মাদাগাস্কারের ক্ষুদে গিরগিটি: পৃথিবীর ক্ষুদ্রতম সরীসৃপ

মাদাগাস্কারের ক্ষুদে গিরগিটি: পৃথিবীর ক্ষুদ্রতম সরীসৃপ

Other

বিজ্ঞানীরা বিশ্বাস করছেন যে তারা পৃথিবীর সবচেয়ে ছোট সরীসৃপ আবিষ্কার করেছেন। এটি ক্ষুদে গিরগিটির একটি প্রজাতি। একটি জার্মান-মাদাগাস্কার অভিযান দল সম্প্রতি মাদাগাস্কারে এ প্রজাতির দুটি ক্ষুদে গিরগিটি আবিষ্কারের কথা জানিয়েছে।

ক্ষুদে গিরগিটিটির নাম রাখা হয়েছে ব্রুকেশিয়া নানা বা ন্যানো-ক্যামেলিয়ন।

বাংলায় আমরা এটিকে ক্ষুদে গিরগিটি বলবো। এই প্রজাতির কাছাকাছি আরেকটি প্রজাতি আবিষ্কারের কথা ২০১২ সালে ঘোষণা করা হয়েছিলো। যার নাম ব্রুকেশিয়া মাইক্রা। এটি ব্রুকেশিয়া নানার চেয়ে সামান্য বড় বা লম্বা।

মিউনিখের ব্যাভারিয়ান স্টেট কালেকশন অব জুলজির মতে এটি প্রায় সাড়ে এগার হাজার পরিচিত প্রজাতির সরীসৃপের মধ্যে সবচেয়ে ছোট। পুরুষ ব্রুকেশিয়া নানা বা ক্ষুদে গিরগিটির লেজবিহীন দেহের দৈর্ঘ্য মাত্র ১৩.৫ মিমি। আর মাথা থেকে লেজ পর্যন্ত দৈর্ঘ্য ২২ মিমি (০. ৮৬ ইঞ্চি)।

news24bd.tv

ইনস্টিটিউট ফেব্রুয়ারি প্রথম সপ্তাহে জানায়, স্ত্রী প্রজাতির ক্ষুদে গিরগিটির দৈর্ঘ্য প্রায় ২৯ মিলিমিটার। যা পুং প্রজাতির তুলনায় অনেক বড়। তবে ব্যাপক প্রচেষ্টা করেও এখনো অন্য কোনো নমুনা সংগ্রহ সম্ভব হয়নি। অন্য নমুনা সংগ্রহ করা গেলে তুলনা করে এর আকৃতি সম্পর্কে নিশ্চিত হওয়া যাবে।

ব্যাভারিয়ান স্টেট কালেকশন অব জুলজির সরীসৃপ বিশেষজ্ঞ ফ্র্যাংক গ্ল বলেন, তার সহকর্মীরা স্ত্রী গিরগিটিটির সিটি স্ক্যান করে দেখতে পেয়েছেন যে এর পেটে দুটি রয়েছে। ফলে তারা এটি পূর্ণবয়স্ক বলে নিশ্চিত হয়েছেন। আর পুং গিরগিটির ক্ষেত্রে এর যৌনাঙ্গ পূর্ণবিকশিত দেখতে পেয়েছেন। সুতরাং এটির বয়স সম্পর্কেও তারা অনেকটা নিশ্চিত।

news24bd.tv

সায়েন্টিফিক রিপোর্টস জার্নাল বলেছে, ‘নতুন গিরগিটি কেবল উত্তর মাদাগাস্কারের রেইন ফরেস্ট রয়েছে এবং বন উজাড়ের কারণে এটি বিলুপ্তির হুমকির সম্মুখীন হতে পারে। ’

হামবুর্গের সেন্টার অফ ন্যাচারাল হিস্টোরির বিজ্ঞানী অলিভার হাওলিটসেক বলেছেন, ‘দুর্ভাগ্যক্রমে ন্যানো-গিরগিটির আবাসভূমি বন উজাড়ের শিকার হয়েছে। তবে অঞ্চলটি সম্প্রতি সুরক্ষার আওতায় আনা হয়েছে। সুতরাং প্রজাতিটি বেঁচে থাকবে বলে আশা করা যায়।

গবেষকরা দেখতে পেয়েছেন যে এটি রেইন ফরেস্টের মাটিতে উই পোকা শিকার করে এবং রাতে শিকারী প্রাণীদের কাছ থেকে বাচঁতে ঘাসের পাতার নীচে লুকিয়ে থাকে। এর গায়ের রঙ ধূসর গেরুয়া। এরা রঙ বদলায় না। এরা খুব ধীরে চলাফেরা করে এবং গায়ের রঙের কারণে শুকনো ঝরা পাতার সঙ্গে ক্যামোফ্লাজ করে থাকতে পারে।


আরও পড়ুনঃ


তিন দিনে মারা গেল তিনটি বাঘ

সাকিবকে ধন্যবাদ আলোচনাটা শুরু করার জন্য

৫ বছরের শিশুর মা হওয়ার অমীমাংসিত রহস্য

পত্রিকার সাংবাদিকগুলো বিসিএস ক্যাডার চাকরিটাকে বিশাল কিছু বানিয়ে ফেলেছেন


একটি ব্লগ পোস্টে আবিষ্কারের সাথে জড়িত অন্যতম গবেষক ড. মার্ক শের্জ জানান, এটিকে চরম ক্ষুদ্রায়নের বিস্ময়কর দৃষ্টান্ত উল্লেখ করে  ব্রুকেশিয়া যে বনগুলোতে রয়েছে সেগুলো এখনো দ্বীপের উত্তরাঞ্চলে অন্যান্য দ্বীপের সাথে ভালভাবে সংযুক্ত রয়েছে।   তাই এটি ক্ষুদ্র দ্বীপে ক্ষুদ্র প্রাণী প্রাপ্তির ধরন লংঘন করে। অর্থাৎ এর ক্ষুদ্রায়নের কারণ ভিন্ন।

বিজ্ঞানীরা তাদের প্রতিবেদনে সুপারিশ করেন যে এই গিরগিটি এবং এর আবাসস্থলকে রক্ষায় সহায়তার জন্য এটিকে আন্তর্জাতিক ইউনিয়ন ফর কনজারভেশন অব নেচারের (আইইউসিএন) হুমকির সম্মুখীন প্রজাতির লাল তালিকায় অতি বিপন্ন হিসাবে তালিকাভুক্ত করা উচিত।

news24bd.tv / নকিব