যেসব কারণে জাহান্নামের শাস্তি ভোগ করতে হবে

যেসব কারণে জাহান্নামের শাস্তি ভোগ করতে হবে

অনলাইন ডেস্ক

এই দুনিয়ার জীবন ক্ষণিকের। জান্নাত মানুষের শেষ ও চিরস্থায়ী বাসস্থান। এই জীবনের পরেই শুরু হবে পরকালের চিরস্থায়ী জীবন। যে জীবনের শুরু আছে শেষ নেই।

দুনিয়ার জীবনে যারা সফল পরকালের চিরস্থায়ী জান্নাতই তাদের শেষ ও চূড়ান্ত ঠিকানা। যারা দুনিয়ার জীবনে ব্যর্থ তাদের পরিণাম জাহান্নাম। যারা আল্লাহর দ্বীনকে অস্বীকার করে। নবীর দেখানো পথকে অস্বীকার করে তারাই চিরস্থায়ী জাহান্নামী।
এটি ইসলাম ধর্মে বলা আছে। এছাড়া যারা আল্লাহর দ্বীনকে একমাত্র দ্বীন মনে করে আল্লাহ খুশির জন্য ইবাদত করে তারাই জান্নাতি। এমন ধারণা আমাদের মধ্যে আছে। কিন্তু কে জান্নাতে যাবে আর কে জাহান্নামী এটা কেবল একমাত্র আল্লাহ জানেন। আবার এমন মানুষ আছে যারা আল্লাহর দ্বীনকে সারাজীবন অস্বীকার করে মৃত্যুর আগে কালেমা পড়ে মুসলমান হয়ে মৃত্যুবরণ করেছে।

আবার ইমানদার ব্যক্তিও মৃত্যুর আগে বেঈমান হয়ে মারা গেছে। এমন দৃষ্টান্তও রয়েছে এ মহাজগতে।   প্রত্যেক মুসলমান তার কর্মকাণ্ডের ফল ভোগ করে একদিন না একদিন জান্নাতে যাবেন। তবে যেসব কাজের কারণে মুসলমানকে জাহান্নামের শাস্তি ভোগ করতে হবে। আসুন জেনে নেই সেগুলো-

১. হারাম খাদ্য ভক্ষণকারী জান্নাতে যাবে না
২. আত্মীয়তার সম্পর্ক ছিন্নকারী জান্নাতে যাবে না
৩. প্রতিবেশীকে কষ্ট দানকারী জান্নাতে যাবে না
৪. মাতা-পিতার অবাধ্য সন্তান, দাইউস ও পুরুষের বেশ ধারণকারীণী জান্নাতে যাবে না
৫. অশ্লীলভাষী ও উগ্রমেজাজী জান্নাতে যাবে না
৬. অধীনস্থদেরকে ধোঁকাদানকারী শাসক জান্নাতে যাবে না
৭. অন্যের সম্পদ আত্মসাৎকারী জান্নাতে যাবে না
৮. খোটাদানকারী, অবাধ্য সন্তান ও মদ্যপ জান্নাতে যাবে না
৯. চোগলখোর জান্নাতে যাবে না
১০. অন্য পিতার সাথে সম্বন্ধকারী জান্নাতে যাবে না
১১. গর্ব-অহংকারকারী জান্নাতে যাবে না
১২. রাসূলুল্লাহ (সা.)-এর নাফরমান জান্নাতে যাবে না
১৩. দুনিয়াবী উদ্দেশ্যে ইলম অর্জনকারী জান্নাতে যাবে না
১৪. অকারণে তালাক কামনাকারীণী জান্নাতে যাবে না
১৫. কালো কলপ ব্যবহারকারী জান্নাতে যাবে না
১৬. রিয়াকারী জান্নাতে যাবে না
১৭. ওয়ারিসকে বঞ্চিতকারী জান্নাত থেকে বঞ্চিত হবে


উল্লেখ্য, আল্লাহ তাআলা নিজ দয়া ও ইনসাফের ভিত্তিতে এদের মধ্যে যাকে খুশি ক্ষমা করে দেবেন যদি সে শিরক থেকে দূরে থাকে। কেননা আল্লাহ তাআলা বলেন-

‘নিঃসন্দেহে আল্লাহ সেই ব্যক্তিকে ক্ষমা করেন না, যে ব্যক্তি তাঁর সাথে শরিক করে। তিনি ক্ষমা করেন এর নিম্ন পর্যায়ের পাপ, যার জন্য তিনি ইচ্ছা করেন। ’ (সুরা নিসা : আয়াত ৪৮)

তাছাড়া রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, ‘যে ব্যক্তি এমন অবস্থায় মারা গেল যে, (জীবিত অবস্থায়) সে ভালো করে জানত, ‘আল্লাহ্ ছাড়া আর কোনো সত্য মাবুদ নেই, সে ব্যক্তি অবশ্যই জান্নাতে প্রবেশ করবে। ’ (মুসলিম)

আবার পরকালের ফয়সালার সময় ঈমান থাকা সত্বেও আল্লাহ তাআলা যাদেরকে ক্ষমা করবেন না তাদেরকে তিনি জাহান্নামের আগুনে নিক্ষেপ করবেন। পাপের শাস্তি ভোগ করার পর আল্লাহ তাআলা তাদেরকে জান্নাতে প্রবেশ করাবেন।

কবিরা গোনাহে জড়িত ব্যক্তিরা প্রথম পর্যায়ে জান্নাতে প্রবেশকারীদের সঙ্গে জান্নাতে প্রবেশ করবে না বরং জাহান্নামের শাস্তি ভোগ করে পরিশেষে জান্নাতে প্রবেশ করবে। কোনো তওহীদপন্থী ব্যক্তিই কাফেরদের মতো চিরস্থায়ীভাবে জাহান্নামে অবস্থান করবে না। আর এটাই হলো আহলুস সুন্নাহ ওয়াল জামাআতের আকিদাহ।

আল্লাহ তাআলা মুসলিম উম্মাহকে হাদিসে ঘোষিত জান্নাতের অন্তরায় কাজগুলো থেকে বিরত থাকার তাওফিক দান করুন। হাদিসের ওপর যথাযথ আমল করার তাওফিক দান করুন। আল্লাহ বিধান যথাযথ বাস্তবায়ন করে জান্নাত লাভের তাওফিক দান করুন। আমিন।

news24bd.tv/আলী