নিউইয়র্কে ২০ আগস্ট পর্যন্ত ভাড়ার তাগিদ নয়
করোনাকালের ভাড়া মওকুফের লবিং ক্যাপিটল হিলে

নিউইয়র্কে ২০ আগস্ট পর্যন্ত ভাড়ার তাগিদ নয়

যুক্তরাষ্ট্র প্রতিনিধি

নিউইয়র্কে করোনায় ক্ষত-বিক্ষত জনপদের ভাড়াটেদের বকেয়া ভাড়ার জন্যে বাসা থেকে উচ্ছেদ করা যাবে না। ২০ আগস্ট পর্যন্ত এই নির্দেশ বহাল থাকবে আবাসিক ও বাণিজ্যিক সকল বাড়ির মালিকের ক্ষেত্রে।  

বৃহস্পতিবার (৭ মে) নিয়মিত প্রেস ব্রিফিংকালে স্টেট গভর্নর এ্যান্ড্রু ক্যুমো এ কথা জানান।  

তিনি আরও বলেন, করোনাভাইরাসে নিষ্পেষিত নিউইয়র্কের ভাড়াটেরা গৃহবন্দি।

বেকার জীবন-যাপনে বাধ্য হচ্ছেন। এ অবস্থায় তারা বাড়ি/ব্যবসা কেন্দ্রের ভাড়া সংগ্রহ করবেন কিভাবে? তাই পূর্বের নির্দেশ ২০ জুন থেকে আরও দু’মাস বাড়িয়ে ২০ আগস্ট পর্যন্ত করা হলো বকেয়া ভাড়ার জন্যে উচ্ছেদ অভিযান স্থগিতের। এই সময় আরও বাড়ানো হতে পারে যদি করোনা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে এসে লকডাউন উঠিয়ে নেয়া না যায়।  

উল্লেখ্য, করোনায় সবচেয়ে বেশী ক্ষতিগ্রস্ত নিউইয়র্কের ভাড়াটেদের জন্যে এ ধরনের একটি নির্দেশ গত মাসে জারির সময় ২০ জুন পর্যন্ত তা বহাল থাকবে বলে জানিয়েছিলেন স্টেট গভর্নর।

একইসাথে মর্টগেজের কিস্তি পরিশোধেও ব্যাংক/ ক্রেডিট কার্ড সংশ্লিষ্টদের তাগিদ দিতে পারবে না উপরোক্ত সময়ের মধ্যে। এমনকি কিস্তি বরখেলাপকারীদের কাছে চক্রবৃদ্ধি হারে সুদও নিতে পারবে না।  

উল্লেখ্য যে, কংগ্রেসে প্রগতিশীল ককাসের পক্ষ থেকে নিউইয়র্কের কংগ্রেসওম্যান আলেক্সান্দ্রিয়া ওকাসিয়ো-করটেজ ইতিমধ্যেই জোরদার লবিং শুরু করেছেন করোনার পরিপ্রেক্ষিতে নিউইয়র্কসহ সারা আমেরিকার ভাড়াটেদের মার্চ থেকে শেষ পর্যন্ত ভাড়া থেকে অব্যাহতি প্রদানের জন্যে।  

একইসাথে বাড়ির মালিকদের মর্টগেজও বাতিলের কথা বলা হচ্ছে ক্যাপিটল হিলে। ভাড়া আদায় না হলে মালিকেরা ব্যাংকের কিস্তি পরিশোধ করবেন কীভাবে। করোনা-স্টিমুলাস’র পঞ্চম একটি বিল শিগগিরই উঠবে কংগ্রেসে, সেখানে এই বিধি অন্তর্ভুক্তির জোর চেষ্টা চালাচ্ছেন আলেক্সান্দ্রিয়া। একইসাথে অবৈধ অভিবাসীদেরও মাথাপিছু করোনা-চেক ইস্যুর বিষয়টি অন্তর্ভুক্তির চেষ্টা চালানো হচ্ছে।

এদিকে, নিউইয়র্কের বাড়ির মালিকেরা খুবই অসন্তুষ্ট স্টেট গভর্নরের এ সিদ্ধান্তে। নিউইয়র্ক সিটির ২৫ হাজার এপার্টমেন্ট মালিকদের সংগঠন ‘রেন্ট স্ট্যাবিলাইজেশন এসোসিয়েশন’র প্রেসিডেন্ট যোসেফ স্ট্র্যাসবার্গ বলেছেন, ‘ভাড়াটেদের সূচনীয় অবস্থার মূল্যায়ন করা হলেও বাড়ির মালিকেরা কীভাবে চলবেন সেটি বিবেচনায় নেননি স্টেট গভর্নর। ভাড়া আদায় না হলে ব্যাংকের কিস্তিই শুধু নয়, প্রপার্টি ট্যাক্স, গ্যাস, বিদ্যুৎ, পানির বিল পরিশোধ করবো কীভাবে?’ 

এমন একতরফা সিদ্ধান্ত কোনোভাবেই বিবেচনাপ্রসূত হয়নি বলে মন্তব্য করেছেন ল্যান্ডলর্ডরা।  

বুধবার (৬ মে) নিউইয়র্ক স্টেটে করোনায় মারা গেছে ২৩২ জন। আগের দিনের চেয়ে তা একজন বেশী। এ যাবত নিউইয়র্ক স্টেটে মারা গেছেন মোট ২৬ হাজার ৩৬৫ জন। আক্রান্তের মোট সংখ্যা ৩ লাখ ৩৭ হাজার ৪২১। গত দেড় সপ্তাহ যাবত এই স্টেটে মৃত্যুর সংখ্যা কমছে।  

হাসপাতালে ভর্তি এবং আইসিইউতে গমণের হারও কমেছে বলে উল্লেখ করে স্টেট গভর্নর জানান, ১৫ মে’র পর নিউইয়র্ক সিটি ও লং আইল্যান্ড বাদে অন্য অনেক এলাকার লকডাউন শিথিল করা হতে পারে।  

ক্যুমো বলেন, বাস্তবতার আলোকে অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ড চালুর কথা ভাবছি আমরা। রাজনৈতিক এবং আবেগতাড়িত হয়ে এমন কোনো সিদ্ধান্ত আমরা নেব না যাতে জনস্বাস্থ্য আরও হুমকিতে পড়ে।  

নিউজ টোয়েন্টিফোর/কামরুল