ইসরায়েলের প্রতিরক্ষা বাহিনীর (আইডিএফ) প্রধান জানিয়েছেন, খুব শিগগিরই গাজায় প্রবেশ করবে তাদের সেনারা এবং গাজায় গিয়ে হামাসকে ধ্বংস করবে তারা। রোববার (১৫ অক্টোবর) যুদ্ধের সম্মুখভাগে সেনাদের সঙ্গে দেখা করতে যান আইডিএফ প্রধান লেফটেন্যান্ট জেনারেল হেরজি হালেভি। সেখানে গিয়ে এমন মন্তব্য করেন তিনি।
জেনারেল হেরজি হালেভি সেনাদের উদ্দেশ্যে বলেন, ‘আমাদের দায়িত্ব এখন গাজায় প্রবেশ করা।
হামাস যেখানে প্রস্তুতি নিচ্ছে, কাজ করছে, পরিকল্পনা করছে এবং (রকেট) ছুড়ছে সেখানে পৌঁছানো। তাঁদের সব দিক দিয়ে হামলা করা, প্রত্যেক কমান্ডার, প্রত্যেক সদস্য এবং সবাইকে ধ্বংস করা। এক কথায় আমাদের জিততেই হবে। ’হামাসের ওপর হামলা চালাতে ফিলিস্তিনের অবরুদ্ধ গাজা উপত্যকার সীমান্ত প্রাচীরের কাছে অবস্থান নিয়েছে ইসরায়েলি সেনাবাহিনীর শত শত ট্যাংক।
গত ৭ অক্টোবর সশস্ত্র গোষ্ঠী হামাস হামলা চালানোর পর গাজার নিয়ন্ত্রণ নেওয়ার পরিকল্পনা করে ইসরায়েল। সেই পরিকল্পনা অনুযায়ী অবরুদ্ধ সরু এ উপত্যকার কাছে ৩ লাখেরও বেশি সেনা জড়ো করেছে তারা। তবে সীমান্তের কাছে প্রায় এক সপ্তাহ ধরে সেনা জড়ো করে রাখলেও এখনো স্থল অভিযান শুরু করেনি দখলদার ইসরায়েল।
যুক্তরাষ্ট্রের সংবাদমাধ্যম নিউইয়র্ক টাইমস জানিয়েছে, বর্তমানে গাজার আবহাওয়া কিছুটা মেঘাচ্ছন্ন। ফলে ইসরায়েলি বাহিনী এখনো গাজায় প্রবেশ করছে না। কারণ যদি তারা গাজায় ঢোকে তাহলে যুদ্ধবিমানের পাইলট ও ড্রোন তাদের নিরাপত্তা দিতে হিমশিম খাবে।
এ ছাড়া গাজায় হামাসের বিস্তৃত সুড়ঙ্গ নিয়েও কিছুটা চিন্তিত ইসরায়েল। ইসরায়েলি বাহিনী যখন গাজায় প্রবেশ করবে তখন এসব সুড়ঙ্গের ভেতর থেকে তাঁদের ওপর অতর্কিত হামলা চালানো হতে পারে।
এ ছাড়া ইসরায়েলের ভয়, হামাস যেসব ইসরায়েলিকে ধরে নিয়ে গেছে তাদের মানবঢাল হিসেবে ব্যবহার করা হতে পারে।
ইসরায়েলে আরেকটা রণতরী পাঠাচ্ছে যুক্তরাষ্ট্র
‘ইসরায়েলের বিরুদ্ধে শত্রুতামূলক কর্মকাণ্ড রোধ’ করার জন্য ইসরায়েলে দ্বিতীয় বিমানবাহী রণতরী পাঠাচ্ছে যুক্তরাষ্ট্র। ইসরায়েলকে সমর্থন করার জন্যই মার্কিন বিমান বাহিনীর তিনটি স্কোয়াড্রন মোতায়েন করা হয়েছে। ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসি এ খবর জানিয়েছে।
পেন্টাগনের এক বিবৃতি থেকে জানা যায়, ইউএসএস আইজেনহাওয়ার বিমানবাহী রণতরীকে পূর্ব ভূমধ্যসাগরে ইউএসএস জেরাল্ড আর ফোর্ডকে সহযোগিতা করার জন্য পাঠানো হচ্ছে।
মৃতের সংখ্যা ৩৮০০ ছাড়িয়েছে
ফিলিস্তিনি সশস্ত্র গোষ্ঠী হামাস এবং ইসরায়েলের মধ্যকার চলমান যুদ্ধে মৃতের সংখ্যা ৩ হাজার ৮০০ ছাড়িয়ে গেছে। রোববার (১৫ অক্টোবর) কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আল জাজিরা জানিয়েছে, হামাসের হামলায় ইসরায়েলে মৃতের সংখ্যা ১ হাজার ৪০০ ছাড়িয়েছে। অপরদিকে দখলদার ইসরায়েলের বিমান হামলায় প্রাণ হারিয়েছেন ২ হাজার ৪৫০ ফিলিস্তিনি।
ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহুর দপ্তর রোববার ইসরায়েলিদের হতাহতের নতুন সংখ্যা ঘোষণা করেছে। প্রধানমন্ত্রীর দপ্তরের মুখপাত্র তাল হেনরিখ সাংবাদিকদের বলেছেন, ‘সন্ত্রাসী গোষ্ঠী হামাসের হামলায় ১ হাজার ৪০০ জনের বেশি (ইসরায়েলি) নিহত হয়েছেন। এছাড়া জিম্মি করা হয়েছে ১২০ জনেরও বেশি জনকে। ’
অপরদিকে গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় রোববার এক বিবৃতিতে বলেছে, গাজায় ইসরায়েলের বিমান হামলা ও গোলাবর্ষণে ২ হাজার ৪৫০ জনেরও বেশি ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন। আহতের সংখ্যা ৯ হাজার ২০০ জনে পৌঁছেছে।
news24bd.tv/A