জোনাথন দ্য টরটইজ: পৃথিবীর সবচেয়ে বয়স্ক প্রাণী

জোনাথন দ্য টরটইজ: পৃথিবীর সবচেয়ে বয়স্ক প্রাণী

Other

এই মুহূর্তে পৃথিবীতে মানুষের জানামতে সবচেয়ে বেশি বয়সী প্রাণী হচ্ছে জোনাথন নামের একটি সামুদ্রিক কচ্ছপ, জোনাথন দ্য টরটইজ। জন্ম ১৮৩২ সালে। ইংল্যান্ডের রানী ভিক্টোরিয়ার সিংহাসনে আরোহণের পাঁচ বছর আগে। সে হিসেবে তার বয়স  চলছে  ১৮৯ বছর! জোনাথনের বাস দক্ষিণ আটলান্টিক মহাসাগরে অবস্থিত ব্রিটিশ ওভারসিজ টেরিটরি সেন্ট হেলেনায়।

১৮৮২ সালে ভারত মহাসাগরের সিসিলি থেকে এই জায়ান্ট কচ্ছপটিকে সম্পূর্ণ পরিণত অবস্থায় সেন্ট হেলেনায় আনা হয়। এর মানে তখন এর বয়স ছিলো কমসে কম ৫০ বছর। ১৯৩০-এর দশকে সেন্ট হেলেনার গভর্নর স্যার স্পেন্সার ডেভিস এর নাম রাখেন জোনাথন।

news24bd.tv

সেন্ট হেলেনা নেপোলিয়ন বোনাপার্তির শেষশয্যার স্থান হিসেবে বিখ্যাত।

১৮১৫ সালে ওয়াটারলু যুদ্ধে পরাজয়ের পর তাকে সেন্ট হেলেনায় নির্বাসনে পাঠানো হয়। তবে এই ফরাসি বীরের সঙ্গে জোনাথনের সাক্ষাৎ হয়নি। কারণ তার আগমনের ছয় দশক আগেই নেপোলিয়ন দেহ রক্ষা করেন।

উল্লেখ্য, জোনাথনকে সেন্ট হেলেনায় আনার পর তৎকালীন গভর্নর উইলিয়াম গ্রে-উইলসনকে উপহার দেওয়া হয়। উইলসন ১৮৯০ থেকে ১৮৯৭ পর্যন্ত সেন্ট হেলেনার গভর্নর ছিলেন। সেই থেকে জোনাথন এখনো সেন্ট হেলেনার গভর্নরের সরকারি বাসভবন প্ল্যানটেশন হাউসের আঙ্গিনায় বাস করছে। সেন্ট হেলেনার সরকারই তার দেখভাল করে থাকে।

প্ল্যানটেশন হাউস একটি জর্জিয়ান ভবন। ১৭৯১-১৭৯২ সালে ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানি এটি নির্মাণ করে। এখানে জোনাথনের সঙ্গে থাকে আরো তিনটি বৃহদাকার কচ্ছপ- ডেভিড, এমা ও ফ্রেড। এই বয়সেও জোনাথনের স্বাস্থ্য বেশ ভালো। যদিও বার্ধক্যের কারণে তার কিছু শারীরিক সমস্যা রয়েছে। জোনাথন রোদ পোহাতে পছন্দ করে। সূর্যস্নান করে। কিন্তু গরম বেশি পড়লে ছায়ায় গিয়ে আশ্রয় নেয়।

news24bd.tv

চোখে ছানি পড়ার কারণে জোনাথন দেখতে পায় না বললেই চলে। সব ধরনের ঘ্রাণশক্তি নষ্ট হয়ে গেছে। তবে তার দৃষ্টিশক্তি চমৎকারভাবে ফিরে এসেছে এবং তার দারুণ ক্ষুধা রয়েছে। ভেট জানান, জোনাথনের যৌনশক্তি এখনো অটুট ও ভালো রয়েছে, যা প্রমাণ করে যে তার শরীরের অভ্যন্তরীণ স্বাস্থ্যও ভালো রয়েছে। তাকে প্রায়ই এমা ও ফ্রেডের সঙ্গে মিলিত হতে দেখা যায়।


আরও পড়ুনঃ


বাঙ্গি: বিনা দোষে রোষের শিকার যে ফল

আপনি কী করেন? এটি মোটেও নিরীহ প্রশ্ন নয়

সড়ক দুর্ঘটনায় রাস্তাটি গুরুতরভাবে আহত হয়েছে: নোবেল

লকডাউনে 'বান্ধবীর' সাথে দেখা করতে যুবকের আকুতি, পুলিশের রোমান্টিক জবাব!


জোনাথন বেশ ভদ্র এবং মানুষের সঙ্গে উপভোগ করে। শ্রবণশক্তি ভালো থাকায় বিশেষ করে খাওয়ানোর সময় নাম ধরে ডাকলে সাড়া দেয়। জোনাথন কলা বেশ পছন্দ করে। তবে এটি তার মুখে লেগে থাকে। এছাড়া. বাঁধাকপি, শশা, আপেল, মৌসুমি ফল-মূল ও গাজরও দারুণ উপভোগ করে। তবে তাকে কোনোকিছুই বেশি খেতে দেওয়া হয় না। স্বাস্থ্যের কথা বিবেচনায় রেখে স্বল্প পরিমাণে সুষম খাদ্য পরিবেশন করা হয়।

দ্বীপবাসীদের কাছে জোনাথন বেশ জনপ্রিয়। কালের সাক্ষী জোনাথনকে সম্মান জানাতে সেন্ট হেলেনার পাঁচ পয়সার মুদ্রার উল্টো পিঠে জোনাথনের ছবি মুদ্রণ করা হয়েছে। কিছু বিধি-নিষেধ ধাকলেও দর্শনার্থীরা জোনাথনের দর্শন পেতে পারেন। কোভিড-১৯ মহামারীর এই ক্রান্তিকালেও প্রায় দুই শতাব্দী বয়সী এই কাছিমটি বেঁচে-বর্তে আছে।

news24bd.tv / নকিব