যশোরে রাষ্ট্রদ্রোহ মামলায় পুলিশ সদস্য গ্রেপ্তার
১০ দিনের রিমান্ড আবেদন

যশোরে রাষ্ট্রদ্রোহ মামলায় পুলিশ সদস্য গ্রেপ্তার

যশোর প্রতিনিধি

বাংলাদেশের গুরুত্বপূর্ণ তথ্য ভারতে পাচারের অভিযোগে দেব প্রসাদ সাহা নামে এক পুলিশ সদস্যকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। মঙ্গলবার গ্রেপ্তারের পর যশোর সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে সোপর্দ করে দশ দিনের রিমান্ড আবেদন করা হয়েছে।  

বিচার সাইফুদ্দিন হুসাইন আগামি ১৯ ডিসেম্বর রিমান্ড শুনানির দিন ধার্য্য করে আসামিকে জেলহাজতে প্রেরণের আদেশ দিয়েছেন। গ্রেপ্তার দেব প্রসাদ সাহা খুলনার তেরখাদা উপজেলা শহরের সুরেন্দ্রনাথ সাহার ছেলে।

গ্রেপ্তার ও রিমান্ড আবেদনের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন বেনাপোল থানার ওসি মামুন খান।

আদালত সূত্রে জানা যায়, গ্রেপ্তার আসামি দেব প্রসাদ সাহা ঢাকার উত্তরা ১ নম্বর আমর্ড পুলিশ ব্যাটালিয়নে কনস্টেবল। সেই সুবাদে ২০১৪ সালের ২৭ ডিসেম্বর থেকে ২০১৮ সালের ১৭ আগস্ট পর্যন্ত বেনাপোল ইমিগ্রেশনে কর্মরত ছিলেন। তার বিপি নম্বর ৭৫৯৮০৫১১৯৮ ও কনস্টেবল নম্বর ৭০৩।

সেখানে কর্মরত থাকা অবস্থায় ভারতের অনেকের সাথে অনৈতিক সম্পর্ক গড়ে তোলেন। যে কারণে তিনি যখন তখন নোম্যানস ল্যান্ড অতিক্রম ভারতে যাওয়া আসা করতেন।

ইমিগ্রেশনে দায়িত্ব পালনকালে সেনাবাহিনীর অফিস সহকারি আবু হানজালা রানা ও সৈনিক শাহনেওয়াজ শাহিনের সাথে তার পরিচয় ও সুসম্পর্ক গড়ে ওঠে। তারা দুইজন বেনাপোলে মাঝেমধ্যে এসে ভারতের এস চক্রবর্তী ও পিন্টু নামে দুইজনের কাছে বাংলাদেশের গোপনীয় ও গুরুত্বপূর্ণ তথ্য পাচার করতেন।  

২০১৮ সালের শেষের দিকে দেব প্রসাদ সাহা বাংলাদেশের গুরুত্বপূর্ণ তথ্য সম্বলিত একটি পেনড্রাইভ নোম্যানস ল্যান্ড পার হয়ে ভারতে পাচার করে।

পনের দিন পর আবু হানজালা রানার কাছ থেকে এনে আবারও একটি গুরুত্বপূর্ণ তথ্য সম্বলিত পেনড্রাইভ ভারতের এস চক্রবর্তী ও পিন্টুর কাছে হস্তান্তর করে দেব প্রসাদ সাহা।  

গত ২৫ অক্টোবর ঢাকার কমলাপুরের একটি হোটেল থেকে ডিজিএফআই ও র‌্যাবের হাতে সৈনিক শাহানেওয়াজ শাহিন আটক হন। এ সময় তার কাছ থেকে গুরুত্বপূর্ণ একটি পেনড্রাইভ উদ্ধার হয় এবং ভারতের কাছ তথ্য পাচারের বেশ কিছু তথ্য দেন।

পরে বিষয়টি পুলিশ হেড কোয়ার্টার্স তদন্ত কমিটি গঠনের মাধ্যমে অনুসন্ধানে নামে। তদন্তে তাদের মোবাইল ফোনের কললিস্ট ও ভারতের পুলিশ সুপার আব্দুল্লাহ আরেফের সাথে কথোপকথনের ভিডিও সিডির মাধ্যমে ভারতে বাংলাদেশের তথ্য পাচারের বিষয়টি উঠে আসে।

ফলে সেনা সদস্য শাহনেওয়াজ ও অফিস সহকারি আবু হানজালার মাধ্যমে তথ্য সংগ্রহ করে ভারতে পাচারের বিষয়টিও দেব প্রসাদ স্বীকার করেছে মর্মে তারা রাষ্ট্রবিরোধী কর্মকাণ্ডে জড়িত বলে জানা যায়। সে কারণে আমর্ড পুলিশ ব্যাটালিয়নের সদস্য দেব প্রসাদ সাহাকে আটকের পর মামলা দিয়ে ১০দিনের রিমান্ড চেয়ে আদালতে প্রেরণ করা হয়েছে।

 

নিউজ টোয়েন্টিফোর/কামরুল