রান্ত হয়েছেন প্রায় ৩৪ হাজার।

বিরোধীদের গ্রেফতার: সরকার তথা সেনাবাহিনী বিরোধী বক্তব্যের জন্য অনেক বিরোধীদলীয় সমর্থকে গ্রেফতার করা হয়েছে।

নির্বাচন কমিশনের অনুমোদন: নির্বাচন কমিশন রাজনৈতিক দলগুলোকে জাতীয় সম্প্রচার মাধ্যম টেলিভিশন ও বেতারে তাদের বক্তব্য দেয়ার সুযোগ দিয়েছে। কিন্তু তাদের বক্তব্য আগে নির্বাচন কমিশন থেকে অনুমোদন করিয়ে নিতে হবে।

সেনা শাসন: ১৯৬২ সালে এক সেনা অভ্যুত্থানের মাধ্যমে সেনাবাহিনী তৎকালীন বার্মার ক্ষমতা দখল করে। এরপর ১৯৯০ সালের ২৭ মে সামরিক শাসকদের তত্ত্বাবধানে মিয়ানমার প্রথম সাধারণ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। সেই নির্বাচনে সুচির দল জয়লাভ করেছিল। কিন্তু সামরিক জান্তা সে ফলাফল অস্বীকার করে সেনাবাহিনীর নেতৃত্বে ‘স্টেট পিস অ্যান্ড ডেভলেপমেন্ট কাউন্সিল’ গঠন করে ২০১১ সাল পর্যন্ত রাষ্ট্র পরিচালনা করে।

২০১০ সাালে গণতন্ত্রের পথে দীর্ঘ ৫০ বছর সামরিক শাসনের পর ২০১০ সালে গণতন্ত্র পথে হাঁটতে শুরু করে দেশটি। গৃহবন্দি অবস্থা থেকে মুক্তি পান শান্তিতে নোবেল জয়ী গণতন্ত্রপন্থি নেত্রী অং সান সুচি।

২০১৫ সালের নির্বাচন: ওই নির্বাচনে বড় জয় পায় সুচির দল এনএলডি। কিন্তু রোহিঙ্গা ইস্যুতে আন্তর্জাতিক সমালোচনার ঝড় উঠেছে। ২০১৭ সালে রাখাইন রাজ্যে সেনাবাহিনীর নির্যাতন-নিপীড়ন থেকে প্রাণ বাঁচাতে বাংলাদেশে আশ্রয় নিয়েছে বিপুল সংখ্যক রোহিঙ্গা মুসলমান।

মিয়ানমারে সংবিধান: সাবার কাছে গ্রহণযোগ্য এমন নির্বাচন আয়োজনের পথে প্রধান অন্তরায় হচ্ছে মিয়ানমারের সংবিধান। এটি গণতান্ত্রিকও বটে। শুধু ৭৫ শর্তাংশ আসন পূর্ণ হয় জনগণের ভোটে, বাকি আসন শুধু মনোনয়ন। ২০০৮ সালে এ সংবিধান গ্রহণ করা হয়। এ সংবিধানের আলোকে ২০১৫ সারে সাধারণ নির্বাচন হয়েছিল। সংবিধানে এসব শর্ত যুক্ত করা হয়েছে, যাতে অং সান সু চি কোনোদিনই প্রেসিডেন্ট হতে পারবেন না।

news24bd.tv তৌহিদ

সম্পর্কিত খবর