আমাদের সম্মিলিত রথ

অলংকরণ: কামরুল

জন্মদিনের শুভেচ্ছা

আমাদের সম্মিলিত রথ

অনলাইন ডেস্ক

১.
রাত্রি পাড়ি দিয়ে মহাকাল গেছি
তোমার অবহেলাটুকু তবু যাচি আনমনে
ভোরের আলোর উত্থানে

২.
মহাপ্রাণ
জেগে উঠেছ
আমার ভেতর থেকে
মহাধ্বনি পেয়েছ কণ্ঠে
মহাকাল
মহাপ্রেম এই
জীবন ও জগৎ
হারালেই 
শূন্যে জেগে ওঠে
শূন্যে শূন্যে মায়া
তোমার প্রচ্ছায়া
পুনরায়
জেগে উঠলেই
জগৎধামে
মহাপ্রয়াণে

৩.
সকাল ওড়ে গেছে।  
এখন দুর্বৃত্তকাল অন্তরের।
মায়া নাই প্রেম নাই— না দহন
কেবল শূন্য থেকে শূন্যে আরোহন
তুমি আছ বলে
সনূহ জঞ্জাল
মন বাঁধা পড়ে নাই
শূন্যরে শুধাই বৃথাই
কার তরে তবে
জগতে কেউ চিরদিন 
নাই রবে
তবুও তোমার কলরবে
বেঁচে যেতে চাই
আনন্দউৎসবে

৪.
এখন সকাল 
আমাদের প্রদাহকাল 
কোনোদিন 
দেখে নাই ভোর 
যৌথ সমুদ্দুর
দেখে নাই আলো
এত জমকালো রাত 
যদি ভোর না হয়
না হয় সূর্যোদয় 
ভাবো
কত অভিনব পথ
পাড়ি গেছে মহাকাল 
কত ঊনহৃদয় করেছে চিৎকার
ইতিহাসে 
আর 
হাঁসফাঁসে মরে গেছে কত কত 
অন্তরের জান
কত যন্ত্র ও দানব
কত জানপ্রাণ 
আমারে কাঁদান 
যতটা পারেন
আপনার কঠিন হৃদয়ের দান।

৫.
হারানো পথ
আমাদের সম্মিলিত রথ 
পড়ে থাক—

আর যত অনাচার
আমাদের যৌথ হাহাকার 
ভেসে বেড়াক আকাশে তুমুল

তোমার সমূল কেহ নাই
জগতে প্রেম ও পরিণয় বৃথাই
মানি না—

জানি না আলোর উদ্গীরণ
তোমার কিরণ কোথায় পড়ে না পড়ে
জগতের সমূহ বিস্তারে
জেনে রাখ মন দিয়ে মন 
নিরলের ধন
খুঁজে পায় সম্মোহন
গোপন আপন।


৬.
নাও
যতটুকু পার
তার ভাগটুকু দাও
আগুনের সমস্ত শিখার সমান
কার মন পুড়ে
কে কারে কতটুকু জুড়ে
আগুনেরে কোলে লয়ে যান!

সকলি আলো
আপনার জমকালো রূপ
যতেক স্বরূপ আজ
পথে পথে কাঙাল

রাত্রি পোহায়ে গেলে
যত ভাব ও ভাণ সব গোলমাল
নাই হয়ে যায়
নাই হয় অন্তরকাল!

তখনো সকাল
তখনও হয় নি ভোর
এত ঘমঘোর আকাশ
চারদিক ঘিরে আছে

চারপাশ
যত হাঁসফাঁস মনে
কার উৎপীড়ণে মন
খারাপ হয়

অকারণ
কার তরে কত কথা সয়
যত অবক্ষয়
এই প্রাণ
যতেক মহান রাত্রি
কালাকাল
যত জঞ্জাল মনে আছে
তার সবটুকু হৃদয়ের কাছে রেখে
হারিয়ে যাওয়া ভালো

তোমার কালো কালো রূপ
নিশ্চেতনার আলো
খেয়েছে আমারে
খেয়েছে তোমার ভাগ
আমাদের যত প্রেম ভেসে যায়
কার প্ররোচনায়
কত কত সংরাগ!

৭.
জলের স্বভাব তোমার 
পাত্র উপচে থাকো।
নিজের কপালে আঁকো
দীর্ঘতম রেখা—
সেসব তোমার যত আঁকা
এতসব বক্ররেখা
ভাষা জানি না ।

৮.
আমার কেহ নাই 
নাই তোমারও কেহ
কেবল নদীর প্রবাহ বহিতেছে
আর নড়িতেছে তালগাছ

আমাদের যত উপহাস 
যত কান্না জীবনে আছে
কেউ কিছু বলে পাছে

কেহ কাড়িয়া নেয় কারো ধন
আমার অমূল্য রতন--

লেখক পরিচিতি : জন্ম ২১ মাঘ ১৩৭২, ৩ ফেব্রুয়ারি ১৯৬৬; নেত্রকোনাজেলায়। ইংরেজিভাষা ও সাহিত্যে বিএ (অনার্স), এমএ।

পেশা: গবেষণা। প্রকাশিত বই : কবিতা— অতিক্রমণের রেখা [শ্রাবণ প্রকাশনী, ২০০০ সকল বিকেল আমাদের অধিকারে আছে [জয়ামি, ২০০৪ অবিচল ডানার উত্থান [জয়ামি, ২০০৬ আদিপৃথিবীর গান [পাঠসূত্র, ২০০৭ আগুন ও সমুদ্রের দিকে [পাঠসূত্র, ২০০৯ আনন্দবাড়ি অথবা রাতের কঙ্কাল [অ্যাডর্ন পাবলিকেশন, ২০১০ প্রেম, মৃত্যু ও সর্বনাম [প্রকৃতি, ২০১৪ অতিক্রমণের রেখা (নির্বাচিত কবিতা) [লোক, ২০১১ ভূখণ্ডে কেঁপে ওঠে মৃত ঘোড়ার কেশর [শুদ্ধস্বর, ২০১৩ রাজার পোশাক [শ্রাবণ প্রকাশনী, ২০১৪ অনেক উঁচুতে পানশালা [চৈতন্য, ২০১৪ দাহকাব্য [শমপ্রকাশ, ২০১৫ শ্রীমতি প্রজাপতি রায় [তিউড়ি প্রকাশন, ২০১৭ এখান থেকে আকাশ দেখা যায় [তিউড়ি প্রকাশন, ২০১৮, মহিমারবাগান, [তিউড়িপ্রকাশ ২০২২,যখনকিছুইছিলনা [ উজানপ্রকাশন ২০২৩
প্রবন্ধ— সমূহ সংকেতের ভাষা [শ্রাবণ প্রকাশনী, ২০০১ কলমতালাশ : কবিতার ভাব ও বৈভব [শ্রাবণ প্রকাশনী, ২০১৪ কবিতার নতুন জগৎ [ঐতিহ্য, ২০১৭, ভাষারাজনীতি ও আধিপত্যএবংঅন্যান্যপ্রবন্ধ ২০২২
পুরস্কার ও সম্মাননা: বগুড়ালেখকচক্রপুরস্কার ২০১৫, শব্দগুচ্ছপুরস্কার ২০১৫, লোকপুরস্কার ২০১৬

news24bd.tv/ডিডি