প্রাণিজগতে ক্ষমতাবদল কীভাবে হয়?

প্রাণিজগতে ক্ষমতাবদল কীভাবে হয়?

অনলাইন ডেস্ক

মৌমাছি, শিম্পাঞ্জী, হায়েনা, ক্লাউনফিশ ইত্যাদি প্রাণীরা প্রত্যেকেই দলবদ্ধভাবে চলাফেরা করে। তবে এদের মধ্যে সবচেয়ে বড় মিল হল এদের প্রত্যেকটা দলই কোন একজন সুনির্দিষ্ট নেতার অধীনে পরিচালিত হয়।

শুধু এই প্রাণীরাই নয়, প্রাণিজগতে আরও অনেক প্রাণীই দলবদ্ধভাবে কোন নেতার অধীনে চলে। কিন্তু প্রাণিজগতের এই নেতৃত্বের হাতবদল অনেক ক্ষেত্রেই ভিন্ন ও জটিল উপায়ে হয়ে থাকে।

দেখে নেয়া যাক প্রাণিজগতে ক্ষমতার কীভাবে হয়।

পাশবিক বলপ্রয়োগ

জিনগত বৈশিষ্টের দিক থেকে শিম্পাঞ্জীকে মানুষের সবচেয়ে নিকটাত্মীয় বলা যায়। তবে শিম্পাঞ্জী দলের নেতা নির্বাচন মানুষের থেকে অনেকটাই আলাদা। অনেকটাই আদিম মানুষের মত।

এদের নেতা নির্বাচিত হয় কে দলের মধ্যে সবচেয়ে শক্তিশালি ও বর্বর তার উপর নির্ভর করে।

সেন্ট পলের মিনেসোটা বিশ্ববিদ্যালয়ের নৃবিজ্ঞান এবং বাস্তুশাস্ত্র, বিবর্তন এবং আচরণ বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক মাইকেল উইলসন বলেন, "মানব সমাজে, বিশেষত উদার গণতন্ত্রগুলিতে আমাদের এমন একটি নেতার ধারণা রয়েছে যে তাদের নিজস্ব স্বার্থের বাইরে গিয়ে গোষ্ঠীর স্বার্থ সম্পর্কে চিন্তাভাবনা করে। এবং আমি মনে করি গোষ্ঠীভিত্তিক প্রাণীদের মধ্যে নেতৃত্বের ধারণা এরকম নয়। "

তিনি বলেন, "শিম্পাঞ্জিদের ভিতরে যারা শক্তিশালি তারা যা চায় তাই পেতে পারে। "


আত্ম-সমালোচনা হতে পারে ক্ষতির কারণ


একটি আলফা মেল সাধারণত তিন থেকে পাঁচ বছর ধরে দলের ভিতরে নিজের অবস্থান ধরে রাখতে সক্ষম হয়। এসময়ে কোন উঠতি বয়সি পুরুষ যদি কোন চ্যালেঞ্জ তৈরি করতে চায়, যেমনঃ যেখানে আলফা মেল ঘুমাচ্ছে এমন সময়ে সেই গাছ কাঁপানো এবং সাধারণত অন্যান্য আক্রমণাত্মক আচরণ। কখনও কখনও তাদের চ্যালেঞ্জ এতোটাই হিংস্র হয় যে লড়াইয়ে মৃত্যুর ঘটনাও ঘটে।

উত্তরাধিকার

উত্তরাধিকার সূত্রেও কোন কোন প্রানির মধ্যে নেতৃত্ব বদল হতে দেখা যায়।

news24bd.tv

আফ্রিকার সবচেয়ে ভয়ংকর প্রাণীদের মধ্যে অন্যতম হায়েনা। হায়েনাদের মধ্যে উত্তরাধিকার সূত্রে দলের ক্ষমতার হাতবদল হয়। এরা সাধারণত মাতৃ প্রধান পরিবারের ন্যায় বাস করে অর্থাৎ, দলের নেতা হন কোন নারী। কোন কারণে সেই নারী মারা গেলে তার কনিষ্ঠতম কন্যা দলের দায়িত্ব নেয়।


ডেনসিটি অ্যানোমালি: পানির অনন্য বৈশিষ্ট্য


আবার, ক্লাউনফিশ একটি বিশেষ অস্বাভাবিক উপায়ে ক্ষমতা স্থানান্তর করে। দলের সবচেয়ে বড় মাছটি থাকে নারী এবং দলের প্রধান।

news24bd.tv

সে মারা গেলে সবচেয়ে বড় পুরুষ মাছটি তার লিঙ্গ পরিবর্তন করে প্রজননকারী নারীতে পরিণত হয়। এই রূপান্তরটি জৈবিকভাবে তাদের মধ্যে স্বাভাবিক।

ফাইট ক্লাব

পিঁপড়া, মৌমাছি ইত্যাদি পোকামাকড় সমাজে রানী মারা গেলে তার উত্তরাধিকার কেউ থাকে না। তখন যে সবার মাঝে বিজয়ী হয় সে তার দল নিয়ে আলাদা কলোনি তৈরি করে।

news24bd.tv

যুক্তরাজ্যের ব্রাইটনের সাসেক্স বিশ্ববিদ্যালয়ের ল্যাবরেটরি অফ এপিকালচার অ্যান্ড সোশ্যাল ইনসেক্টস-এর অধ্যাপক ফ্রান্সিস রটনিক্স বলেন, "রানীকে প্রতিস্থাপন করা কঠিন কিছু নয়। এদের একটি কলোনী সাধারণত গ্রীষ্মকাল পর্যন্ত স্থায়ী হয়। সময়ের সাথে রানী তার কলোনী তৈরি করে এবং একইসাথে সে নিজেও ঝলমলে হয়ে ওঠে। "


অস্ট্রেলীয় বিজ্ঞানীদের 'প্রাগৈতিহাসিক' কুমির আবিষ্কার


তবে কিছু পতঙ্গের মধ্যে মৌমাছিরা তাদের রানী প্রজননক্ষম থাকা পর্যন্ত তাকে রানী হিসেবে মর্যাদা দেয়। কোন কোন ক্ষেত্রে তা ২০ বছর পর্যন্ত স্থায়ী হতে পারে।

সুত্রঃ সিএনএন

news24bd.tv / নকিব