বঙ্গবীরের অসীম বীরত্ব (ভিডিও)

অন্তরা বিশ্বাস

বঙ্গবীর কাদের সিদ্দিকী। বাংলাদেশের একমাত্র মুক্তিযোদ্ধা যিনি সেনাবাহিনীর সদস্য না হয়েও বীর উত্তম খেতাব পেয়েছিলেন। একাত্তরে কাদের সিদ্দিকী ছিলেন পাকিস্তানী সেনাদের কাছে এক ত্রাসের নাম। কাদের সিদ্দিকীর কথা মুক্তিযুদ্ধের সময় উঠে আসে জাতিসংঘেও।

তিনি তৈরি করেছিলেন কাদেরিয়া বাহিনী। স্বল্প অস্ত্র নিয়ে অসীম সাহসে অগনিত যুদ্ধে বাহিনী নিয়ে ঝাঁপিয়ে পরতেন কাদের সিদ্দিকী।  

বাঘা কাদের। একাত্তরে কাদের সিদ্দিকীকে এই নামেই চিনত সবাই।

গঠন করেছিলেন দুর্ধর্ষ কাদেরিয়া বাহিনী। যে বাহিনীতে ছিলেন ১৭ হাজার মুক্তিযোদ্ধা আর ৭০ হাজার স্বেচ্ছাসেবক। তারা মুক্তিযুদ্ধের সময় ৭০ টিরও বেশি যুদ্ধ করেন। আগরতলা ষড়যন্ত্র মামলা, ঊনসত্তরের গণঅভ্যূত্থান, সত্তরের নির্বাচনের সময় আওয়ামী লীগের পক্ষে সরাসরি কাজ করেন তিনি।

 বঙ্গবন্ধুর সাতই মার্চের ভাষণকেই মুক্তিযুদ্ধে নামার ইঙ্গিত বলেই মনে করেছিলেন বঙ্গবীর। ৩রা এপ্রিল ১৯৭১। পাকিস্তানীরা তিন চারশ গাড়ির বহর নিয়ে যাচ্ছিল টাঙ্গাইলের ওপর দিয়ে। কাদের সিদ্দিকীরা হামলা করেন বহরের ওপর। বল্লার যুদ্ধের পর কাদের সিদ্দিকীর সুনাম ছড়িয়ে পড়ে দেশের বিভিন্ন স্থানে। আধুনিক অস্ত্রশস্ত্র ছাড়াই পাকিস্তানী সেনাবাহিনীর ওপর ঝাঁপিয়ে পরতেন তারা। ধীরে ধীরে বাঘা কাদের পাকিস্তানীদের কাছে হয়ে পড়ে এক ত্রাসের নাম।

 আগস্টের ২য় সপ্তাহ। পাকিস্তানীদের দুটি বড় জাহাজে আক্রমণ করে দখল করে কাদেরিয়া বাহিনী। জাহাজ দুটিতে অনেক গোলাবারুদ, অস্ত্র ও জ্বালানী ছিল। সিরাজকান্দিতে অস্ত্র নেয়ার পর জাহাজ দুটিতে আগুন দেয় মুক্তিযোদ্ধারা। এই যুদ্ধের কথা অস্থায়ি বাংলাদেশ সরকারের বিশেষ দূত আবু সাঈদ চৌধুরী জাতিসংঘে তুলে ধরেন। এর কয়েকদিন পর ধলাপাড়ার যুদ্ধে কাদের সিদ্দিকী গুলিবিদ্ধ হন। তার অস্ত্রও ঠিকমত কাজ করছিল না। গুলিবিদ্ধ অবস্থায় ছয়দিন ধরে দেড়শ মাইল হেঁটে ভারতে পৌঁছান বাঘা কাদের। চারিদিকে ছড়িয়ে পরে যে কাদের সিদ্দিকী মারা গেছেন। কিন্তু বঙ্গবীর সুস্থ হয়ে আবারও ঝাঁপিয়ে পড়েন যুদ্ধে।

 ১০ ডিসেম্বর, ১৯৭১। দুই হাজার ভারতীয় সৈন্য প্যারাস্যুটে করে টাঙ্গাইলে অবতরণ করেন। তারা কাদেরিয়া বাহিনীর সাথে যোগ দেন। ১৬ই ডিসেম্বর পরাজিত পাকিস্তানী হানাদার প্রধান নিয়াজি কাদের সিদ্দিকীর সাথে হাত মেলাতে চান। কিন্তু হাত মেলাননি বাঘা কাদের। বাংলাদেশের একমাত্র বীর উত্তম বঙ্গবীর কাদের সিদ্দিকী যিনি সেনাবাহিনীর সদস্য নন। বাহাত্তরের ১০ জানুয়ারি বঙ্গবন্ধু ফিরে এসে খুঁজেছিলেন বাঘা কাদেরকে।  

এদিকে বঙ্গবন্ধু ছাড়া আর কারও কাছে অস্ত্র জমা দেবেন না বলে ঘোষণা দেন কাদের সিদ্দিকী। টাঙ্গাইলে বঙ্গবন্ধুর পায়ের কাছে বঙ্গবীর বিছিয়ে দিয়েছিলেন অস্ত্র। ৩১৫ টি ট্রাকে করে সেই অস্ত্র ঢাকায় আনতে হয়েছিল। বঙ্গবন্ধু কোলে তুলে নিয়েছিলেন। বঙ্গমাতাকে বলেন দেখ কে এসেছে? মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাসে হাজার বছর পরও বঙ্গবীর কাদের সিদ্দিকীর নাম লেখা থাকবে স্বর্ণাক্ষরে।

আরও পড়ুন: 


উৎসব উদযাপন ছাড়াই কানাডায় টিকা দেওয়া শুরু

নির্বাচনকে কেন্দ্র করে ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া, ১৪৪ ধারা জারি

ইশরাকের বাসায় হামলা-ভাঙচুর

ব‌রিশালে আ.লীগের দুপক্ষের সংঘর্ষে ফাঁকা গু‌লি, আহত ৫০

একসঙ্গে বিষপান করে স্ত্রীর মৃত্যু, স্বামী হাসপাতালে


news24bd.tv কামরুল