ইন্টারমিটেন্ট ফাস্টিংয়ের ভালো-খারাপ

রাতের খাবার, ছবি : রয়টার্স

ইন্টারমিটেন্ট ফাস্টিংয়ের ভালো-খারাপ

ওজন কমানোর ক্ষেত্রে এখন অন্যতম জনপ্রিয় ইন্টারমিটেন্ট ফাস্টিং। এখন অনেকেই করে থাকেন। কিন্তু ইন্টারমিটেন্ট ফাস্টিং করে নিজের আরও দ্রুত বিপদ টেনে আনছেন কিনা সেটাও ভাবার বিষয়।  

প্রথমেই জানা দরকার ইন্টারমিটেন্ট ফাস্টিং কি ?  নির্দিষ্ট সময় মেনে, অনেকটা সময় বিরতি দিয়ে ডায়েট করেন, যাকে বলে সবিরাম উপবাস।

এই রীতি অনুযায়ী, সাধারণত, দুপুরে লাঞ্চের পর রাত ৮টার মধ্যে ডিনার করে ফেলা হয়। পরদিন ব্রেকফাস্টও করাও হয় না। এই রীতিতে ডায়েট করলে দেহের ওজন অবশ্যই কমে। দীর্ঘদিন ধরেই জনপ্রিয় এই ‘ইন্টারমিটেন্ট ফাস্টিং’।
কিন্তু, দেহের ওজন কমাতে গিয়ে অজান্তেই হার্টের ক্ষতি করে ফেলছেন না তো?

সাম্প্রতিক গবেষণায় দেখা গিয়েছে, নিয়মিত সবিরাম না খেলে দেহের ওজন কমে ঠিকই। কিন্তু, এই অভ্যাস হার্টের স্বাস্থ্যের মারাত্মক ক্ষতি করে। মৃত্যু পর্যন্ত হতে পারে। ২০ হাজারেরও বেশি প্রাপ্ত বয়স্ক লোকের উপর সমীক্ষা চালিয়ে এমনই সিদ্ধান্তে উপনীত হয়েছেন মার্কিন সেন্টারের গবেষকরা। সাংহাই জিয়াও তোং ইউনিভার্সিটি স্কুল অব মেডিসিন-এর গবেষকদের নেতৃত্বে এই সমীক্ষাটি চালানো হয়েছে। সম্প্রতি আমেরিকান হার্ট অ্যাসোসিয়েশনের তরফে সেই সমীক্ষার ফলাফল প্রকাশ করা হয়েছে।
সবিরাম না খেয়ে থাকা নিয়ে আমেরিকান হার্ট অ্যাসোসিয়েশনের তরফে প্রকাশিত গবেষণাপত্রে দেখা যাচ্ছে, যাঁরা সবিরাম উপবাস করেন না, তাঁদের তুলনায় যাঁরা সারাদিনে ৮ ঘণ্টা খাবার না খেয়ে থাকেন, তাঁদের হার্ট-সংক্রান্ত কারণে মৃত্যুর ঝুঁকি ৯১ শতাংশ। আবার যাঁরা ১২-১৬ ঘণ্টা অন্তর খাবার খান, তাঁদেরও স্ট্রোক থেকে হার্টের স্বাস্থ্যের ঝুঁকির মধ্যে রয়েছে।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, সবিরাম না খাওয়া সকলের জন্য নয়। বিশেষত, ২৫ বছরের কম বয়সি তরুণ এবং গর্ভবতী মহিলা, যাঁদের ক্যালোরির চাহিদা বেশি, তাদের দীর্ঘক্ষণ উপবাসের ডায়েট অনুসরণ করা উচিত নয়। দীর্ঘদিন ধরে যাঁরা ডায়াবেটিসে ভুগছেন, হাই ডোজের ওষুধ এবং ইনসুলিনের নেন, তাঁদেরও সবিরাম না খাওয়া করা উচিত নয়। হৃদরোগে আক্রান্ত ব্যক্তিদেরও এই রীতি অনুসরণ করা উচিত নয় বলে জানাচ্ছেন হৃদরোগ বিশেষজ্ঞরা।
তবে ইন্টারমিটেন্ট ফাস্টিং-এর সুবিধাও আছে।  
আধুনিক যুগে বেশিরভাগ মানুষ একেকবার খাওয়ার সময়ে অনেকটা করে ক্যালোরি গ্রহণ করেন। সেই ক্যালোরি পুরোপুরি খরচ হওয়ার আগেই আবারও নতুন করে খাবার খাওয়া হয়ে যায়। ফলে, খাবার শরীরে ফ্যাট রূপে জমতে শুরু করে।
ইন্টারমিটেন্ট ফাস্টিংয়ের মাধ্যমে খাবারকে সম্পূর্ণ হজম হতে সময় দেওয়া হয়। ফলে, যে খাবারটা খেলেন, তাঁর বেশিরভাগ ক্যালোরি আগে খরচ হয়। এতে মেটাবলিজম স্বাভাবিক থাকে। হজমের সমস্যাও কম হয়।
এছাড়া অনেক বডিবিল্ডার ও সিনেমা তারকাই দেখবেন সকালে খালি পেটে এক্সারসাইজ করেন। এটাও কিন্তু একধরণের ফাস্টিং-এর উপর নির্ভরশীল প্রক্রিয়া। খালি পেটে কসরতের মাধ্যমে শরীরের ফ্যাট থেকে প্রয়োজনীয় শক্তি আসে। ফলে, ফ্যাট বার্ন হয়। ওজন কমে।
তাই যারা রিস্কি জোনের বাইরে তাদের জন্য ইন্টারমিটেন্ট ফাস্টিং উপকারী। তবে অবশ্যই চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী।  

news24bd.tv/ডিডি