রহস্যে ঘেরা ‘কঙ্কাল’ হ্রদ

রহস্যে ঘেরা ‘কঙ্কাল’ হ্রদ

অনলাইন ডেস্ক

ভারতের উত্তরখণ্ডের হিমালয়ে পর্বতমালার শৃঙ্গে রূপকুণ্ড হ্রদ নিয়ে প্রচলিত রয়েছে নানা কথা। তবে কঙ্কাল হ্রদ নামেই বেশি পরিচিত রহস্যে ঘেরা এই হ্রদ।

সমুদ্রপৃষ্ঠ থেকে ১৬,৫০০ ফুট উঁচুতে উত্তরাখণ্ডের ত্রিসুলে অবস্থিত রূপকুণ্ড হ্রদ। দীর্ঘদিন বরফের নীচে চাপা পড়ে থাকার পর বরফ গলতেই দেখা মেলে কঙ্কালের।

যেন মানুষের হাড়গোড়ের একটি লেক। আহামরি সৌন্দর্য না থাকলেও কঙ্কালের এই রহস্যের কারণে বিজ্ঞানী, গবেষক ও নৃতাত্ত্বিকবিদদের কাছে আগ্রহের কেন্দ্রবিন্দু এই রূপকুণ্ড হ্রদ।

১৯৪২ সালে ব্রিটিশ এক বনরক্ষক প্রথমবারের মতো এই বরফের চাদরে মোড়া হ্রদে মানুষের হাড় দেখতে পান। বছরের আট মাস হ্রদটি বরফে ঢাকা থাকলেও বরফ গলতে গলতে হাড়গোড় ও কঙ্কালের সংখ্যাও বাড়তে থাকে।

প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হয় ৮৭০ বছর আগে তুষারঝড়ে ভারতীয় কোন এক রাজা, রানিসহ তাদের সতীর্থদের সলিল সমাধি হয় এখানে। আরেকটি গবেষণায় বলা হয়, অবশিষ্ট কঙ্কালগুলো ভারতীয় যোদ্ধাদের, যারা ১৮৪১ সালে তিব্বত দখলের চেষ্টা করেছিলো। তাদেরকে প্রতিহত করা হলে পিছু হটতে গিয়ে এই হ্রদে তাদের মৃত্যু হয়। আবার অনেকেই বলেন, মহামারিতে মারা যাওয়াদের দেহাবশেষ এখানে সমাহিত করা হতো।
news24bd.tv

আবার গ্রামাঞ্চলের প্রচলিত বিশ্বাস মতে, নন্দাদেবীর তৈরি করা ঝড়ের কবলে পড়ে মানুষের মৃত্যু হয়। তবে প্রথম দিকে কঙ্কালগুলো পর্যালোচনা করে জানানো হয়, লেকে যাদের মৃত্যু হয় তাদের সবার দৈহিক উচ্চতা স্বাভাবিক মানুষের উচ্চতার চেয়ে বেশি। তাদের অধিকাংশই মধ্য বয়সী। যাদের বয়স ৩৫ থেকে ৪০ এর মধ্যে। তবে কিছু নারীর কঙ্কালের সন্ধান পাওয়া যায়। এছাড়া মৃতদের সবাই সুস্বাস্থ্যের অধিকারী ছিলেন বলেও ঐ গবেষণায় উল্লেখ করা হয়। বলা হয়, কোনো একটি নির্দিষ্ট ঘটনায় এক দল মানুষের মৃত্যু হয়েছে এখানে।


ফাহাদ মুস্তফা যেন দাঁড়িসহ দীপিকা!

পরবর্তী নির্বাচনে আবারও অংশ নিবেন ডোনাল্ড ট্রাম্প

ইরানের সমঝোতা প্রস্তাব প্রত্যাখ্যানে হতাশ যুক্তরাষ্ট্র

খাশোগি হত্যাকান্ড: রহস্যজনকভাবে বদলে গেল প্রতিবেদনে অভিযুক্তের নাম


সবশেষ টানা ৫ বছর ভারত, যুক্তরাষ্ট্র-জার্মানভিত্তিক ১৬টি প্রতিষ্ঠান ও ২৮ জন গবেষক তাদের গবেষণায় বলেছে এ সব ধারণা সত্য নাও হতে পারে। ১৫ নারীসহ ৩৮টি দেহাবশেষের জেনেটিক পরীক্ষা করেছেন বিজ্ঞানীরা। এই মরদেহের সবগুলোই ১২০০ বছর আগের। তারা বলছেন আলাদা আলাদা সময়ে তাদের মৃত্যু হয়েছে। রূপকুণ্ডের এই কঙ্কাল হ্রদ আজো এক রহস্য হলেও নির্দিষ্ট একটি ঘটনায় তাদের মৃত্যু হয়নি বলে জানিয়েছেন হার্ভার্ড ইউনিভার্সিটির গবেষক ইয়াডাওইন হার্নে।

news24bd.tv

সাম্প্রতিক গবেষণায় আরো দেখা যায়, এই হ্রদে মেলা কঙ্কালের মধ্যে বর্তমানে দক্ষিণ এশিয়ায় বসবাসরত মানুষের সঙ্গে মিল পাওয়া গেছে। এমনকি ইউরোপ ও গ্রিক আইল্যান্ডের মানুষের সঙ্গে সাদৃশ্য পাওয়া গেছে।
কারো কারো আবার দাবি, বহু বছর আগে স্থানীয় গাইডদের সাহায্যে তীর্থযাত্রায় এসেছিল একটি দল। আচমকা মারাত্মক শিলাবৃষ্টির কারণে মৃত্যু হয় গোটা দলটির। প্রতিটি খুলির মাঝে ফাটল, এটা ছিল কঙ্কালগুলির বৈশিষ্ট্য। ছোট কিন্তু এই গভীর আঘাত থেকেই মৃত্যু হয়েছিল বলে দাবি করেছেন গবেষকরা।

তবে যে কারণেই হোক আজও এই হ্রদের রহস্য ভেদ করতে পারেনি কোন বিজ্ঞানী বা গবেষকেরা। এই পর্বত শৃঙ্গে এতো কঙ্কাল কী করে এলো তা আজও এক রহস্যই থেকে গিয়েছে।

news24bd.tv / নকিব