পরীক্ষা না নিয়ে পাইকারি ফলাফল, শিক্ষার্থীরা ক্ষতিগ্রস্তই হবে

পরীক্ষা না নিয়ে পাইকারি ফলাফল, শিক্ষার্থীরা ক্ষতিগ্রস্তই হবে

অনলাইন ডেস্ক

বিশ্ববিদ্যালয়ে আমরা অনলাইন ক্লাশ নিচ্ছি গত জুলাই থেকে। উপস্থিতির হার বিভাগের ক্লাশের তুলনায় কম থাকলেও নিয়মিতই ক্লাশ হচ্ছে। নানা প্রতিকূলতা আছে, বেশিরভাগ শিক্ষার্থীর ল্যাপটপ নাই, মোবাইল যাদের আছে প্রয়োজনীয় মানসম্পন্ন কমজনের হাতেই আছে, অধিকাংশ ওয়াইফাই-এর আওতার বাইরে, তাদের আরও বেশি অর্থ ব্যয় করে মোবাইল ডাটা কিনতে হয়।

এরপরও আছে নেটওয়ার্কের সমস্যা, দেশে উদ্বৃত্ত বিদ্যুতের হিসাব থাকলেও নিরবিচ্ছন্ন বিদ্যুৎ কম অঞ্চলেই পাওয়া যায়।

ঢাকা শহরেই ক্লাশ নিতে গিয়ে বিদ্যুৎ বিভ্রাট, ইন্টারনেট সমস্যায় পড়ার অভিজ্ঞতা আমারই আছে, ঢাকার বাইরে বিশেষত প্রত্যন্ত অঞ্চলে তো বলাই বাহুল্য। তাছাড়া ঘরবাড়ির সমস্যা, খুব কম পরিবারেই শিক্ষার্থী প্রয়োজনীয় সময়ে স্থান সংকুলান করে মনোযোগ দিয়ে অনলাইনে থাকতে পারে।  

এতোসব সমস্যা সত্ত্বেও অনেকে নিয়মিত ক্লাশ করছে, অনলাইনে পড়াশোনার নানা কিছু খুঁজে নিচ্ছে। এমনকি আমার একাধিক ক্লাশে শিক্ষার্থীরা তাদের গবেষণা কাজও দক্ষতার সাথে উপস্থাপন করেছে।

পরীক্ষাও দিয়েছে।  

এরকম অবস্থায় বেশ কয়েক ব্যাচের পরীক্ষা নিয়ে কথা হচ্ছে। জোর প্রস্তাব হলো আগের ফলাফলের উপর ভিত্তি করে তাদের পরীক্ষার ফলাফল দেওয়া। যারা শত প্রতিকূলতা সত্ত্বেও অনলাইন ক্লাশ, পরীক্ষা, এসাইনমেন্ট ইত্যাদি করছে এরকম সিদ্ধান্ত তাদের জন্য বড়ো আঘাত হবে। তাছাড়া এভাবে যে বিশ্ববিদ্যালয় পরীক্ষা নেবে সেখানকার শিক্ষার্থীরা এই ফলাফল নিয়ে কর্মসংস্থানের প্রতিযোগিতায় গুরুত্ব পাবে কম।  


আরও পড়ুন: 

আমার বক্তব্য স্পষ্ট, ভাস্কর্য নির্মাণ ইসলামবিরোধী ও পাপের কাজ: ফেসবুক লাইভে মামুনুল হক

রেল দুর্ঘটনায় ট্রাক্টর চালক নিহত

মৌলবাদীদের ফণা তুলতে দেওয়া যাবে না: তথ্যমন্ত্রী

‘ভাস্কর্যের বিরোধিতা আর বঙ্গবন্ধুর বিরোধিতা এক নয়’, লিখে বহিষ্কার নেতা

দেবর-ভাবির পরকিয়া, প্রেমের ছলে হাত-পা বেঁধে খুন


স্বাস্থ্যবিধি মেনে গ্রহণযোগ্য মানে কোনো না কোনোভাবে পরীক্ষা গ্রহণের ব্যবস্থা গ্রহণ খুবই সম্ভব বলে আমি মনে করি। যদি শুধু এক ব্যাচ করে একেক পর্বে পরীক্ষা নেওয়া হয়, যদি স্বাস্থ্যবিধির নিয়ম কঠোরভাবে পালন করা হয়, যদি স্বাস্থ্যকেন্দ্র যথাযথভাবে প্রস্তুত থাকে, যদি স্যানিটাইজার-মাস্ক ইত্যাদি প্রয়োজনে যোগান দেওয়া হয় তাহলে বর্তমান সংকটের মধ্যেও পরীক্ষা নেবার পরিবেশ তৈরি করা যাবে।  

প্রয়োজনে পরীক্ষার আওতা কমিয়ে আনা যায়, যেমন চারঘন্টার পরীক্ষা দুইঘন্টায় নেয়া যায়। তারপরও যদি ঝুঁকি বেশি মনে হয়, অনলাইনে পরীক্ষা নেবারও পথ-পদ্ধতি বের করা যায়। কোনো কোনো প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয় নিচ্ছে সেভাবে।  

উইকেন্ড, ইভনিং প্রোগ্রামগুলোতে অনলাইন পরীক্ষা হচ্ছে। ভর্তি পরীক্ষা নেবারও চিন্তা হচ্ছে, তাহলে নিয়মিত পরীক্ষা হবে না কেন? 

পরীক্ষা না নিয়ে পাইকারি ফলাফল, অন্তত বিশ্ববিদ্যালয় পর্যায়ে, শিক্ষার্থীদের লাভবান করবে না বরং তারা ক্ষতিগ্রস্তই হবে।

 আনু মোহাম্মদ, অধ্যাপক জাহাঙ্গীর নগর বিশ্ববিদ্যালয় 

news24bd.tv নাজিম