এই দশকটা বাংলাদেশের

এই দশকটা বাংলাদেশের

অনলাইন ডেস্ক

আমেরিকা দেশটাতে চাইনিজ ও ভারতীয়দের খুব দাপট। এদেশের ডাক্তার, ইঞ্জিনিয়ার, গবেষক, অধ‍্যাপক এমন বহু প্রফেশনে চাইনিজ ও ভারতীয়রা একটা আলাদা জায়গা করে নিয়েছে। তার প্রধান কারণ হলো, গতো চল্লিশ-পঞ্চাশ বছর ধরে, চীন ও ভারত থেকে লক্ষ-লক্ষ ছেলে-মেয়ে আমেরিকায় ঢুকেছে।

উচ্চশিক্ষা ও গবেষণার জন‍্য তারা আসতে শুরু করেছিলো বহু আগ থেকে।

বাংলাদেশীরাও অবশ‍্য পিছিয়ে নেই। হয়তো চাইনিজ কিংবা ভারতীয়দের মতো সংখ‍্যায় ততো না, কিন্তু অনুপাতে একেবারে কম নয়।

উচ্চশিক্ষা ও গবেষণার জন‍্য গত দশ বছরে শুধু চীন থেকেই প্রায় ত্রিশ লক্ষ ছেলে-মেয়ে ঢুকেছে আমেরিকায়। —অবিশ্বাস‍্য! ভারত থেকে ঢুকেছে প্রায় পনের লক্ষ‍।

লক্ষ‍্য করা গেছে, গতো তিন-চার বছর ধরে, এই দেশ দুটো থেকে সমহারে স্টুডেন্ট আসছে। আগের মতো আর বাড়ছে না।  

অন‍্যদিকে, কিছু দেশ থেকে আমেরিকায় স্টুডেন্টরা এখন কম আসছে। যেমন, দক্ষিণ কোরিয়া, জাপান উল্লেখযোগ‍্য। —এর বেশ কিছু কারণ আছে। তাবে উল্লেখ‍যোগ‍্য হলো, গতো বিশ-ত্রিশ বছরে চীন-ভারত কিংবা দক্ষিণ কোরিয়ার প্রচুর ছেলে-মেয়ে আমেরিকা থেকে নিজ নিজ দেশে ফিরে গেছে।
 
সেসব দেশগুলো তাদের মেধাবীদের ফিরিয়ে নেয়ার জন‍্য বিভিন্ন প্রকল্প চালু করেছে। তাছাড়া, সেসব দেশগুলোতে বসেই এখন বিশ্বমানের গবেষণা সম্ভব। ফলে, অনেক স্টুডেন্ট আর গবেষণার জন‍্য দেশ ছাড়ছে না। ওরা ওখানে বসে কাজ করেই আমেরিকার ডাকসাইটে জার্নালগুলোতে প্রকাশ করছে।

বাংলাদেশের ছেলে-মেয়েরা পৃথিবীতে ছড়িয়ে পড়তে শুরু করেছে গত দশক থেকে। ২০০৯-১০ সময়টা ছিলো একটা টার্নিং পয়েন্ট। গত দশকেই সবচেয়ে বেশি স্টুডেন্ট সারা পৃথিবীতে ছড়িয়েছে। গতো পাঁচ বছরে শুধু আমেরিকায় স্টুডেন্টদের সংখ‍্যা বেড়ে দ্বিগুণ হয়েছে।  

আমার ব‍্যক্তিগত ধারণা, এই দশকে বাংলাদেশ থেকে কমপক্ষে ৬-৭ লক্ষ স্টুডেন্ট সারা পৃথিবীতে ছড়িয়ে পড়বে। তারা এরোইঞ্জিনিয়ারিং, কোয়ান্টাম কম্পিউটিং, আরটিফিসিয়াল ইন্টেলেজিন্সি পড়বে। এস্ট্রোনমি, পার্টিকেল ফিজিক্স, জেনেটিক্স পড়বে। ইকনোমিক্স, ল‍্যাঙ্গুয়েজ, জার্নালিজম পড়বে।

এমন বহু এরিয়ায় বিশ্বমানের একটা দক্ষ জনশক্তি তৈরি হবে। এই স্টুডেন্টদের একটা অংশ দেশে ফিরবেই। দেশে নানান ধরণের প্রতিবন্ধকতা থাকা সত্ত্বেও তারা যাবে। আর যদি, রাষ্ট্রীয়ভাবে ফিরিয়ে নেয়ার উদ‍্যোগ থাকে, তাহলে তো কথাই নেই। আগামী দশকে এটার একটা দৃশ‍্যমান প্রভাব সমাজে পড়বে।

ট্রাম্পকে পাত্তা না দিয়ে চলে গেলেন মেলানিয়া, ভিডিও ভাইরাল


গ্যারান্টি দিতে পারবেন মোশতাকরা এখন নেই আওয়ামী লীগে

ফের উত্তাল তিউনেসিয়া

শত্রুদের হামলা ঠেকিয়ে দিলো সৌদি


টেং সিয়াওপিং (Deng Xiaoping)-কে অনেকেই আধুনিক চীনের স্থপতি মনে করেন। সিয়াওপিং আশির দশকে চীনকে রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক ভাবে অনেক ওপেন করে দিয়েছিলেন। অনেকই তখন তাকে বলেছিলো, চীন থেকে হাজার হাজার ছেলে-মেয়ে বিদেশে চলে যাচ্ছে। এটা বন্ধ করার উদ‍্যোগ নিতে।  

তিনি বলেছিলেন, আরো ছেলে-মেয়ে বিদেশে যাওয়া উচিত। এক হাজার থেকে যদি একজনও ফিরে আসে, তাহলেই যথেষ্ট! আজকের চীন-ভারত কিংবা দক্ষিণ কোরিয়ার যে বিকাশ সেটার পেছনে অনেক বড়ো ভূমিকা রেখেছে গতো চার-পাঁচ দশকে সেসব দেশ ছেড়ে ছড়িয়ে পড়া ছেলে-মেয়েরা। সেসব দেশে একধরনে একটা “সেচুরেশন” তৈরি হয়েছে।

এই দশকটা বাংলাদেশের। বাংলাদেশ থেকে অসংখ‍্য ছেলে-মেয়ে এই দশকে পৃথিবীতে ছড়িয়ে পড়বে। ২০১৮-১৯ সালে শুধু চীন থেকে আমেরিকায় স্টুডেন্ট ঢুকেছে সাড়ে তিন লাখের বেশি। গতো বছর করোনার জন‍্য এই সংখ‍্যা অনেক কমে গেছে। ২০২১-২২ সালেও সংখ‍্যাটা আগের মতো বৃদ্ধি পাবে না বলে অনেকেই মনে করে।  

তাহলে এই শ‍ূণ‍্যাসনগুলোতে অন‍্য দেশের ছেলে-মেয়েরা ঢুকবে। এবং বাংলাদেশ অন‍্যতম। আমাদের তরুণদের মধ‍্যে একটা অদম‍্য ইচ্ছেশক্তি দেখা যাচ্ছে। আমাদের ছেলে-মেয়েরা পৃথিবীর সকল সেরা সেরা প্রতিষ্ঠানে কাজ করছে। এখন শুধু সংখ‍্যা বৃদ্ধির সময়। এবং আমি সেই বৃদ্ধি স্পষ্টত দেখতে পাচ্ছি।

রউফুল আলম
নিউইর্য়ক, যুক্তরাষ্ট্র।

news24bd.tv আয়শা

এই রকম আরও টপিক