বঙ্গবন্ধু হত্যার নেপথ্যে থাকা দেশি বিদেশি কুশীলবদেরও বিচারের আওতায় আনার দাবি

নিজস্ব প্রতিবেদক

শুধু বঙ্গবন্ধুর খুনিদের নয়, তার হত্যার নেপথ্যে দেশী বিদেশী কুশীলবদেরও বিচারের আওতায় আনার জোর দাবি জানিয়েছেন বিশ্লেষকরা। এর জন্য কমিশন গঠনেরও পরামর্শ তাদের। বিশ্লেষকরা বলছেন, খুনিরা এবং বিশেষ করে জিয়াউর রহমানরা চাননি বঙ্গবন্ধু হত্যার বিচার হোক। বরং যাতে বিচার না হয় সে জন্য তারা আইন পাস করেন।

যুদ্ধবিধ্বস্ত স্বাধীন বাংলাদেশ যখন ঘুরে দাঁড়ানোর চেষ্টায়, ঠিক তখন বেশকিছু বিপদগামী সেনা সদস্যদের আক্রমণ। ১৯৭৫ এর ১৫ আগস্ট ভোরে বিপদগামী সেনা সদস্যরা পরিকল্পিতভাবে ধানমন্ডির ৩২ নম্বরের বাসায় দেশের স্থপতি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে স্বপরিবারে হত্যা করে। বঙ্গবন্ধুকে হত্যার পর ১৯৭৫ সালের ২৬ সেপ্টেম্বর স্বঘোষিত প্রেসিডেন্ট খন্দকার মোশতাক বিচারের হাত থেকে খুনিদের রক্ষা করতে ইনডেমনিটি অধ্যাদেশ জারি করেন।

পরবর্তীতে জিয়াউর রহমান ১৯৭৯ সালে ইনডেমনিটি অধ্যাদেশকে আইন হিসেবে অনুমোদন করেন।


ঘটনার প্রায় ২১ বছর পর বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনার নেতৃত্বে আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আসলে ১৯৯৬ সালের ১৪ আগস্ট বঙ্গবন্ধু হত্যা মামলার তিন প্রধান আসামিকে গ্রেপ্তার করা হয়। একই বছর ২ অক্টোবর বঙ্গবন্ধুর একান্ত সহকারী মোহিতুল ইসলাম ১৫ আগস্ট হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় থানায় অভিযোগ দায়ের করেন। পরবর্তিতে খুনিদের বিচার করতে পার্লামেন্টে ইনডেমনিটি আইন বাতিল করা হয়। ১৯৯৭ সালের ১৯ জুন পর্যন্ত বিচারক বিব্রত হওয়াসহ নানা কারণে আটবার বিচার কার্যক্রম স্থগিত হয়। এভাবে দীর্ঘ প্রক্রিয়া শেষে ১৯৯৮ সালের ৮ নভেম্বর মামলার রায়ে বিচারক কাজী গোলাম রসুল ১৫ সাবেক সেনা কর্মকর্তাকে মৃত্যুদণ্ড দেন। পরে হাইকোর্টের তৃতীয় বেঞ্চে ১২ আসামির মৃত্যুদণ্ড বহাল থাকে।

২০০১ সালে সংসদ নির্বাচনে বিএনপি-জামায়াত জোট ক্ষমতায় এলে বিচার কাজ বন্ধ থাকে। পুনরায় আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় এলে বিচার সচল হয়। ২০১০ সালের ২৮ জানুয়ারি ৫ আসামির ফাঁসির রায় কার্যকর করে জাতিকে দায়মুক্ত করা হয়। এর প্রায় ১০ বছর পর চলতি বছরে বঙ্গবন্ধুর আত্মস্বীকৃত খুনি ও মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত আসামি বরখাস্ত ক্যাপ্টেন আবদুল মাজেদের ফাঁসি কার্যকর করা হয়। সাজাপ্রাপ্তদের মধ্যে এখনো পলাতক ৫ জন। তাদের ফিরিয়ে আনতে চেষ্টা অব্যাহত রয়েছে বলে জানিয়েছেন আইনমন্ত্রী।

বিশ্লেষকরা বলছেন, শুধু হত্যাকারীদেরই নয়, এ ঘটনার নেপত্থে কুশিলবদেরও বিচারের আওতায় আনতে হবে।

নিউজ টোয়েন্টিফোর / সুরুজ আহমেদ

এই রকম আরও টপিক