এক.
সাকিব একজন খ্যাতিমান ক্রিকেটার- এই তথ্যটা সঠিক নয়, সত্যও নয়। সত্য হচ্ছে- সাকিব একজন মুসলমান। সাকিবকে ঘোষণা দিয়ে বলতে হয়- তিনি একজন ‘গর্বিত মুসলমান’। মানুষ, ক্রিকেটার- এসব ছাপিয়ে সাকিব একজন ‘গর্বিত মুসলমান’- এই পরিচয়টাই বড় এখন।
দুই.
ঘটনার শুরু কলকাতায় সাকিব কালি পুজা উদ্বোধন করেছেন- এমন একটি সংবাদে। একজন সেলিব্রেটি ক্রিকেটার কালি পূজা উদ্বোধন করলে কি ক্ষতি হয়- তা নিয়ে এই বাংলাদেশে আলোচনার সুযোগ নাই। সাকিব আসলেই কালি পুজা উদ্বোধন করেছেন কী না- তা পরিষ্কার করার দায়িত্বও কোনো মিডিয়া বা তার ভক্তরা কেউ জোড়া্লোভাবে নেয়নি।
তিন.
পশ্চিমের খ্রীষ্টানদের দেশে ঈদের মাঠে এমনকি মসজিদের ভেতর অনুষ্ঠিত ঈদের জামাতেও অমুসলিম জনপ্রতিনিধিরা আসেন, এসে নামাজীদের উদ্দেশে বক্তৃতা করেন। জনপ্রতিনিধিদের সেখানে আমন্ত্রন জানিয়েই আনা হয়। মসজিদের ভেতর ভিন্নধর্মী জনপ্রতিনিধিদের যাওয়া এবং মুসলমানদের ঈদের জামাতে বক্তৃতা করা নিয়ে কোথা্ও কোনো আপত্তির কথা শোনা যায় নি। সাকিবের হিন্দু ধর্মাবলম্বীদের পুজা ‘উদ্বোধন’ এর খবর প্রকাশিত হলে সাকিবকে ক্ষমা চাইতে হয়, ব্যাখ্যা দিতে হয়- সেখানে তিনি আসলে কি করেছেন। সাকিবকে প্রতিশ্রুতি দিতে হয়- তিনি আর কখনো এমন কাজ করবেন না। কি চমৎকার একটি দেশ।
চার.
কিসের ভয় সাকিবকে এভাবে ক্ষমা চাইতে হয়! সেটি কি মুসলমানদের ক্ষোভের কারণেই! সেটি সত্য হলে আমরা যে ইসলামকে শান্তির ধর্ম বলি, সেই বক্তব্যটি কি প্রশ্নের সম্মুখীন হয়ে যায় না!
সাকিবের কালি পুজা উপাখ্যান নিয়ে যতো ক্ষোভ হয়েছে, তাকে প্রাণে মেরে ফেলার ঘোষণার বিরুদ্ধে কি ততোটা প্রবল প্রতিবাদ হয়েছে?
পাঁচ.
ভিডিও বার্তায় সাকিবকে মেরে ফেলার ঘোষণা দেয়া যুবকটিকে কি গ্রেফতার করা হয়েছে? একজন দেশ সেরা ক্রিকেটারকে মেরে ফেলার হুমকি দেয়া হয়, সেই হুমকিতে ভীতসন্ত্রস্ত হয়ে ক্রিকেটার ক্ষমা চান, আর কখনো এমনকি করবেন না বলে অনেকটা নাকে খত দেয়ার মতোই করেন, অথচ রাষ্ট্র প্রাণনাশের হুমকি দাতাকে কিছুই বলে না! কি চমৎকার ব্যবস্থা!
শওগাত আলী সাগর, প্রধান সম্পাদক , নতুন দেশ , কানাডা।
news24bd.tv নাজিম
