গাজা উপত্যকায় ইসরায়েলি বোমা হামলায় নিহতদের একটি বড় অংশই শিশু। হাসপাতালগুলোর মর্গে ছিন্ন-বিচ্ছিন্ন হয়ে যাওয়া শিশুদের শনাক্ত করতে হিমশিম খাচ্ছেন ফিলিস্তিনের অসংখ্য মা-বাবা। এ অবস্থায় গাজা উপত্যকায় নতুন এক প্রবণতা দেখা গেছে ফিলিস্তিনিদের মধ্যে। সন্তানদের শরীরের বিভিন্ন অংশে তাঁরা নাম লিখে রাখছেন—যেন এই নাম দেখে তাদের মরদেহ শনাক্ত করা যায় সহজেই।
এ বিষয়ে আল-আকসা মার্টিয়ারস হাসপাতালের প্রধান আব্দুল রহমান আল-মাসরি সিএনএনকে জানান, তাঁরা বেশ কিছু শিশুর মরদেহ পেয়েছেন যাদের পা, পেট কিংবা শরীরের অন্যান্য অংশে মা-বাবারা নাম লিখে রেখেছিলেন।
মাসরির মতে, বর্তমান পরিস্থিতিতে সন্তানের ক্ষেত্রে যেকোনো কিছুই ঘটে যেতে পারে। বোমার আঘাতে মারা গেলে শিশুদের মরদেহ দেখে অনেক সময় চেনার উপায় থাকে না। এ ক্ষেত্রে কালো কালি দিয়ে শরীরে লিখে রাখা নাম চেনার উপায় হতে পারে।
বিষয়টিকে ফিলিস্তিনিদের জন্য একটি নতুন প্রবণতা হিসেবেও উল্লেখ করেন মাসরি। তিনি জানান, অতীতে এই বিষয়টি কখনোই দেখা যায়নি।
৭ অক্টোবর থেকে গাজা উপত্যকায় ইসরায়েলি বাহিনীর টানা বোমাবর্ষণে বিধ্বস্ত ভবনগুলোর ধ্বংসাবশেষ থেকে শত শত শিশুকে টেনে বের করে হাসপাতালে আনা হয়েছে। এখনো নিখোঁজ রয়েছে অসংখ্য শিশু। আঘাতের কারণে হাসপাতালে নিয়ে আসা শিশুদের অনেককেই শনাক্ত করা সম্ভব হচ্ছে না।
চলমান সংঘাতে গাজা শহরে ইসরায়েলি হামলায় প্রায় পাঁচ হাজার ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছে। আর নিহতদের এক-তৃতীয়াংশই শিশু বলে জানিয়েছে গাজার স্বাস্থ্য বিভাগ। তাদের দাবি, চলমান সংঘাতের মধ্যে গাজায় প্রতি ১৫ মিনিটে একজন করে শিশুর মৃত্যু হচ্ছে। চিকিৎসকদের তথ্যমতে, গাজার হাসপাতালগুলোতে চিকিৎসা নিতে আসা আহতদের ৪০ শতাংশই শিশু।
মানবাধিকার সংগঠনগুলো বলছে, ফিলিস্তিনি শিশুদের হত্যা করে মূলত একটি প্রজন্মকে পঙ্গু করে দেওয়ার চেষ্টা চালানো হচ্ছে। সাত দশক ধরে ফিলিস্তিনে দখলদার ইসরায়েলিদের বন্দুক-বোমার প্রধান লক্ষ্যবস্তু হয়েছে হাজারো শিশু।
news24bd.tv/A